বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: বেঁচে থাকতে প্রাপ্য সম্মান পাননি। মরদেহ নিয়ে রাজনীতি হল। প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের (Soumitra Chatterjee) বাড়িতে গিয়ে বুধবার এমনই মন্তব্য করলেন কংগ্রেস নেতা (Adhir Ranjan Chowdhury) অধীর চৌধুরী। বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারকে।
এদিন প্রবাদপ্রতীম শিল্পীর গল্ফগ্রিনের বাড়িতে যান কংগ্রেস নেতা। দেখা করেন সৌমিত্রকন্যা পৌলমী বসুর (Poulami Basu) সঙ্গে। সেখান থেকে বেরিয়ে এসেই সাংবাদিকদের অধীর চৌধুরী বলেন, “সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যে কত সাধারণ জীবনযাপন করতেন তাঁর ঘরে ঢুকলেই বোঝা যায়। মনে হল যেন তীর্থ দর্শন করলাম। এরকম একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি বাংলার প্রতীক। শুধু ভারতবর্ষের শিল্প জগৎ নয়, সারা বিশ্বের শিল্প জগতে যাঁর পরিচিতি। সেইরকম একজন মানুষ যে এত সাধারণ জীবন যাপন করতে পারেন সেটা এখানে না আসলে, না দেখলে বোঝা যেত না। আজও টেবিলের উপরে তাঁর আঁকা ছবি রয়েছে। সব দেখে আমার অনুভূতি হল, যেন একটা তীর্থ দর্শন করে গেলাম।”
[আরও পড়ুন: সব্যসাচীর নামে ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে অশ্লীল ছবি পোস্ট, পুলিশের দ্বারস্থ অভিনেতা]
এরপরই অধীর এই অবসরে আরও কিছু বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। রাজ্য সরকারকে বিঁধে বলেন, “সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ নিয়ে এই বাংলায় অনেক নাটক হয়ে গেল। রাজনীতিও হয়ে গেল। অথচ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে যে যে অধিকার দেওয়া হয়, যে সব পদে বসানো হয়, ২০১১ সালের পর সমস্ত কিছু এক এক করে কেড়ে নেওয়া হয়। ২০২০ সাল পর্যন্ত অনেক ছোটখাটো, মাঝারি, এপাড়ার-সেপাড়ার শিল্পীদের সম্মান দেওয়া হয়েছে। সৌমিত্রর মত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মানুষকে সম্মান দেওয়ার কথা এই সরকার ভাবেনি। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর যে সমস্ত জায়গায় তাঁকে সম্মানিত করার সুযোগ ছিল, তা থেকে শিল্পীকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমি নিজে ভারত সরকারের কাছে দাবি করতে চলেছি, SRFTI-এ যেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি চেয়ার উৎসর্গ করা হয়। সত্যজিৎ রায়ের অতি প্রিয় অভিনেতার নাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাই একটি চেয়ার প্রদান করার আবেদন জানাব।”
কিংবদন্তি শিল্পীর স্মৃতিতে রাজ্য সরকারের একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন অধীর চৌধুরী। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন সৌম্য আইচ রায়, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রদীপ প্রসাদ।