ফ্রান্স –১ হাঙ্গেরি – ১
(গ্রিজম্যান) (ফিওলা)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউরো কাপে (Euro Cup 2021) অঘটন। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে (France National Football Team) আটকে দিল হাঙ্গেরি। গ্রুপ এফ-কে বলা হচ্ছে ‘গ্রুপ অফ ডেথ’। পর্তুগাল, ফ্রান্স, জার্মানি আর হাঙ্গেরির (Hungary) মধ্যে সব চেয়ে দুর্বল পুসকাসের দেশ। সেই হাঙ্গেরিই ঘরের মাঠে থামিয়ে দিল ফ্রান্সকে। বিরতির ঠিক আগে ফিওলা গোল করে এগিয়ে দেন হাঙ্গেরিকে।
এই ম্যাচের আগে মাত্র একটি গোল করেছেন হাঙ্গেরির পাঁচ নম্বর জার্সিধারী। শনিবার পুসকাস এরিনার সবুজ গালচেতে ভারানকে গতিতে পিছনে ফেলে দিয়ে ফ্রান্সের জালে বল ঠেলে দেন ফিওলা। হুগো লরিস শরীর ছুড়ে দিয়েও তার নাগাল পাননি। দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফেরাল বটে ফ্রান্স। কিন্তু ম্যাচটা আর বের করতে পারল না। এমবাপে, গ্রিজম্যান, আঙ্গোলো কন্তে সম্বলিত দলকে থামিয়ে দেওয়া হাঙ্গেরির কাছে জয়ের সমতুল্যই বটে।
[আরও পড়ুন: দৌড় থেমে গেল মিলখা সিংয়ের, ৯১ বছর বয়সে প্রয়াত কিংবদন্তি]
সমর্থকরা হাঙ্গেরির দ্বাদশ ব্যক্তি। আগেই তাঁরা স্থির করে রেখেছিলেন ফ্রান্সকে অবাক করে দেবেন। খেলা শুরু হতেই সেটা দেখা গেল। পুসকাস এরিনার গ্যালারি ছিল লালে লাল। জাতীয় দলের জার্সি পরে সমর্থকরা ক্রমাগত উৎসাহ দিচ্ছিলেন জালাই-ফিওলাদের।
খেলার প্রথম ১০ মিনিটে দাপট ছিল হাঙ্গেরির। ফ্রান্স তখন প্রতিপক্ষের শক্তি মাপছে। তার পরই ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় ফ্রান্স। একাধিক গোলের সুযোগও তৈরি করে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এমবাপের ছোবল লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, করিম বেনজিমা সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। সুযোগ নষ্টের প্রদর্শনী দেখে দিদিয়ের দেশঁও নিজেকে শান্ত রাখতে পারেননি। অনন্য এক নজিরের সামনে তিনি। খেলোয়াড় জীবনে বিশ্বকাপ, ইউরো কাপ জিতেছেন। কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গিয়েছে তাঁর। এবার ইউরো জেতার অপেক্ষায় দেশঁ।
বিরতির ঠিক আগে আঘাত হানে হাঙ্গেরি। ন্যাগির এরিয়াল বল হেডে সালাইকে নামিয়ে দেন ফিওলা। সালাইয়ের থেকে থ্রু বল পেয়ে বাঁ প্রান্তে আগুন ধরান ফিওলা। তাঁর দৌড় ফ্রান্সের ডিফেন্সে তখন ‘ত্রাহি ত্রাহি’ রব। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের রক্ষণের রক্তাল্পতা প্রকট। ভারানের মতো ডিফেন্ডারকে পিছনে ফেলে ফিওলা গোল করে এগিয়ে দেন হাঙ্গেরিকে। পুসকাস স্টেডিয়ামে তখন আবেগের ফল্গুধারা।
[আরও পড়ুন: উরুগুয়েকে হারিয়ে চলতি কোপা আমেরিকায় প্রথম জয় পেল মেসির আর্জেন্টিনা]
বিরতির পরে অন্য এক ফ্রান্সকে দেখা যাবে, এটা সবাই ধরেই নিয়েছিলেন। আরও আক্রমণাত্মক চেহারা নেবে জিনেদিন জিদানের দেশ, এটাই ছিল ঘোর বাস্তব। দ্বিতীয়ার্ধে সেটাই দেখা গেল। পরিবর্ত হিসেবে ডেম্বেলেকে পাঠান দেশঁ। ডান প্রান্ত দিয়ে পাখির মতো উড়তে থাকেন ডেম্বেলে। বল পায়ে তাঁর সর্পিল দৌড় সমস্যায় ফেলে দিচ্ছিল হাঙ্গেরির রক্ষণভাগকে। ৬৬ মিনিটে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। এমবাপের পাস থেকে সমতা ফেরান গ্রিজম্যান। এক্ষেত্রে অবশ্য হাঙ্গেরির ডিফেন্সকে সংগঠিত লাগেনি। এমবাপে বলটা শিল্ড করে গড়ানে সেন্টার রাখেন। সেই বল ক্লিয়ার করতে পারেননি ওরবান। ফাঁকায় দাঁড়ানো গ্রিজম্যানের বাঁ পায়ের কামান আছড়ে পড়ে হাঙ্গেরির জালে। সমতা ফেরায় ফ্রান্স। ক্ষুধার্ত বাঘ রক্তের স্বাদ পেয়ে গেলে যা হয়, ফুটবলপ্রেমীরা ধরেই নিয়েছিলেন ফ্রান্সের আক্রমণে খড়কুটোর মতো ভেসে যাবে হাঙ্গেরি। কিন্তু খেলার বাকি সময়টায় ডিফেন্সে লোক বাড়িয়ে নেয় তারা।
[আরও পড়ুন: এবার মাঠের বাইরেও রেকর্ড, বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে অনন্য কীর্তি রোনাল্ডোর]
আগের ম্যাচে দেখা গিয়েছিল পর্তুগালকে অপেক্ষায় রেখেছিল হাঙ্গেরি। শেষ ৬ মিনিটে ম্যাচ বের করেছিল পর্তুগাল। অভিজ্ঞতার অভাব দেখা গিয়েছিল পুসকাসের দেশের খেলায়। এদিন আর সেই ভুল করেনি। গোলকিপার গুলাকসি ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তাঁর গ্লাভস জোড়া থামিয়ে দেয় ফরাসি-ঝড়।