সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাহিত্য অ্যাকাডেমির (Sahitya Academy) ‘ফেলো’ নির্বাচিত হলেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (Shirshendu Mukhopadhyay)। এটিই সাহিত্য অ্যাকাডেমির সর্বোচ্চ সম্মান। সাহিত্যের ‘অমর’ স্রষ্টাদেরই একমাত্র এই সম্মান দেওয়া হয়। তবে তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে আরও ৭ জন ভারতীয় লেখককেই সম্মানে ভূষিত করল সাহিত্য অ্যাকাডেমি।
সাহিত্য অ্যাকাডেমির বাংলা উপদেষ্টা পর্ষদের অন্যতম সদস্য ও বিশিষ্ট কবি সুবোধ সরকার ফেসবুকে একটি পোস্টে অভিনন্দন জানিয়েছেন অশীতিপর সাহিত্যিককে। তিনি লেখেন, ”শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় সাহিত্য অকাদেমির সবচেয়ে বড় সম্মানে ভূষিত হলেন আজ। তিনি অকাদেমির ‘ফেলো’ নির্বাচিত হয়েছেন। সঙ্গে আরও সাতটি ভাষা থেকে আরও সাতজন ভারত বিখ্যাত লেখককে সম্মান জানাল সাহিত্য অকাদেমি। যেমন রাসকিন বন্ড আছেন, তেমনি আছেন বালচন্দ্রন নেমাড়ে। একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে শীর্ষেন্দুদার হাতে অকাদেমি এই সম্মান তুলে দেবে। বাংলায় সুভাষ মুখোপাধ্যায় নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী শঙ্খ ঘোষ-এর পর অনেকদিন বাদে আবার একজন কথাসাহিত্যিক ফেলো নির্বাচিত হলেন। শীর্ষেন্দুদা, আপনার সম্মানে আমরা আজ সম্মানিত।”
[আরও পড়ুন: সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পাচ্ছেন বর্ষীয়ান সাহিত্যিক পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়]
প্রসঙ্গত, বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ১৯৮৯ সালে তাঁর ‘মানবজমিন’ উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। এছাড়াও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যাসাগর পুরস্কার (১৯৮৫), আনন্দ পুরস্কার (১৯৭৩ ও ১৯৯০)। ২০১২ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার পান।
১৯৩৫ সালে পূর্ববঙ্গের ময়মনসিংহ (বর্তমানে বাংলাদেশ) জন্মগ্রহণ করেছিলেন শীর্ষেন্দু। ছয়ের দশক থেকেই তরুণ সাহিত্য়িক শীর্ষেন্দু তাঁর ছোটগল্পের মাধ্যমে বাঙালি পাঠকের মন জয় করা শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে লেখা ‘ঘূণপোকা’ উপন্যাসের মধ্যে দিয়ে তিনি বৃহৎ আখ্যান লেখাও শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে পারাপার ‘যাও পাখি’, ‘মানবজমিন’, ‘পার্থিব’, ‘ফজল আলি আসছে’র মতো উপন্যাস ও অসংখ্য ছোটগল্পে তিনি বাংলা সাহিত্যে পাকা আসন লাভ করেন। তবে বড়দের সাহিত্যের পাশাপাশি ছোটদের সাহিত্যেও তুমুল জনপ্রিয় শীর্ষেন্দু। ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ থেকে শুরু করে ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’, ‘পাগলা সাহেবের কবর’, ‘পটাশগড়ের জঙ্গলে’, ‘পাতালঘর’-এর মতো উপন্যাসও বাঙালি পাঠকের চিরকালীন সঙ্গী হয়ে থাকবে।