অভিজিৎ দেশমুখ, প্যারিস: প্রথম ভারতীয় মহিলা শুটার হিসাবে অলিম্পিকে পদক জিতেছেন। ইতিহাস গড়েছেন মনু ভাকের। গোটা দেশ তাঁর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। কিন্তু নজির গড়া কন্যা নিজেই জানতেন না, তাঁর হাত ধরেই ইতিহাস রচিত হয়েছে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে। ব্রোঞ্জ জেতার পরে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন, এই পদক কেবল তাঁর একার নয়। অলিম্পিক পর্যন্ত যতজন ভারতীয় মহিলা শুটার পৌঁছেছেন, তাঁদের সকলের। কঠিন সময়ে যাঁরা পাশে থেকে সমর্থন জুগিয়েছেন, এই পদকের ভাগীদার তাঁরাও।
২০২০ টোকিও অলিম্পিকের আগেও মনুর (Manu Bhaker) উপরে আশা করেছিলেন আপামর ভারতবাসী। কিন্তু সেখান থেকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল প্রতিভাবান শুটারকে। একেবারে শেষ মুহূর্তে পিস্তল বিকল হয়ে যায় তাঁর। সারিয়ে নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছিলেন বটে, কিন্তু একরাশ ব্যর্থতা নিয়ে শুটিং রেঞ্জ ছাড়তে হয় মনুকে। কাঁদতে কাঁদতে বিদায় নিচ্ছেন দেশের প্রতিশ্রুতিময় শুটার, সেই ছবি দেখেছিল গোটা ভারত।
[আরও পড়ুন: ব্যর্থ রিচা-স্মৃতির লড়াই, এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হার ভারতের মেয়েদের]
তবে সেই ব্যর্থতা অনেক কিছু শিখিয়েছিল মনুকে। সেজন্যই প্যারিসে (Paris Olympics 2024) ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পদক তাঁর গলায়। একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন, "আমি বিশ্বাস করি, জয় বা সাফল্য জীবনে ততটা শেখায় না যতটা ব্যর্থতা থেকে শিখতে পারি। টোকিও থেকে যা শিক্ষা নিয়েছি, সেই নিয়েই এগিয়ে চলেছি। তবে অতীতকে সেভাবে মনে রাখি না।" আরও জানান, কঠিন সময়ে অনেকেই ছিলেন তাঁর পাশে। আজ অলিম্পিকে পদক জিতে ইতিহাস গড়ার পর তাঁদেরও ধন্যবাদ দিতে চান মনু। তবে যেহেতু এটাই প্রথম অলিম্পিক পদক, তাই এই ব্রোঞ্জ তাঁর কাছে খুবই স্পেশাল বলে জানালেন মনু।
ব্রোঞ্জ জিতেই মনু জানিয়েছিলেন, তাঁর জীবনে গীতার অবদানের কথা। তরুণী শুটারের মতে, "আমার মেডিটেশন গুরু রয়েছেন। তিনি প্রত্যেকদিন ঘুমনোর সময়ে আমাকে ধ্যান করতে বলেন। আর প্রত্যেক দিন গীতা থেকে দুটো করে শ্লোক আমাকে শোনান। সেখান থেকেই অনুভব করেছি, গীতা এত পুরনো গ্রন্থ হলেও বর্তমান সময়েও তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।" অলিম্পিকে ব্রোঞ্জজয়ী শুটারের মতে, ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে কঠিন পরিশ্রম করে এগিয়ে যাওয়ার শিক্ষা দেয় গীতা। আগামী দিনে এই মন্ত্রই অনুসরণ করবেন তিনি।