শম্পালী মৌলিক: পরিচালক অনুরাগ কশ্যপের (Anurag Kashyap) বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করেছেন পায়েল ঘোষ (Payal Ghosh)। পাশে পেয়েছেন কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut), রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে (Roopa Ganguly)। পায়েলের হাত ধরেই ফের বলিউডে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ‘মি টু’ (#MeToo) আন্দোলন। কাঠগড়ায় অনুরাগ। টলিউডের এমন তিনজন অভিনেত্রী রয়েছেন, যাঁরা পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, ঋতাভরী চক্রবর্তী এবং ঈশিকা দে। এই প্রসঙ্গে কী মত টলিউডের তিন নারীর।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta)
‘বাঁশুরি’ (Bansuri: The Flute) করার আগেও অনুরাগের সঙ্গে মুম্বইয়ে দেখা হয়েছে কয়েকবার। একবার কান (Cannes) ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ওর ছবি গিয়েছিল, আমার ছবিও ছিল। ‘বাঁশুরি’-তে অনুরাগ আমার স্বামীর চরিত্রে। যতোবার ওর সঙ্গে কথা বলেছি, মনে হয়েছে খুব সিরিয়াস ফিল্ম মেকারের সঙ্গে ইন্টার্যাক্ট করছি। ওর সেন্স অফ হিউমার দুর্দান্ত। ওর মেয়ের গল্প করেছিল অনেক। খেতে ভালবাসে। অনুরাগকে অল্পই দেখেছি তবে কাজের বিষয়ে সিরিয়াস মনে হয়েছে। আমার কাছে বিষয়টা দুঃখের যে, এমন অভিযোগ করা হয়েছে ওর বিরুদ্ধে। তবে আমি এমন কিছু দেখিনি কখনও, ওকে ফিল্মের প্রতি নিবেদিত কর্মীই মনে হয়েছে সবসময়। এটাই বলব, আমার অনুরাগের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ‘ডিসকমফোর্ট’-এর ফিলিং হয়নি। আমার কাছে অনুরাগ খুব বড় পরিচালক।
[আরও পড়ুন: করোনামুক্ত হয়েও কাটছে না উদ্বেগ, শারীরিক অবস্থার ক্রমশই অবনতি সংগীতশিল্পী SP বালাসুব্রহ্মণ্যমের]
ঋতাভরী চক্রবর্তী (Ritabhari Chakraborty)
আমার ধারণা সমস্ত অভিযোগ নেহাতই বাজে কথা। শুধু অনুরাগের সঙ্গে কাজ করেছি বলে বলছি না, চার বছর মুম্বইয়ে অনুরাগ আমার প্রতিবেশী ছিল। মায়ের সঙ্গেও কাজ করেছে। আমাদের পুরো পরিবারের খুব ঘনিষ্ঠ এ.কে. (অনুরাগ)। ওর মতো মানুষ হয় না। আমার যখনই মুম্বইয়ে কোনও সমস্যা হয়েছে, ‘এ.কে. ইজ দ্য গো টু পার্সন’, যাকে ফোন করে বলেছি। এ.কে. নিজে আমাকে অনেক সময় সাবধান করে দিয়েছে। যে অ্যালিগেশন আসছে, এ.কে. ঠিক তার উলটো ধরনের মানুষ। শুধু আমি কেন, অজস্র অভিনেত্রী বলবে যে, আনকমফর্টেবল ফিল করলে অনুরাগকে জানিয়েছে। আমি তো পুরো মহিলা বাহিনী নিয়ে ওর সঙ্গে কাজ করেছিলাম, সবাই ফিরে এসে ওর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আর এ কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে, একসময় অনুরাগের কোম্পানিই ভেঙে গেল ‘মি টু’ কেসে একজন অখ্যাত মেয়ের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে। তখন এই মহিলা কোথায় ছিলেন?
ঈশিকা দে (Eshika Dey)
‘সেক্রেড গেমস’-এ (Sacred Games) আমি কাজ করেছিলাম অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে। প্রথমেই বলব, আমি জানি না পায়েল ঘোষের সঙ্গে সত্যি কী হয়েছে। আমার শুটিংয়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আজ পর্যন্ত যে যে পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি, অনুরাগ স্যার ওয়াজ দ্য বেস্ট পার্সন আই হ্যাভ এভার এনকাউন্টারড। তার ওপর আমি ওঁর সামনে অর্ধনগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করেছি। ওঁকে আমার সাংঘাতিক মার্জিত আর ভদ্র মনে হয়েছে, যার দৃষ্টি কখনও আমার মুখ ছাড়িয়ে নিচের দিকে নামেনি। এমন পরিবেশ তৈরি করেছিলেন, যেন মনে হচ্ছিল সেটে আমি ওঁর বাচ্চা। স্যার অত্যন্ত সংবেদনশীল তাঁর অভিনেতাদের নিয়ে এবং নারীর মূল্যবোধ নিয়ে। আরেকটা ঘটনা বলি, কলকাতার একজন অভিনেত্রী ২০১৯-এ আমাকে বলেছিল যে, অনুরাগ কাশ্যপের প্রোফাইল থেকে তাকে অশালীন ইঙ্গিত করে মেসেজ করা হচ্ছে। ওই প্রোফাইল থেকে মেয়েটিকে ফোন নম্বরও দেওয়া হয়। মেয়েটি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেই বলি, এটা অনুরাগ কাশ্যপের নম্বর নয়। নিশ্চয়ই ওটা ফেক প্রোফাইল। মেয়েটিকে আর কিছু বলিনি। অনুরাগ স্যারকে জানিয়েছিলাম ঘটনাটা। স্যার পুরোটা জানতে চান এবং ওই ফেক প্রোফাইলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার কথা বলেন। শুধু তাই নয়, ওই অভিনেত্রীর জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন যে, তাঁর নাম ব্যবহার করে ওই অভিনেত্রীকে অপ্রীতিকর কথা বলা হয়েছে। অথচ ঘটনাটার সঙ্গে অনুরাগ স্যরের কোনও যোগ ছিল না। উনি এতটাই সংবেদনশীল আর সৎ মানুষ।
[আরও পড়ুন: NCB’র প্রশ্নবাণে বিদ্ধ রকুলপ্রীত, প্যানিক অ্যাটাকে বিধ্বস্ত দীপিকার পাশে থাকতে চান রণবীর]
The post #MeToo অভিযোগে কাঠগড়ায় অনুরাগ, পরিচালকের সঙ্গে কেমন ছিল ঋতুপর্ণা-ঋতাভরীদের অভিজ্ঞতা? appeared first on Sangbad Pratidin.