সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'শৈলজানন্দ স্মৃতি পুরস্কার' পেলেন কথাসাহিত্যিক উল্লাস মল্লিক ও ক্রীড়া সাংবাদিক ও লেখক গৌতম ভট্টাচার্য। শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমিতে শৈলজানন্দ স্মৃতিরক্ষা সমিতি আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার। বাংলা কথাসাহিত্যের ইতিবৃত্তে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত এই স্মৃতি পুরস্কার। এবার কিংবদন্তি সাহিত্যিকের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। তাই এবারের সম্মাননা প্রদান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

এদিনের অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল ও প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেন। প্রধান অতিথিরূপে উপস্থিত ছিলেন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। পুরস্কার প্রদানের পরে শৈলজানন্দ স্মারক বক্তৃতা দেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শান্তি সোরেন। সবশেষে আয়োজিত হয় এক নাতিদীর্ঘ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আবৃত্তি করেন ইভা দাস। শৈলজানন্দের গল্প 'মৃত্যুভয়' অবলম্বনে শ্রুতিনাটক 'আমাদের উচ্চারণ সংস্থা'। এতে অংশ নেন দেবাশিস কুমার, সুস্মেলী দত্ত ও দেবযানী কুমার। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক বিনতা রায়চৌধুরী, অধ্যাপক ও শৈলজানন্দ-বিশেষজ্ঞ শুভেন্দু দাসমুন্সী।
সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক শৈলজানন্দের জন্ম ১৯০১ সালের ১৯ মার্চ। তাঁর অভিন্নহৃদয় বন্ধু ছিলেন কাজি নজরুল ইসলাম। দু'জনেই যুদ্ধে যোগ দিতে গেলে ডাক্তারি পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি শৈলজানন্দ। তিনি পরে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে কয়লাকুঠিতে চাকরি নেন। আর এই সময়ই তিনি লিখতে থাকেন অসামান্য সব গল্প। কয়লাখনির শ্রমিকদের জীবনযন্ত্রণা তাঁর লেখায় নিপুণ ভাবে ফুটে উঠতে থাকে। পরবর্তী সময় তিনি কলকাতায় আসেন। জড়িয়ে পড়েন 'কল্লোল' ও 'কালিকলম' পত্রিকাকে ঘিরে তৈরি হওয়া সাহিত্য আন্দোলনে। সঙ্গী হিসেবে পান অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, প্রেমেন্দ্র মিত্রের মতো শক্তিশালী সাহিত্যিককে। উপন্যাস এবং গল্প সংকলন-সহ প্রায় ১৫০টি গ্রন্থের প্রণেতা শৈলজানন্দ 'নন্দিনী', 'শহর থেকে দূরে', 'কথা কও'-এর মতো অসংখ্য বিখ্যাত ছবির পরিচালকও। আকাশবাণীতেও তিনি বহু নাটক প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছিলেন। নিজের সাহিত্যকৃতির জন্য পেয়েছিলেন আনন্দ পুরস্কার, উল্টোরথ পুরস্কার। পাশাপাশি যাদবপুর এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি লিটও পান তিনি।