অভিষেক চৌধুরী, কালনা: মন্ত্রী নাকি দক্ষ যাত্রাশিল্পী? পরনে বাঘছাল, গলায় সাপ, একহাতে ত্রিশূল, অন্যহাতে ডমরু। রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে দেখলে এই প্রশ্ন মাথায় আসতেই পারে। কালীপুজোয় পূর্বস্থলী দক্ষিণে বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ অভিনয়ের রঙ্গমঞ্চ একেবারে মাতিয়ে দিলেন! নিজের উদ্যোগে হওয়া পূর্বস্থলী ১ ব্লকে ‘চুনো-বিলে’ কালীপুজোয় বৃহস্পতিবার রাতে ‘গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম’ যাত্রাপালায় তিনি ছিলেন শিবের চরিত্রে। আর নিখুঁত অভিনয় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মুগ্ধ করা অভিনয়ে দর্শকদের মুহুর্মুহু হাততালিও কুড়োলেন মন্ত্রী।
এই প্রথম নয়। অভিনয়ের প্রতি স্বপন দেবনাথের প্যাশনের কথা আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। অভিনয় যেন তাঁর রক্তে মিশে আছে। কখনও ভগবান নারায়ণ, কখনও আবার গোড়াচাঁদের মতো রকমারি চরিত্রে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মঞ্চাভিনয় করেছেন তিনি। যাত্রামঞ্চেও তুলনাহীন মন্ত্রী। চরম ব্যস্ততার মাঝেও তাই সুযোগ পেলেই যাত্রামঞ্চে নেমে পড়েন ৭৪ বছরের অভিনেতা। বৃহস্পতিবার, কালীপুজো উপলক্ষে তাঁর মঞ্চে অবতীর্ণ হওয়ারও ব্যতিক্রম ঘটল না। শিবের রূপ ধরে যাত্রা করতে নেমে আরও একবার নিজের অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ দিলেন।
‘গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম’ যাত্রাপালায় শিবের চরিত্রে স্বপন দেবনাথ। নিজস্ব ছবি।
যদিও নিজের অভিনয় নিয়ে মন্ত্রীমশাইয়ের তেমন হেলদোল নেই। তিনি বললেন, “যাত্রা লোকশিক্ষা দেয়। বিনোদনের পাশাপাশি যাত্রা মাধ্যমটি সমাজের দর্পণ। একসময় দুর্গাপুজো, কালীপুজোর অন্যতম আকর্ষণ ছিল এই যাত্রা। পাড়ায়-পাড়ায় তা হত। বর্তমানে তা যেন অনেকটাই কম। যাত্রাশিল্পে উৎসাহ দিতে তাই সুযোগ পেলেই মঞ্চে নেমে পড়ি।” এদিন মন্ত্রীর অভিনয় দেখতে এলাকার মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক জানান, “যাত্রাশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে মন্ত্রী নিজে ‘শ্রী চৈতন্য অপেরা’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে তিনি যাত্রাশিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেন। এছাড়াও মন্ত্রী অভিনয় দক্ষতা আজও সকলকে মুগ্ধ করে।”