shono
Advertisement

শহুরে মেয়েরাও কি খাঁচাবন্দি! কলকাতায় এসে কী বলছেন কিরণ রাও?

কলকাতায় 'লাপাতা লেডিজ'-এর প্রচারে এসে আর কী বললেন কিরণ রাও?
Posted: 01:09 PM Mar 08, 2024Updated: 02:41 PM Mar 08, 2024

কিরণ রাওয়ের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লাপাতা লেডিজ’ -এ বউ পালটে যায়। আর বউ পালটানোকে সঙ্গে নিয়ে মেয়েদের জীবন পালটানোর গল্প বলে। যেখানে নারী স্বাধীনতা, নারীর স্বপ্ন তুলে ধরেন কিরণ। কিরণ নিজেও স্বাধীনচেতা মানুষ। তাই তো আমির খানের প্রাক্তন স্ত্রীর পরিবর্তে পরিচালক পরিচয়েই স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন সবচেয়ে বেশি। শুধু ছবিতে নয়, কিরণের হাভেভাবেও তার ঝলক দেখা যায়। কলকাতায় ছবির প্রচারে এসে মনখোলা আড্ডায় ধরা পড়ল কিরণের সেই রূপ। কিন্তু সমাজের উচ্চশ্রেণীর তালিকায় থাকা কিরণ রাও কি সাধারণ মেয়েদের মতো স্বপ্ন দেখতে ভয় পান? খাঁচায় আটকে রাখেন নিজেকে? একান্ত সাক্ষাৎকারে সোজাসাপটা কিরণ রাও। শুনলেন আকাশ মিশ্র

Advertisement

আপনি তো বাংলা জানেন, বাংলাতেই হোক সাক্ষাৎকার?

কিরণ: হতেই পারে। কিন্তু যদি কথার মাঝখানে বাংলা বলতে গিয়ে আটকে যাই, তাহলে হিন্দি বা ইংরেজিতে উত্তর দেব। 

‘ধোবি ঘাট’-এর পর আপনিও তো ‘লাপাতা’ হয়ে গিয়েছিলেন! নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরতে এত দেরি হল কেন?

কিরণ: (হেসে) নাহ, লাপাতা ছিলাম না। অনেকগুলো স্ক্রিপ্ট লিখছিলাম। কিন্তু সেই স্ক্রিপ্টগুলো নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলাম না। এরই মাঝে আমাদের জীবনে আজাদ আসে। তখন কিছুটা হলেও থমকে যাই। অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ঠিক এই সময়ই হয়তো বিপ্লব আমার জন্য দেশের অন্য কোণায় বসে স্ক্রিপ্ট লিখছিল। আর সেটা শুনেই ভালো লেগে গেল।

বলিউড বক্স অফিসে তো ‘অ্যানিম্যাল’-এর মতো ছবিই চলছে। ‘লাপাতা লেডিজ’ কি এই ট্রেন্ড ভাঙতে পারবে?

কিরণ: এই সময়ে দাঁড়িয়ে হয়তো অ্যানিম্যাল-এর মতো ছবির থেকে আলাদা ‘লাপাতা লেডিজ’। তবে ছবি তৈরির সময় আমাদের তেমন কোনও ট্রেন্ড ভাঙার চিন্তাভাবনা ছিল না। ২০১৮ সালে আমি আমিরের কাছ থেকে প্রথম গল্পটা শুনি। বলতে গেলে ওয়ানলাইনার শুনি। শুনেই আমার খুব ভালো লেগেছিল। তারপর বিপ্লবের ( লাপাতা লেডিজের লেখক বিপ্লব গোস্বামী) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। গল্পটা ওর থেকে নিই আমরা। তারপর গল্পটাকে আরও ডেভেলপ করা হয়। আরও দুজন লেখক স্নেহা দেশাই ও দিব্যানিধী শর্মা আমাদের টিমে আসেন। ২০২০ সালে ফাইনাল ড্রাফ্টটা তৈরি হয়। আমরা শুটিংয়ের জন্য তৈরি হই। ২০২১-এ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হল। তখন আমাদের প্রি প্রোডাকশনের কাজ আটকে যায়। আমরা শুটিং শুরু করতে পারিনি। অবশেষে ২০২২-য়ে আমদের শুট শুরু হয়।

[আরও পড়ুন: বিতর্ক পেরিয়েও সফল ‘অ্যানিম্যাল’, তিরুপতিতে কেশ দান করে নেড়া হলেন পরিচালক সন্দীপ ভাঙ্গা]

ছবিতে ২০০১-এর সময়টা দেখানো হলেও, ‘লাপাতা লেডিজ’ মেয়েদের যে ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলে, এই সময়েও তা প্রাসঙ্গিক। বদল কি ঘটবে? কী মনে হয়?

