শুধুই খুনের রহস্য, আর কিছু নেই! ভাল অভিনয়েও মন ভরাতে ব্যর্থ ‘রহস্যময়’

06:34 PM Jan 08, 2023 |
Advertisement

চারুবাক: টলিপাড়ার অনেকেই বলেন বাংলা সিনেমার হারানো স্বর্ণযুগ নাকি ফিরে এসেছে! তাঁরা কেন বা কী দেখে বলেন জানি না। নতুন বছরের প্রথম দু’টি ছবি দেখে তো তেমন পুলকিত হওয়ার কোনও কারণ দেখছি না! বিশেষ করে জনৈক (নাকি,জনদ্বিত?) সৌম্য-সুপ্রিয়র নতুন ছবি “রহস্যময়” দেখে উপলব্ধি হল, খুনির খোঁজে চিত্রনাট্য লেখায় কম্পিউটারের চাবি না টিপে বরং বাংলা সিনেমার দুর্দশার কারণ খুঁজতে লালবাজারের একজন দুঁদে গোয়েন্দা লাগানো বেশি জরুরি।

Advertisement

একের পর এক গোয়েন্দায় ভরে যাচ্ছে বাংলা ছবি। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন পদ্মনাভ দাশগুপ্তর অনীশ রায় (শাশ্বত)! তিনি একা নন, অজিত বা তোপসের মতো শাশ্বতর সহযোগী হয়েছেন দেবরাজ! এই দু’জনের কর্মকাণ্ড বেশ কষিয়েই রেঁধেছেন চিত্রনাট্যকার। ছবির শুরুতেই ধোঁয়া ভরতি এক বারে ব়্যাপ স্টাইলের একটি গান এবং হুরুম দুরুম অ্যাকশন নায়ক অভিমন্যুর (অনিন্দ্য) সঙ্গে এক উটকো ছেলের! অন্য তিন বন্ধু ইশা (অমৃতা), তিথি (সায়নী) আর আদিত্য মিলে ঝগড়া থামিয়ে চলে আসে নিজেদের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে। জানা গেল, সেখানে অভিমন্যু-তিথি ও আদিত্য-ইশা পার্টনার। লিভ টুগেদার করে! কিঞ্চিৎ পারস্পরিক দোষারোপের পর যে যার ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ে। আর সক্কালবেলা জানা যায়, অভিমন্যু খুন হয়েছে, তিথি আহত। অথচ তাদের ঘর ভিতর থেকেই বন্ধ ছিল। সুতরাং কে, কীভাবে খুন করল অভিকে, সেটা খুঁজে বার করতেই গোয়েন্দা অনিশ আর তাঁর শাগরেদের গলদঘর্ম হয়ে প্রায় এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিট কেটে গেল! দর্শকও প্যাঁচের পর প্যাঁচ দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে হাঁফ ছেড়ে যেন বাঁচলেন একশো দশ মিনিট পর!

Advertising
Advertising

[আরও পড়ুন: ‘মহিলারা অশিক্ষিত, পুরুষদেরও হুঁশ নেই’ জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে নীতীশের মন্তব্যে বিতর্ক]

এই ছবিতে অনীশ গোয়েন্দা দিন রাত, এমনকী মাঝরাতেও শার্ট প্যান্ট ও কেশবিন্যাসে নিপাট। এতটুকুও ঘরোয়া নন। একা থাকা বাবার কাছেও জন্মদিনে উইশ করতে গিয়ে কী নিদারুণ ফর্মাল! যাই হোক, রহস্যের সমাধানে শেষপর্যন্ত ভয়েস ওভারের সাহায্য নিতে হল চিত্রনাট্যকারকে, ভিজুয়্যালে কুলোলো না! এটা পদ্মনাভর কাছে আশা করিনি!

তারওপর আবার মানুষের চারিত্রিক বিশ্লেষণ নিয়ে দীর্ঘ মাস্টারিপনা সত্যিই অসহ্য! তবে হ্যাঁ, ছবিটা দর্শকের কাছে আগ্রহ ও ঔৎসুক্য তৈরি করে শুধু দ্রুতগতির সম্পাদনা (সুজয় দত্ত রায়) ও সিনেমাটোগ্রাফার শুভদীপ নস্করের জন্য। শিল্পীদের সপ্রতিভ ও সম্মিলিত অভিনয়ও দর্শককে বসিয়ে রাখে! অভিনয়ে শাশ্বত তো প্রথম নাম। অমৃতা, সায়নী, আদিত্যর চরিত্রের অভিনেতারাও বেশ সাবলীল ও প্রয়োজনে গল্পের সাসপেন্স ধরে রাখতেও সহায়ক! তবুও সবশেষে একটাই কথা- এইসব হুডানিট ঘরানার ছবি বানিয়ে বাংলা সিনেমার ঐতিহ্যের বারোটা তো বেজেই চলেছে, ধ্বংস ঠেকানো যাবে কি?

[আরও পড়ুন: কবিতার মতো ছবি শ্রীজাতর ‘মানবজমিন’, দারুণ অভিনয়ে মন জয় পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের]

Advertisement
Next