সুপর্ণা মজুমদার: এক যে ছিল ‘বাস্কার’ (স্ট্রিট মিউজিশিয়ান)। কী কাজ তাঁর? ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভায়োলিন কাঁধে তুলে নেওয়া। তাতে এমন সুর সাজানো যা মন ছুঁয়ে যায়। ব্যস্ত সময়েও খানিক দাঁড়িয়ে যেতে ইচ্ছে করে। এভাবেই দুটি মানুষ থমকে গিয়েছিলেন। রাজদীপ পাল এবং শর্মিষ্ঠা মাইতি। হ্যাঁ, জাতীয় পুরস্কারজয়ী ছবি ‘কালকক্ষ’র পরিচালক জুটি। আর তাঁদের ছবির সৌজন্যেই ফুটপাত থেকে সোজা কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (KIFF 2023) পৌঁছে গিয়েছেন সৌরজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়।
কসবার ছেলে সৌরজ্যোতি (Sourojyoti Chatterjee)। বাবা-মা, জেঠু-জেঠিমার সঙ্গে বাস। পাঁচ বছর বয়স থেকে সঙ্গীতের সঙ্গে প্রেম সৌরজ্যোতির। হাতে তুলে নিয়েছিলেন পছন্দের ভায়োলিন। সেই থেকেই চলছে তাঁর সুরেলা সফর। শিল্পী হিসেবে সরাসরি শ্রোতার কাছে পৌঁছতে চেয়েছিলেন সৌরজ্যোতি। তাই ভায়োলিন নিয়েই নেমে পড়েন রাস্তায়। শুরু করেন বাস্কিং। ২০১৮ সাল থেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ভায়োলিন বাজান সৌরজ্যোতি। বাস্কিংয়ের পাশাপাশি যেটুকু সময় পান, ছোটদের শেখান।
[আরও পড়ুন: ‘পাঠান’, ‘জওয়ান’-এর সাফল্যে ‘দেবীর হাত’! এবার ‘ডাঙ্কি’র জন্য বৈষ্ণদেবীতে শাহরুখ]
কিন্তু সিনেমায় কীভাবে? সৌরজ্যোতি জানান, একদিন রবীন্দ্র সরোবরে তিনি ভায়োলিন বাজাচ্ছিলেন। ঘটনাচক্রে সেই রাস্তা দিয়ে রাজদীপ ও শর্মিষ্ঠা যাচ্ছিলেন। সৌরজ্যোতির ভায়োলিন অনেকক্ষণ ধরে তাঁরা শোনেন। এর কিছু সময়ই পরই পরিচালক জুটি নিজেদের নতুন ছবি ‘মনপতঙ্গ’-এ সৌরজ্যোতিকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বেঙ্গলি প্যানোরমায় দেখানো হয়েছে ছবিটি।
বাস্তবের মতো সিনেমাতেও ভায়োলিন বাজিয়েছেন সৌরজ্যোতি। তবে এ অভিজ্ঞতা একদমই আলাদা। সেটের প্রত্যেকেই খুব ভালো। ফলে কাজটা করতে কোনও অসুবিধাই হয়নি শিল্পীর। আর নিজেকে বড়পর্দায় দেখার অনুভূতিও যে আলাদা। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সৌরজ্যোতির কয়েকজন বন্ধু ‘মনপতঙ্গ’ দেখেছেন। প্রেম, বিপ্লব ও আপোষহীন আকাঙ্ক্ষার এই গল্পের প্রশংসাও করেছেন। এবার ছবিটি সিনেমা হলে মুক্তি পেলে বাকিরাও দেখতে পাবেন। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে আবারও সিনেমায় কাজ করবেন সৌরজ্যোতি। তবে সুরের সঙ্গ ছাড়বেন না। বাস্কিংয়ের পাশাপাশি সিঙ্গলও তৈরির ইচ্ছে রয়েছে সৌরজ্যোতির। সুরের আকাশেই নিজের ‘মনপতঙ্গ’কে উড়িয়ে দিতে চান শিল্পী।