সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরিমণির (Parimoni) আটক হওয়ার পরই মাদককাণ্ডে গ্রেপ্তার হলেন বাংলাদেশি মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ (Mariyam Akhtar Mou)ও ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা । তবে এই মুহূর্তে নতুন করে বিতর্ক উঠেছে মডেল মৌকে নিয়ে। মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের পর মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ-এর সঙ্গে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের যোগাযোগ খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই সঙ্গে তাঁর অঢেল সম্পত্তির উৎস খুঁজে দেখছেন গোয়েন্দারা। এরই মধ্যে তার বাড়ি থেকে জব্দ করা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ। মৌ ১১টি বিয়ে করেছেন! তার সর্বশেষ স্বামী একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।
ধনীদের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করাই ছিল মৌ-এর পেশা। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার পর আরেকজনের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসতেন। প্রাক্তন স্বামীরা মৌ-এর অপকর্ম সম্পর্কে সবই জানতেন। তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে অনেক সময় নিজেরাই তাকে তালাক দিতেন। গত রবিবার রাতে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আরেক মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মৌ-কে গ্রেপ্তার করা হয়। মহম্মদপুরে পাঁচতলা আলিশান বাড়ি রয়েছে তাঁর। নেক্সাস, পাজেরো ও টয়োটা ব্র্যান্ডের তিনটি দামি গাড়ি চালাতেন মৌ। অথচ দৃশ্যমান কোনও আয়ের উৎস নেই। মৌ মডেলিং পেশার আড়ালে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের ব্ল্যাকমেল করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। ডিবি পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মৌ একাজ একা করতেন না। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরও কয়েকজন তরুণীও। এদের দিয়ে তিনি বিত্তশালীদের ফাঁদে ফেলতেন। কৌশলে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসতেন। মদ খাইয়ে অচেতন করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি কিংবা ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করতেন। পরে ওই ব্যক্তি যদি কথামতো কাজ না করতেন, তাহলে ভয় দেখানোর পাশাপাশি ছবি বা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিতেন।
[আরও পড়ুন: মাদক কারবারে ‘যোগ’, আটক জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণি, তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া]
এভাবে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। দরিদ্র পরিবারের সুন্দরী তরুণী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রীরা মৌ-এর প্রতারণা চক্রের সদস্য। তারা দিনের বেলা লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে রাতে সক্রিয় হতেন। তাঁর বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবনের পাশাপাশি চলত মধুচক্র।
মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌকে গ্রেপ্তারের পর প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করা আরও ১০-১২ জন মডেলের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলেও তাদের কড়া নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ।