শুভঙ্কর বসু: রাজ্যে অবাধ এবং হিংসামুক্ত নির্বাচন করানোটা কমিশনের (Election Commission) কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, সাম্প্রতিক অতীতের প্রায় সব নির্বাচনেই এরাজ্যে কমবেশি রক্তপাত হয়েছে। একুশে যাতে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেটা যে কোনও মূল্যে নিশ্চিত করতে চাইছে কমিশন। সেই লক্ষ্যে বাংলার ১০০ শতাংশ বুথকেই স্পর্শকাতর বুথ হিসেবে এগোতে চাইছে তারা।
সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনগুলিকে কমিশনের তরফে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের সব বুথকেই স্পর্শকাতর বুথ হিসেবে ধরে নিয়ে এগোতে হবে। এবং সেই মতো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর অতীত রেকর্ড দেখে শনাক্ত করতে হবে অতি স্পর্শকাতর বা উত্তেজনাপ্রবণ বুথগুলিকে। আগের নির্বাচনগুলিতে যে যে বুথে অশান্তি হয়েছে, বা গত ছ’মাসে যে যে এলাকায় রাজনৈতিক অশান্তি বেশি হয়েছে, সেই সেই এলাকাগুলিকে প্রথমে উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। তারপর সেই উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে কোন কোন বুথ অতি স্পর্শকাতর, সেটাও শনাক্ত করা হবে। সাম্প্রতিক সময়ে মহামারী পরিস্থিতির অভাবনীয় উন্নতি হলেও এখনও পর্যন্ত স্থির রয়েছে কোভিড বিধি মেনেই এবার রাজ্যে ভোট হবে। সেকারণে অন্তত ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ২২ হাজার ৮৮৭টি বুথ বাড়তে চলেছে রাজ্যে। ফলে মোট বুথের সংখ্যা দাঁড়াবে ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৯০টি।
[আরও পড়ুন: ‘অব্যাহতি চাই, দলকে জানিয়েছি’, এবার সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিতের]
ইতিমধ্যেই বাংলা ঘুরে ভোটপ্রস্তুতি খতিয়ে দেখে গিয়েছে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। এই দুই রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক, প্রশাসনিক কর্তা এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকরা। কোভিডের (COVID-19) জন্য নিযুক্ত নোডাল অফিসার অর্থাৎ রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গেও কথা হয়েছে নির্বাচন কমিশনারদের। রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে গিয়ে ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে দিল্লিতে পর্যালোচনা বৈঠকও সেরে ফেলেছে কমিশন। এক কথায়, রাজ্যের নির্বাচনের সমস্ত প্রস্তুতিই মোটামুটি সারা। এখনও পর্যন্ত কমিশন সূত্রে যা জানা গিয়েছে, রাজ্যের নির্বাচন মূলত করানো হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই। রাজ্য পুলিশকে যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করা হবে। গ্রিন পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের কোনও কাজেই ব্যবহার করতে চাইছে না কমিশন।