shono
Advertisement

'বাবার দেওয়া সোনার গয়না আর দিদার শখপূরণ করতে কৃষভি সেজেছে ধুতি-পাঞ্জাবিতে'

নববর্ষ যাপন নিয়ে 'সংবাদ প্রতিদিন' ডিজিটালের জন্য কলম ধরলেন শ্রীময়ী চট্টরাজ।
Published By: Sandipta BhanjaPosted: 04:59 PM Apr 15, 2025Updated: 04:59 PM Apr 15, 2025

বাঙালির পয়লা বৈশাখ মানেই নস্ট্যালজিয়া। পোশাক থেকে খাবার, আড্ডা থেকে হালখাতা, সবেতেই থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ। অতীত স্মৃতিচারণা এবং এবারের নববর্ষ যাপন নিয়ে 'সংবাদ প্রতিদিন' ডিজিটালে লিখলেন শ্রীময়ী চট্টরাজ

Advertisement

পয়লা বৈশাখের স্মৃতি বললেই মনে পড়ে, একেবারে ছোটবেলার কথা। বউবাজারে বাবার সঙ্গে হালখাতা করতে যাওয়ার কথা। বাবার ক'জন পরিচিতদের দোকান ছিল সেই চত্বরে। সেখানে যাওয়া মানেই লাড্ডুর প্যাকেট প্রাপ্তি। আর ক্যালেন্ডার হাতে বাড়ি ফেরা। তবে এই দিনটিতে আমাদের বাড়িতে একটি বিশেষ রীতি ছিল। প্রতিবার দেখতাম, মাকে সোনার দোকানে নিয়ে গিয়ে গয়না গড়িয়ে দিতেন বাবা। বলা হত, এই দিনটিতে সোনা কেনা শুভ। তবে কাঞ্চন অবশ্য আমার জন্য সোনার গয়না না কিনলেও মেয়ের জন্য ঠিক অর্ডার দিয়ে এসেছিল। নববর্ষ উপলক্ষে বাবার দেওয়া গয়নায় সেজেছে মেয়ে।

গত নববর্ষে কৃষভি আমার গর্ভে ছিল। আর এবার আমার কোলে। তাই এবারের পয়লা বৈশাখ নিঃসন্দেহে আমাদের মল্লিক পরিবারের জন্য স্পেশাল। মায়ের ইচ্ছে নাতনিকে ধুতি-পাঞ্জাবিতে দেখবেন। তাই সেটাই কেনা হয়েছে। এরকম ঘটনা অবশ্য আমার সঙ্গেও ঘটেছে। একটা বয়স পর্যন্ত মা আমাকে 'বয়' লুকে সাজাতেন। তাই দিদার শখপূরণ করতে এবার কৃষভি ধুতি পরেছে।
নববর্ষে আমার বাড়ির ঠাকুররাও সব নতুন পোশাকে সেজেছেন। আর এমন খুশির দিনে আমার সকলের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে ভালো লাগে। তাই মা-বাবা তো বটেই, কৃষভির দুই সর্বক্ষণের রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গী, রান্নার দিদি, আমাদের বাড়ির ড্রাইভার ভাই, সকলকেই নতুন পোশাক উপহার দিয়েছি। ওঁদের মুখের হাসিটাই আমার কাছে পরমপ্রাপ্তি। আর কাঞ্চনের কাছ থেকে আমি একটা শাড়ি পেয়েছি। কালীঘাটে পুজো দিয়ে দু'জনে ১৪৩২ সন শুরু করলাম। আগে দক্ষিণেশ্বরে যেতাম মাকে নিয়ে। আর বাড়িতে যেমন পুরোহিত নিত্যপুজো করেন। বছরের পয়লা দিনেও বিশেষ পুজো হয়েছে।

এবার অবশ্য কৃষভির জন্য সেভাবে কোনও পরিকল্পনা করিনি এবার। কাঞ্চন 'রক্তবীজ ২'-এর শুটিংয়ে ব্যস্ত। রাতে ও ফিরলে একসঙ্গে কোথাও একটা ভুরিভোজ সারতে যাব। গতবার যেমন শুটিং, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে গেট টুগেদার করেছিলাম। আমরা বেশিরভাগ সময়ে বাড়িতেই সব উৎসব-অনুষ্ঠান উদযাপন করা পছন্দ করি আসলে। বাড়িতেই রান্নাবান্না হয়। কাঞ্চনের প্রিয় পাঁঠার মাংস। ওঁর জন্য একবার প্রায় চার-পাঁচ কেজি মাটন রাঁধতে হয়েছিল আমাকে।

একটু স্মৃতির সরণিতে ফিরে যাই। আমাদের বাপের বাড়ির উপর তলায় একজন থাকতেন, যাঁর সোনার দোকান ছিল। তিনিও হালখাতা উপলক্ষে আমাদের বাড়িতে প্রতিবার পয়লা বৈশাখে রকমারি খাবার পাঠাতেন। এছাড়া আমি, দিদি বাবা-মা সকলে রেস্তরাঁয় খেতে যেতাম কোনওবার। পুরনো দিনের বাড়িতে যেমন হয় আর কী! সকলে একটা যৌথ পরিবারের মতোই থাকতাম। ফলে, নববর্ষ মানেই আমাদের কাছে হইহই। দেদার আড্ডা। খাওয়া দাওয়া। আর নৈশভোজের মেনুতে পোলাও, পাঁঠার মাংস, ফিশফ্রাই কিংবা পাতুরি মাস্ট! এদিনটায় ঠাকুমার হাতের রান্নার কথা খুব মনে পড়ে। আমার ঠাকুমা খুব ভালো পোলাও, পাঁঠার মাংস রান্না করতেন। ওঁর মৃত্যুর মাসখানেক আগেও আমাদের পাঁঠার ঝোল রান্না করে খাইয়েছিলেন। সেই স্বাদ ভোলার নয়। অমৃততুল্য। কী দারুণ স্মার্ট, আধুনিক মহিলা ছিলেন সে যুগেও। চাকরি করেও নিপুণ হাতে ঘর সামাল দিতেন। একটা সময় পর্যন্ত আমার ঠাকুমা নিজেই গোটা বাড়ির ৪০ জন সদস্যের রান্না একাই করতেন। দুর্ভাগ্যবশত কাঞ্চন (মল্লিক) আমার ঠাকুমাকে দেখতে পেল না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement