shono
Advertisement
Weather Forecast

'লা নিনা' এবং আবহাওয়া দপ্তরের বেঠিক পূর্বাভাস!

সাধারণত ‘মেঘভাঙা বৃষ্টি’-র ক্ষেত্রে আবহাওয়া দপ্তরের কোনও নির্দিষ্ট পূর্বাভাস থাকে না।
Published By: Kishore GhoshPosted: 12:11 AM Oct 05, 2025Updated: 12:11 AM Oct 05, 2025

‘লা নিনা’ দেখাল, আবহাওয়া দপ্তরের বেঠিক পূর্বাভাস বা পূর্বাভাসহীনতার ত্রুটি। দফতরের খামতি কাটাতে কেন্দ্রের সক্রিয় হওয়া আবশ্যিক।

Advertisement

‘লা নিনা’-র কারণে এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ঘটছে ভারতে। জলবায়ুচক্রে ‘এল নিনো’-র বিপরীত একটি প্রাকৃতিক অবস্থা ‘লা নিনা’। এর জেরে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি কমে যায়। ফলে দক্ষিণ আমেরিকার দিক থেকে এশিয়ার দিকে প্রবল হাওয়া প্রবাহিত হয়। প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের জলবায়ুর এই পরিবর্তন ভারত মহাসাগরের উপর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ভারত মহাসাগরের উপর ঘন-ঘন নিম্নচাপ তৈরি করে। এই অঞ্চলে তৈরি নিম্নচাপই ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত ঘটায়।

‘লা নিনা’-র কারণে এবার বর্ষায় ঘন-ঘন নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্বাভাবিকের থেকে ৮ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবে। মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে উত্তরাখণ্ডেও। বাংলাতেও এবার বর্ষায় ‘লা নিনা’-র জেরে অতিরিক্ত বর্ষণ হচ্ছে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে কলকাতায় প্রায় মেঘভাঙা বৃষ্টির মতো (Cloudburst like) ঘটনা ঘটেছে। এক রাতে এত বৃষ্টিপাত শেষ ৩৯ বছরে হয়নি। পুজোতে বিক্ষিপ্ত হলেও নিয়মিত বৃষ্টি পড়েছে।

সাধারণত ‘মেঘভাঙা বৃষ্টি’-র ক্ষেত্রে আবহাওয়া দপ্তরের কোনও নির্দিষ্ট পূর্বাভাস থাকে না। মেঘভাঙা বৃষ্টি সেই অবস্থা, যখন ছোট একটি এলাকায় অল্প সময়ে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়। পাহাড়ে অল্প সময়ে একটি এলাকায় প্রচুর বৃষ্টি হলে ভূমিধসে ব‌্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়। পুজোর আগে যেদিন রাতে কলকাতায় মেঘভাঙা বৃষ্টির মতো ঘটনা ঘটল, সেদিনও আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষে নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব ছিল না। কারণ ‘ক্লাউড বার্স্ট’ বা মেঘভাঙা বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া ভীষণ কঠিন, অনেকটা ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের মতো।

আবহাওয়া দপ্তর পুজোর দিনগুলিতে বৃষ্টিপাত নিয়ে আগাম সতর্কতা জারি করেছিল। তবে দেখা গেল, দশমীর মধ‌্যরাতে কোনও-কোনও অঞ্চলে টানা বৃষ্টি ছাড়া মোটের উপর পুজোর দিনগুলি নির্বিঘ্নেই কেটেছে। সেপ্টেম্বরের শেষ বা অক্টোবরের গোড়ায় পুজো পড়লে পুজোয় কিছুটা বৃষ্টির সম্মুখীন হতে হয়। এবারও সেটুকুই হয়েছে। কিন্তু অাবহাওয়া দফতরের সঠিক পূর্বাভাস না থাকায় এবার পুজো শুরুর বহু আগে থেকেই রাজ‌্যবাসীর বৃষ্টি নিয়ে অাতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। পুজো মিটতে না মিটতেই ডিভিসি, মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে দেড় লক্ষ কিউসেকের উপর জল ছেড়ে দক্ষিণবঙ্গের একাংশে বন‌্যা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এক্ষেত্রেও কোনও স্তরে কোনও পূর্বাভাস ছিল না।

ক্ষয়ক্ষতি-প্রাণহানি ঠেকাতে আবহাওয়ার সঠিক নির্ণয় ও পূর্বাভাস বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজন উন্নত যন্ত্রপাতি ও দক্ষ কর্মী। তা সুনিশ্চিত করতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারকে এই খাতে প্রয়োজনীয় লগ্নি করতে হবে। ‘লা নিনা’ সমস‌্যা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। কেন্দ্রীয় সরকার এবার এ ব‌্যাপারে নজর দিক। আবহাওয়া কিন্তু রাম-বাম-কংগ্রেস দেখে না!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ‘লা নিনা’-র কারণে এবার বর্ষায় ঘন-ঘন নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে।
  • ক্ষয়ক্ষতি-প্রাণহানি ঠেকাতে আবহাওয়ার সঠিক নির্ণয় ও পূর্বাভাস বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
Advertisement