সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত কিংবদন্তি সন্তুরবাদক পণ্ডিত শিব কুমার শর্মা (Shivkumar Sharma)। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন শিল্পী। গত ৬ মাস ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন শিবকুমার শর্মা। নিয়মিত ডায়ালিসিস চলত তাঁর। শিল্পীর বয়স হয়েছিল ৮৪।
১৯৩৮ সালে ১৩ জানুয়ারি জম্মুতে জন্ম হয় শিবকুমার শর্মার। তাঁর বাবা উমা দত্ত শর্মা ছিলেন প্রথিতযশা সংগীত শিল্পী। বাবার ইচ্ছেতেই মাত্র ৫ বছর বয়সেই সংগীত ও তবলার প্রশিক্ষণ শুরু হয় তাঁর। তবে শিবকুমারের বাবা চেয়েছিলেন সন্তুরবাদক হিসেবেই ভবিষ্যৎ তৈরি হোক তাঁর। ১৩ বছর বয়স থেকেই তাই সন্তুরের অনুরাগী হয়ে ওঠেন শিব। ১৯৫৫ সালে মুম্বইয়ে প্রথমবার জনসমক্ষে নিজের প্রতিভা প্রর্দশন করে নজর কেড়ে নেন শিল্পী।
শিবকুমার শর্মার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে তিনি লিখলেন, ‘কিংবদন্তি সন্তুরবাদক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার প্রয়াণে শোকাহত। শিল্পীর প্রয়াণ সাংস্কৃতিক জগতের খুব বড় ক্ষতি।’
[আরও পড়ুন: নতুন কোন সমস্যার মুখে সেক্রেটারি অভিষেক? দেখুন ‘পঞ্চায়েত টু’ ট্রেলার ]
তবে শুধুই শাস্ত্রীয় সংগীত নয়। বলিউড ছবিতেও পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার বাঁশির সঙ্গে মিশে যায় শিবকুমারের সন্তুরের ছন্দ। ‘সিলসিলা’, ‘ডর’, ‘চাঁদনি’, ‘লমহে’র মতো জনপ্রিয় ছবিতে শিব-হরি জুটির সুর আজও জনপ্রিয় সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে। ২০০১ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হন। এছাড়াও পেয়েছেন সংগীত নাট্য অ্যাকাডেমি-সহ নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার।
শিবকুমার শর্মার পথ অনুসরণ করেছেন তাঁর পুত্র রাহুল শর্মাও। সন্তুরবাদক হিসেবে সংগীত জগতে ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন রাহুল। শিবকুমারের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সংগীতমহল।
শিবকুমার শর্মার (Shivkumar Sharma) প্রয়াণের খবর পেয়ে শোকাহত পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘ভারতীয় সংগীতজগতের খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল। শিবকুমার শর্মা সারা বিশ্বকে একটি নতুন যন্ত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন। শাস্ত্রীয় সংগীতের জগতে তাঁর অবদান ভোলার নয়। এত বড়মাপের শিল্পী হয়েও তিনি ছিলেন মাটির মানুষ। আমাকে অজয়বাবু বলেই ডাকতেন। এসব কথাই বার বার মনে পড়ছে।” রশিদ খানের কথায়, ‘খুব বড় ক্ষতি সংগীত জগতের। মাথার থেকে যেন ছাদ চলে গেল। ভাল শিল্পীর সঙ্গে সঙ্গে খুব ভাল মানুষকেও হারালাম।’
পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন সারেগামা চেয়ারম্যান ডক্টর সঞ্জীব গোয়েঙ্কাও। তাঁর কথায়, ‘সারেগামা পরিবারের একজন উজ্জ্বল তারকা ছিলেন তিনি। পণ্ডিতজির প্রচুর অ্যালবাম রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। আমাদের পরিবারের অংশ ছিলেন তিনি। তাঁর শূন্যস্থান কখনও পূরণ হবে না।’
শিবকুমার আর হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার যুগলবন্দি কিংবদন্তির পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। এদিন শিবকুমারের প্রয়াণের সঙ্গে সঙ্গে থেমে গেল সেই জুটির ম্যাজিক। সঙ্গী হারালেন হরিপ্রসাদ।
[আরও পড়ুন: পাশে মা-বাবা, বিকিনি পরে জন্মদিনের কেক কাটলেন আমিরকন্যা, ‘নির্লজ্জ’, কটাক্ষ নেটিজেনদের ]