সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুস্মিতা দেবের পর মুকুল সাংমা (Mukul Sangma)! ফের উত্তরপূর্ব ভারতে কংগ্রেসে বড়সড় ভাঙন ধরাতে পারে তৃণমূল। এরাজ্যের শাসকদলে যোগ দিতে পারেন মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সঙ্গে দেখা করেছেন মুকুল সাংমা। তারপর থেকেই তাঁর তৃণমূলে যোগ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
মুকুল সাংমা মেঘালয়ের (Meghalaya) রাজনীতিতে বড় নাম। এই মুহূর্তে মেঘালয় কংগ্রেসের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা তিনি। ২০১৮ সাল পর্যন্ত উত্তরপূর্বের এই রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সাংমা। ২০১৮ নির্বাচনে মেঘালয়ে কংগ্রেসের পরাজয়ের পর তিনি সেরাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসাবে কাজ করছেন। তবে, ইদানিং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে প্রভাবশালী এই কংগ্রেস (Congress) নেতার। আসলে, সদ্যই মুকুলকে উপেক্ষা করে সাংসদ ভিনসেন্ট এইচ পালাকে রাজ্য সভাপতি পদে নিয়োগ করেছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেটিই মুকুলের ক্ষোভের আসল কারণ। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর এই ক্ষোভকেই কাজে লাগাতে চাইছে তৃণমূল। শুধু সাংমা নয়, এর আগে মেঘালয়ের আরও বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতার সঙ্গে গোপনে তৃণমূল (TMC) নেতারা যোগাযোগ করেছেন বলে সূত্রের দাবি।
[আরও পড়ুন: পাঞ্জাবের পর মুখ্যমন্ত্রী বদল রাজস্থানেও? কী বলছে কংগ্রেস সূত্র?]
তৃণমূল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতেই কলকাতায় এসে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন মুকুল। সাংমার ঘনিষ্ঠ সূত্রেও এই খবর স্বীকার করা হয়েছে। মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন, “কলকাতায় একটি কাজে গিয়েছিলেন সাংমা। সেখানেই তৃণমূল নেতাদের আথিতেয়তা গ্রহণ করেছেন তিনি। এর মধ্যে বিশেষ কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ নেই।” মেঘালয় প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ভিনসেন্ট পালাও (Vincent H Pala) দাবি করেছেন, মুকুলের সঙ্গে তাঁর কোনও বিবাদ নেই। দলে মুকুল সাংমাকেই নিজের নেতা বলে মনে করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: নাগা জঙ্গিদের সঙ্গে প্রথমবার বৈঠকে হিমন্ত বিশ্বশর্মা, শান্তি ফিরবে নাগাল্যান্ডে?]
কংগ্রেস যতই অস্বীকার করুক, অভিষেকের সঙ্গে সাংমার এই সাক্ষাৎ রীতিমতো চিন্তায় রাখবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। কারণ, সাংমা ‘হাত’ ছেড়ে ঘাসফুলে নাম লেখালে, তাঁর পিছু পিছু অনেক কংগ্রেস নেতাই যে ‘হাত’ ছাড়বেন তাতে সংশয় নেই। তৃণমূল এই মুহূর্তে উত্তরপূর্ব ভারতে জমি তৈরি করতে মরিয়া। ইতিমধ্যেই সুস্মিতা দেবের (Susmita Dev) মতো সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেত্রীকে তাঁরা দলে টেনেছে। ত্রিপুরায় প্রায় প্রতিদিনই কংগ্রেসের কোনও না কোনও নেতা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। গত কয়েক মাসে উত্তরপূর্বের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি বলছে, কংগ্রেসকে নয়, বরং বিজেপির বিকল্প হিসাবে তৃণমূলকেই প্রথম পছন্দ হিসাবে বেছে নিচ্ছেন ওই এলাকার মানুষ। এরপর মেঘালয়ে কংগ্রেসের ঘর ভেঙে তৃণমূল শক্তি বাড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।