সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে শুরু হল মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচন। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে সকাল সাতটা থেকে সন্ধে ছটা পর্যন্ত। সকাল সাতটার সময় নির্বাচন শুরু হতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করেন, ‘ ভোট দিয়ে গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করুন। আমি আশাকরি যুবরা প্রচুর পরিমাণে এই ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন।’ একে একে ভোট দিতে দেখা যায় আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ি, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস-সহ বহু বিশিষ্ট মানুষকেও। মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি আসন ও হরিয়ানার ৯০টি আসন। আর অন্য ১৮টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫১টি বিধানসভা এবং দুটি লোকসভা আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। দু’টি লোকসভা আসনের একটি মহারাষ্ট্রের সাতারা লোকসভা কেন্দ্র। আর অন্যটি বিহারের সমস্তিপুর। এর মধ্যে বিহারে আচমকা বৃষ্টির জেরে ভোটগ্রহণের সময় কিছু পরিবর্তিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যে ৫১টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে, উত্তরপ্রদেশের ১১টি আসন, গুজরাতের ছ’টি, কেরল ও বিহারের পাঁচটি করে, পাঞ্জাব ও অসমের চারটি করে, সিকিমের তিনটি, তামিলনাড়ু, রাজস্থান ও হিমাচল প্রদেশের দু’টি করে। আর একটি করে আসন ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মেঘালয়, পুদুচেরি ও অরুণাচলে।
[আরও পড়ুন: ব্যাংক সংযুক্তিকরণের প্রতিবাদে দেশজুড়ে ধর্মঘট, ভোগান্তির আশঙ্কা গ্রাহকদের]
লোকসভায় দুর্দান্ত ফলের পরে এটাই প্রথম। যেখানে প্রমাণ হতে চলেছে, অর্থনীতির ডামাডোলের বাজারে নরেন্দ্র মোদি বা বিজেপির জনপ্রিয়তা কমছে না বে়ড়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দু’টি রাজ্যের এই ভোট যেন মাধ্যমিকে ফার্স্ট হওয়ার পর একাদশের ষান্মাষিক পরীক্ষার মতো। নতুন ক্লাসে ওঠার পর পড়ুয়ার মনযোগ বিপথগামী হয়েছে কি না, সেদিকে কড়া নজর থাকবে সবার। আর সেসব বুঝে-শুনেই হবে ব্যালট বক্সের রায়দানও। বিশেষ করে এই মুহূর্তে দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে দুই রাজ্যে গত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকার যা যা কাজ করছে, সেসব ছাড়াও বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর কাজ করছে এই ভোটে। যেমন, আর্থিক মন্দার মুখোমুখি হওয়া থেকে শুরু করে তা কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রের নানারকম পদক্ষেপ। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার এবং তা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে দু’দেশের বাগযুদ্ধ এমনকী যুদ্ধের হুমকিও। আর দেশে মুসলিম মহিলাদের অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য তিন তালাক বিল পাস-সহ বেশ কিছু বিষয়। এইসব মাথায় রেখেই ভোট দিতে যাবেন দু’রাজ্যের মানুষ। আর তাঁদের ভোট বিজেপিতেই থাকবে না বিরোধী কংগ্রেসের কাছে যাবে তা জানা যাবে ২৪ অক্টোবর। ফল প্রকাশের দিন।
প্রথমে হরিয়ানার কথাই ধরা যাক। লোকসভা ভোটে বিজেপি এখানে ১০টি লোকসভা আসনের সব ক’টিতেই জয়ী হয়েছে। প্রাপ্য ভোটের পরিমাণ ৫৮.২১ শতাংশ। বিধানসভা ভোটে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ছাড়াও রাজ্যে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের জাতীয় লোক দল ও শিরোমণি আকালি দলের জোট। এছাড়া লড়াইয়ে রয়েছে বহুজন সমাজ পার্টি, আম আদমি পার্টি এবং জননায়ক জনতা পার্টি। হরিয়ানার ৯০টি বিধানসভা আসন (যার মধ্যে ১৭টি সংরক্ষিত)-এর জন্য লড়বে এই দলগুলি। ১ কোটি ৮৩ লক্ষ ভোটার। আর প্রার্থী ১১৬৯ জন। ভোটারদের মধ্যে মহিলা ভোটদাতা ৮৫ লক্ষ। আর মহিলা প্রার্থী ১০৪ জন। ১৬ হাজার ৩৫৭টি বুথে ভোট হবে হরিয়ানায়। আর রাজ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় কেন্দ্র হল হিসার। কারণ ওই কেন্দ্রে প্রার্থী সংখ্যা সর্বোচ্চ। রাজনৈতিক দল ও নির্দল প্রার্থী-সহ মোট ২৫ জন প্রার্থীর মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে হিসার বাসিন্দাদের।
[আরও পড়ুন:সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ধাঁচে আর্টিলারি হামলা, পাক সীমান্তে নিকেশ অন্তত ৩০ জঙ্গি!]
আবার মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের (৫৩টি সংরক্ষিত) নির্বাচনে সোমবার ভোট দেবেন আট কোটি ৯০ লক্ষ ভোটার। এর মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৪ কোটি। আর মোট ৩২৫৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৩৫জন প্রার্থী মহিলা। মহারাষ্ট্রে আবার ভোটপ্রার্থীদের প্রিয় কেন্দ্র মারাঠাওয়াড়ার দক্ষিণ নান্দেদ বিধানসভা আসনটি। মোট ৩৮ জন প্রার্থীর মধ্যে বিধানসভা আসন পাওয়ার লড়াই হবে এই কেন্দ্রে। আর ভোট হবে মোট ৯৬,৬৬১টি বুথে। মহারাষ্ট্রে অবশ্য লড়াইটা মূলত মহাজুটি আর মহা আঘাড়ির মধ্যে। মহাজুটির দুই মূল রাজনৈতিক দল হল শিবসেনা আর বিজেপি। আর মহা আঘাড়ি কংগ্রেস আর এনসিপির জোট। তবে দুই জোটেই মূল রাজনৈতিক দল ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দল আছে। উল্লেখ্য, লোকসভায় মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের মধ্যে ৪১টি আসনে জিতেছিল বিজেপি-শিবসেনা জোট। রাজ্যে ৫১.৩ শতাংশ ভোট মিলিতভাবে পেয়েছিল এই দুই দল।
The post শুরু মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার ভোট, আসন বাড়ানোই লক্ষ্য টিম মোদির appeared first on Sangbad Pratidin.