কিরণ: একদমই ঠিক। এই ছবি যে ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলেছে, তা এই সময়েও দাঁড়িয়েও খুব উজ্জ্বল। আর সবচেয়ে বড় কথা হল, লাপাতা লেডিজ যে গল্পটা বলে, সেটা খুব ইউনিভার্সাল। এই ছবিতে যেভাবে মেয়েদের ইচ্ছে, স্বাধীনতাকে কোথাও গিয়ে একটা খাঁচার মধ্যে দেখানো হয়েছে, তা কিন্তু শুধু গ্রামাঞ্চলে নয়। শহরেও দেখা যায়। মেট্রোপলিটন সিটিগুলোতেও এর বহু প্রমাণ রয়েছে।

 

কিরণ রাও কখনও এসব ফেস করেছেন?

কিরণ রাও: এটার উত্তর আমার তৈরি ছবিগুলোই না হয় দেবে। আসলে, আমি চাই এই ছবিটা বেশিরভাগ মেয়েরা দেখুক। কারণ, মেয়েদের ইচ্ছের কথা, মেয়েদের স্বপ্নের কথা মেয়েদেরই বলতে হবে। মেয়েদেরই ভাবতে হবে। আর এই বিষয়ে পারস্পরিক যেন একটা সহযোগিতা থাকে। আমি সবার মধ্যে এই চিন্তাটাই ছড়িয়ে দিতে চাই। ‘লাপাতা লেডিজ’ তৈরির নেপথ্যে এটাই আমার উদ্দেশ্য ছিল। বক্স অফিসের কথা আমি খুব একটা ভাবছি না। এই ছবিটা সবার সমানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

আমিরের পছন্দের গল্পে ‘লাপাতা লেডিজ’ বানালেন, ছবি দেখে উনি কী বলছেন?

কিরণ: ভীষণ পছন্দ করেছে ছবিটা। বলা ভালো উচ্ছ্বসিত। আমিরও চেয়েছিল এই ছবির প্রচারে যুক্ত হতে। কলকাতায় আসারও ইচ্ছে ছিল। কিন্তু নানা শুটিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই আমিরের আর আসা হল না।

কলকাতায় তো আপনি বড় হয়েছেন। এই শহরে পা রাখলে কী কী মনে পড়ে?
কিরণ: ১২/১ হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিটে থাকতাম। আলিপুরেও দুবছর ছিলাম। লরেটো হাউজে পড়েছি। রিক্সা করে স্কুলে যেতাম। এই শহরের সঙ্গে খুব ভালো ভালো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে আমার। এই শহরে পা দিলেই তা মনে পড়ে যায়। থিয়েটার দেখেছি। এমনকী, এবার এসে আমার সহকারীদের বলেছি, আমি আমার পুরনো বাড়ি দেখতে চাই। কলকাতা আমার কাছে শিকড়ের মতো।

কলকাতা নিয়ে কখনও গল্প বলতে চান?

কিরণ: একটা চিত্রনাট্য লেখা রয়েছে। বাংলার সুন্দর সুন্দর জায়গায় শুট করার ইচ্ছে রয়েছে। তবে বিষয়টা একেবারেই প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। এখনই কিছু বিস্তারিত বলছি না।

বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরেও আমিরের সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব, একসঙ্গে ঘুরছেন, কাজ করছেন। এরকম কেমিস্ট্রি কীভাবে সামলান?

কিরণ: সম্পর্ক ব্যাপারটা খুবই ব্যক্তিগত। একেকজন একেক রকম ভাবে দেখে। আমি আর আমির বরাবরই বন্ধুত্বকে সবার উপরে রেখেছি। বিয়েটা টিকল না, সেই খারাপ লাগাটা নিয়ে থেকে কোনও লাভ নেই। তার থেকে ভালো, সম্পর্কের ভালো দিকগুলোকে নিয়ে থাকা। যে ভালো সময়গুলো কাটিয়েছেন একসঙ্গে সেটা নিয়ে থাকুন। এতে নিজেও ভালো থাকতে পারবেন, অন্যজনও ভালো থাকবেন।

আপনার ছবিতে আমির আবার কবে নায়ক হবেন?

কিরণ: আমার কাছে বেশ কিছু স্ক্রিপ্ট রয়েছে আমিরের জন্য। আগে আমির সেগুলো পছন্দ করুক। তারপর ওকে ডিরেক্ট করব।

[আরও পড়ুন: উদয়পুরে বিয়েতে গিয়ে অঘটন! অসুস্থ ধর্মেন্দ্র, বাবা কেমন আছেন? জানালেন ববি দেওল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement