সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা অতিমারীর (CoronaVirus) আতঙ্ক কাটিয়ে শুরু হচ্ছে ইউরো কাপ। ব্লকবাস্টার ফুটবল টুর্নামেন্টের দাবিদারদের শক্তি কী? এক্স ফ্যাক্টর কে? এ সমস্ত কিছুই খুঁজে দেখল ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’। আজ ইংল্যান্ড (England)। গ্রুপ ডি’তে ক্রোয়েশিয়া, স্কটল্যান্ড এবং চেক রিপাবলিকের সঙ্গে রয়েছে ইংল্যান্ড।
শক্তি:
হ্যারি কেন। বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। গত প্রিমিয়ার লিগে মরশুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ক্লিনিকাল ফিনিশার। গোল করা ছাড়াও গোল করাতেও পারেন। জেডন স্যাঞ্চো, ফিল ফোডেনের মতো প্রতিভাবান ফরোয়ার্ড দলের শক্তি বাড়িয়েছে।
দুর্বলতা:
বিশ্বফুটবলের চোকার্স। গোলকিপিং বিভাগে দুর্বলতা রয়েছে। দলের সেরা গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড ফর্মে নেই।
এক্স ফ্যাক্টর:
মেসন মাউন্ট। বিশ্বমানের প্রতিভা। চেলসির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পিছনে অন্যতম কারণ।
সেরা তরুণ তারকা:
ডেক্লান রাইস। বিশ্বের অন্যতম সেরা হোল্ডিং মিডফিল্ডার।
হেডমাস্টার:
গ্যারেথ সাউথগেট। দলকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলাতে ভালবাসেন। ম্যান ম্যানেজমেন্টে দক্ষ।
ইউরোয় সেরা ফল:
১৯৬৮ ও ১৯৯৬ ইউরোয় সেমিফাইনালে ওঠা।
[আরও পড়ুন: এবারেও ইউরো জয়ের অন্যতম দাবিদার জার্মানি, কেমন হল জোয়াকিম লো’র দল?]
পুরো দল:
গোলকিপার- ডিন হেন্ডারসন (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), স্যাম জনস্টোন (ওয়েস্ট ব্রোমউইচ), জর্ডন পিকফোর্ড (এভারটন)
ডিফেন্ডার- বেন চিলওয়েল (চেলসি), কোনর কোয়েডি (উলভস), রিস জেমস (চেলসি), হ্যারি ম্যাগিউর (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), টায়রন মিঙ্গস (অ্যাস্টন ভিলা), লুক শ (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), জন স্টোনস (ম্যাঞ্চেস্টার সিটি), ট্রিপিয়ার (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ), কাইল ওয়াকার (ম্যাঞ্চেস্টার সিটি)
মিডফিল্ডার- জুড বেলিংহাম (বরুসিয়া ডর্টমুণ্ড), জর্ডন হেন্ডারসন (লিভারপুল), ম্যাসন মাউন্ট (চেলসি), কেলভিন ফিলিপস (লিডস), ডেকলান রাইস (ওয়েস্ট হ্যাম)
ফরোয়ার্ড- ডমিনিক লিউইন (এভারটন), ফিল ফোডেন (ম্যাঞ্চেস্টার সিটি), জ্যাক গ্রিলিস (অ্যাস্টন ভিলা), হ্যারি কেন (টটেনহাম), মার্কাস র্যাশফোর্ড (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড), বুকায়ো সাকা (আর্সেনাল), জাডন স্যাঞ্চো (বরুসিয়া ডর্টমুণ্ড), রহিম স্টার্লিং (ম্যাঞ্চেস্টার সিটি)
*২৬ জনের দলে নাম থাকলেও লিভারপুলের ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার আর্নল্ড এবারের ইউরো থেকে ছিটকে গিয়েছেন।
সম্ভাব্য একাদশ: পিকফোর্ড, কাইল ওয়াকার/রিস জেমস, হ্যারি ম্যাগিউর, জন স্টোনস, লুক শ, ডেক্লান রাইস, জর্ডন হেন্ডারসন, ম্যাসন মাউন্ট, ফিল ফোডেন, হ্যারি কেন, মার্কাস র্যাশফোর্ড/রহিম স্টার্লিং
[আরও পড়ুন: OMG! পাক ক্রিকেটারের স্ত্রীর মন কাড়লেন ‘ব্যাটসম্যান’ কোহলি! দেখুন পোস্ট]
সম্ভাবনা: মনোবিদের সঙ্গে একটা সেশনে অসাধারণ কোচের জন্ম, কেউ কখনও শুনেছে? কে জানে! অবশ্য ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের ক্ষেত্রে তো ঘটেছে! কোচিং জীবনের একটা সময় ছিল, সাউথগেট যখন দুঃসহ ’৯৬ ইউরো নিয়ে মানসিক কষ্টে ভুগতেন। ’৯৬ ইউরোয় পেনাল্টি মিস নিয়ে। কিন্তু পরে জনি জেনিমার নামক এক পারফরম্যান্স সাইকোলজিস্টের সঙ্গে সেশন চিন্তাধারাই বদলে দিয়েছিল সাউথগেটের। নিজের সীমাবদ্ধতা নিয়ে কোনও সঙ্কোচে ভুগতেন না। টিমের জুনিয়রদের সঙ্গে অদ্ভুত ভাবে মিশে যেতে পারতেন। কাউকে ব্যর্থতার লাগেজ বইতে দিতেন না।
ইউরোর প্রাক্কালে মনে হচ্ছে, ভাগ্যিস সেটা হয়েছিল। ইউরোয় যে টিম নিয়ে ইংল্যান্ড নামবে, তাদের তো এ রকমই একজন কোচ দরকার, যে কি না ব্যর্থতার আতঙ্ক টিমে ঢুকতে দেবে না। টিমটা পুরোদস্তুর ‘জেন জেড’ স্কোয়াড। জুড বেলিংহ্যামের বয়স ১৭। মেসন গ্রিনউড ১৯। জাডন স্যাঞ্চো, ফিল ফোডেন, রিস জেমস ২১। যাঁরা কি না ’৯৮ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে জন্মেছেন। যাঁরা কেউ সাউথগেটের পেনাল্টি মিস দেখেননি। ২০০২ বিশ্বকাপে রোনাল্ডিনহোর কাছে টিমকে ধ্বংস হতে দেখেননি। এবং ঠিক সেই ব্যাপারটাকেই কাজে লাগাচ্ছেন সাউথগেট। টিমকে বোঝাচ্ছেন, তোমরাই পারো ইতিহাস গড়তে। তোমরাই পারো ইউরোটা জিততে।
[আরও পড়ুন: দেশে আছড়ে পড়বে করোনার তৃতীয় ঢেউ, আতঙ্কে ব্রাজিলে কোপা চাইছেন না নেইমাররা]
জানা নেই, আসন্ন ইউরোয় সাউথগেট সেটা পারবেন কি না? পারলে, নিজের পেনাল্টি মিসের দুঃখ যে চিরতরে ভুলে যাবেন, নিশ্চিত। অর্থাৎ ‘জেন-এক্স’ নয়, এবার ইউরোয় ‘জেন জেড’-ই ভরসা ইংল্যান্ডের।
তবে আসন্ন ইউরোর আগে অবশ্য বিশ্বফুটবলের ‘চোকার্স’-দের নিয়ে আশাবাদী দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান। তিন বারের ইপিএলজয়ী কোচের দাবি এ বারই ইংল্যান্ডের ইউরো জেতার সেরা সু়যোগ। এক সাক্ষাৎকারে পর্তুগিজ কোচ বললেন, “পরিষ্কার বলছি এ বারই ইংল্যান্ডের ইউরো জেতার সেরা সুযোগ। প্রতিটা গ্রুপ ম্যাচই নিজেদের ঘরের মাঠ ওয়েম্বলিতে খেলবে ইংল্যান্ড। ফলে হোম অ্যাডভান্টেজ থাকবে হ্যারি কেনদের সঙ্গে। তার উপর ইংল্যান্ড দলটাও দারুণ। অনেক প্রতিভাবান ফুটবলার আছে। ফলে আশা করছি ইংল্যান্ড দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দেবে।” গ্যারেথ সাউথগেটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মোরিনহো আবার যোগ করেন, “ব্রাজিলের মতো ইংল্যান্ডের কোচ হওয়াটাও খুব কঠিন একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ আলাদা একটা প্রত্যাশার চাপ থাকে। তাতেও গ্যারেথ সাউথগেট ইংল্যান্ডের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর দলকে অনেক কম্পিটিটিভ করে তুলেছে। ২০১৮ বিশ্বকাপেও ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে উঠেছিল। ফলে আমি নিশ্চিত সাউথগেটের কোচিংয়ে অনেক সাফল্য পাবে ইংল্যান্ড।”