আগামী সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে তনুশ্রী চক্রবর্তীর নতুন ছবি ‘চিরসখা হে’। ছবি নিয়ে আড্ডায় অভিনেত্রী। শুনলেন শম্পালী মৌলিক
শরীর কেমন?
তনুশ্রী: শরীর এমনিতে ভালই। ভাইরাল ইনফেকশন হয়েছে বলে গলার অবস্থা খারাপ। বাকিটা ঠিকই আছে। কাজ থেমে নেই। গলা বসে গিয়েছে। ডাবিং বাতিল করতে হল, আপাতত।
আচ্ছা, একটা সময়ে আপনি ইংরেজি নামের বানান পরিবর্তন করলেন। তনুশ্রী-র টি-এর পরের ‘এ’ অক্ষর বাদ দিলেন। সেটা কি নিউমেরোলজি মেনে? না কী কারণে?
তনুশ্রী: নিউমেরোলজি মেনেই করেছি।
বানান বদলাতে ঠিক কী কারণ বলেছিলেন?
তনুশ্রী: কারণ অত জিজ্ঞেস করিনি। বলেছিলেন ভাল হবে। আমি দেখলাম ঠিক আছে করা যাক।
মানে এতগুলো অক্ষরের মধ্যে থাকলে ভাল হবে?
তনুশ্রী: একটা কিছু কারণ নিশ্চয় বলেছিলেন। মনেও নেই এখন। কোনও কিছুতে খুব একটা অন্ধবিশ্বাস করি না। তবে তারপর থেকে খারাপ হচ্ছে না। কেউ যদি এমন বলে, সাধ্যের মধ্যে হলে আমি করি। না হলে করি না।
সামনে আপনার অভিনীত ‘চিরসখা হে’ রিলিজ করবে ১০ মার্চ। অর্ঘ্যদীপ চট্টোপাধ্যায়ের ছবি। আপনার ভূমিকা কেমন?
তনুশ্রী: অর্ঘ্যদীপের সঙ্গে বহু বছর ধরে কাজ করার কথা। লকডাউনের সময় নানা বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করতাম। ও যে ধরনের ছবি বানায় আমার খুব ইন্টারেস্টিং লাগে। বেশিরভাগ থ্রিলার বানিয়েছে অর্ঘ্যদীপ এতদিন ধরে। একটা অন্য ধারা আছে ওর কাজের। বলেছিল, আমার সঙ্গে যদি কাজ করে, অন্য ধরনের কিছু বানাবে। তখন আমি বলেছিলাম, ‘তোমার জোরের জায়গা তো থ্রিলার।’ তখন অর্ঘ্যদীপ বলে, এমন কিছু বানাতে চায় যেটা ও আগে করেনি।
‘চিরসখা হে’ নাম শুনলে তো মনে হয় প্রেমের ছবি।
তনুশ্রী: ঠিক ওইরকম প্রেমের ছবি নয়। এটা এমন দুনিয়া যেখানে প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকের মায়া-ভালবাসার জায়গা আছে। পরিস্থিতি যা-ই হোক। এই ছবিতে সিচুয়েশনটাই হল রহস্য। এটাই থ্রিল। দর্শক যখন দেখবে ছবিটা, সেই রহস্য উন্মোচন হবে।
আপনি আর ঈশান মজুমদার কি জুটিতে?
তনুশ্রী: ঠিক সেইরকম নয়। তথাকথিত ধারণার ভালবাসার ছবি নয় এটা। ইট্’স আ ফ্যামিলি ড্রামা। সেই অর্থে প্রেমের ছবি নয়।
‘চিরসখা হে’ ছবির নাম। এদিকে তনুশ্রী কি নিজের সখা খুঁজে পেলেন এবার?
তনুশ্রী: (হাসি) এখনও পাইনি। খোঁজ চলছে। আসলে আমি ঠিক টর্চ নিয়ে খোঁজার মতো খুঁজিনি। (হাসি)
তবে শোনা গিয়েছিল আপনার আগের প্রেমের সম্পর্কে ব্যবধান তৈরি হয়েছিল। ফাইনালি বোধহয় সেটা ওভারকাম করে গিয়েছেন। তাই তো?
তনুশ্রী: সিচুয়েশন অর্থাৎ পরিস্থিতি মানুষকে অনেক কিছু শেখায়। এটাই বলব, তনুশ্রী অনেক পরিণত হয়ে গিয়েছে এখন। এভরিডে সিচুয়েশন থেকে ওভারকাম করি। প্রত্যেকদিন…।
আপনার শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ছিল অঞ্জন দত্ত-র পরিচালনায় ‘রিভলভার রহস্য’। ছবিটি বক্স অফিসে তেমন সাফল্য না পেলেও আপনার কাজ প্রশংসা পেয়েছে। আপনার কাছে ফিডব্যাক কেমন ছিল?
তনুশ্রী: হুম…আমার কাছে ফিডব্যাক ভালই ছিল। আমরা আশা করেছিলাম আরও দর্শক ছবিটা দেখতে যাবেন। আবার যাঁরা ছবিটা দেখেছেন, তাঁদের কিন্তু ভাল লেগেছে।
এটা যেহেতু গোয়েন্দা সুব্রত শর্মাকে ঘিরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ছবি, ভবিষ্যতে আপনাকে এর পরবর্তী ছবিতে পাওয়া যাবে?
তনুশ্রী: দেখা যাক, সময় বলবে। এটা আমার চেয়ে ভাল অঞ্জনদা বলতে পারবেন।
গত বছরে আপনার দুটো ছবি দর্শকের খুব ভাল লেগেছিল। ‘বছর কুড়ি পরে’, এবং ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’। দুটো ছবিতেই আপনার সাবলীল অভিনয় নজর কেড়েছিল। তবু কি মনে হয় আপনি টলিউড থেকে আরেকটু বেশি পেতে পারতেন?
তনুশ্রী: আমার স্যাটিসফেকশন খুব কম। সবসময় মনে হয় আরেকটু বেটার হতে পারে। সত্যি কথা বলতে, যেটা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে ভাবি না। সামনের দিকের কথা ভাবি। যে কাজগুলো সামনে আসতে চলেছে, সেই কাজ নিয়ে আমার চিন্তা অনেক বেশি।
আগামী দিনে আপনার অভিনীত ‘মায়া’ রিলিজ আছে। পরিচালনায় রাজর্ষি দে। যেখানে আপনি লেডি ম্যাকবেথ-এর ধাঁচের চরিত্রে। নিশ্চয়ই সেদিকে তাকিয়ে আছেন?
তনুশ্রী: অফকোর্স। খুব প্রমিনেন্ট একটা চরিত্র এবং ছবিটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যাক, মনে হয় দর্শকের ভাল লাগবে।
বাংলায় আর কোনও রিলিজ অপেক্ষায় আপনার?
তনুশ্রী: ‘চিরসখা হে’ আর ‘মায়া’ রিলিজ ছাড়া, রাজর্ষিরই আরেকটা ছবি মুক্তির অপেক্ষায়–‘শুভ নববর্ষ’। এছাড়া সামনে কতকগুলো ছবির শুটিং করতে চলেছি। আর ফেস্টিভ্যালের জন্য আরেকটা ছবি করেছি। এখনই এই ডিটেল বলতে পারছি না। সময় হলে বলব (হাসি)।
আরেকটা তো নিশ্চিত খবর। আপনি হিন্দি ছবি করে ফেলেছেন, যে ছবিতে সানি দেওল রয়েছেন।
তনুশ্রী: এটা নিয়েও কোনও কথা বলতে পারব না। সেই জায়গায় নেই।
রাজনীতি নিয়ে কি আপনার আশাভঙ্গ হয়েছে?
তনুশ্রী: না, না। যখন রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি, আমি ভেবেই যোগ দিয়েছিলাম। যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেটা বিরাট। এবং আমাকে অনেকটা পড়াশোনা করতে হবে। রাজনীতি খুব দায়িত্বের জায়গা, ছেলেখেলার বিষয় নয়। এই মুহূর্তে রাজনীতি নিয়ে কিছু বলতে চাই না।
মিমি, নুসরত, শ্রাবন্তী, আপনার সেই বন্ধুত্ব কি এখনও রয়েছে?
তনুশ্রী: কেন থাকবে না!
আপনাদের আগের তুলনায় কম একসঙ্গে দেখা যায়।
তনুশ্রী: না, তা নয়। আমরা সবসময় ছবি পোস্ট করে মিট করি না। মাঝখানে আমরা মিট করেছি কিন্তু ছবি পোস্ট করিনি। ছবি পোস্ট করলে তবে লোকে জানতে পারে। এই যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যকলাপ খুব তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রেও অনেকসময় দেখা হয়, কার কত ফলোয়ার্স। জনপ্রিয়তা দেখার নিরিখে। আপনি কী বলবেন?
তনুশ্রী:আমার কাছে ওটাও খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। সোশ্যাল মিডিয়া ইম্পর্ট্যান্ট কারণ, পিপল আর কানেক্টেড। কিন্তু কাস্টিংয়ের এটা কতটা কী, আমি ঠিক নিশ্চিত নই।