সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেসি-মারাদোনার দেশে রাজনৈতিক পালাবদল। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হলেন রাজনীতিতে একবারে আনকোরা হাভিয়ের মিলেই। রাজনীতির ময়দানে তিনি চরম দক্ষিণপন্থী হিসেবেই পরিচিত। তিনি এলেন দেশের চরম দুর্দিনে বামপন্থাকে সরিয়ে। প্রেসিডেন্ট হলেও মিলেইকে নিয়ে আর্জেন্টিনায় বিতর্কের অন্ত নেই। সেখান থেকে রাজনীতিতে ইনি এল লোকো বলেই পরিচিত। ‘পাগলাটে’ মিলেই কখনও খরচ কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আবার নারী, শিশু কল্যাণ মন্ত্রক বন্ধ করে দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। যদিও এগুলো নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন মিলেই। তাঁর এহেন সব প্রতিশ্রুতি দেশীয় রাজনীতিতে ঝড় তুলেছিল। সেই মিলেই-ই এবার জনতার ভোটে প্রেসিডেন্টের মসনদে।
দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি আর্জেন্টিনা (Argentina)। স্বাস্থ্য পরিষেবা, প্লাস্টিক সার্জারি ক্ষেত্রেও অনেকটা এগিয়ে নীল-সাদার দেশ। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সে দেশের অর্থনীতি ধুঁকছে। মুদ্রাস্ফীতি ছুঁয়েছে ১৪৩ শতাংশ। দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ চলে গিয়েছে দারিদ্র্যসীমার নিচে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে এক অন্য স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন ‘পাগলাটে’ মিলেই। আর সেই স্বপ্নে বুঁদ হয়েই ট্রাম্প-বলসোনারো ‘বন্ধু’কে ৫৬ শতাংশ ভোট দিয়েছে আর্জেন্টিনাবাসী। আর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থী সের্জিও মাসার ঝুলিতে এসেছে ৪৪ শতাংশ ভোট। জয়ের পরেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। লিখেছেন, ‘আবার আর্জেন্টিনাকে সেরা বানাও।’ ব্রাজিলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইরে বলসোনারোও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, “দক্ষিণ আমেরিকায় আবার আশার আলো জ্বলবে।”
[আরও পড়ুন: Israel Hamas War: পণবন্দিদের টেনেহিঁচড়ে হাসপাতালে আটকে রাখছে হামাস! ভিডিও প্রকাশ ইজরায়েলের]
প্রচারে কার্যত ঝড় তুলেছিলেন মিলেই। প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ক্ষমতা দখল করলে দেশের মুদ্রা পেসো সরিয়ে জাতীয় মুদ্রা করা হবে মার্কিন ডলারকে। ভেঙে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। সরকারি খরচ কমাতে প্রশাসনে কাঁচি চালাবে তাঁর সরকার। সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মহিলা কল্যাণের মতো মন্ত্রক বন্ধ করে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, আগ্নেয়াস্ত্র আইন শিথিল, মানব অঙ্গ কেনাবেচাকে বৈধতা দেওয়া, গর্ভপাতকে বেআইনি ঘোষণারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মিলেই। যা দেখে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা মিলেইকে ‘পাগলা’ বলে কটাক্ষ করে থাকেন। এরকম বিতর্কিত চরিত্রের হাতে মেসির দেশ কতটা নিরাপদ, তার উত্তর সময়ই দেবে।