অভিরূপ দাস: উলটে পড়ে আছেন রাস্তায়। হাত থেকে ছিটকে গিয়েছে ছাতা। জলে ডুবে আঁকুপাঁকু করছেন পেল্লায় বপুর মধ্যবিত্ত বাবু। আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকার এ ছবি দু’ হাজার বাইশের নয়। ১৯২৬ সালের। ছিয়ানব্বই বছর আগে মাসিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছিল এহেন কার্টুন (Cartoon)। অধুনা কলকাতায় জমা জল দেখে যাঁরা গেল গেল রব তুলছেন তাঁদের আশ্বস্ত করবে এই রেখাচিত্র।
সতীশচন্দ্র সিংহের সে কার্টুনের তলায় লেখা, ‘‘বৃষ্টি তো মুন্সীপালের নিজের সৃষ্টি নয়। ভুঁড়ি নিয়ে কেন পথ চল মহাশয়।’’ কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং জানিয়েছেন, শুধু কলকাতা নয়, নিউইয়র্ক সিটিতেও জল জমে। অন্যদিকে বিধায়ক দেবাশিস কুমার (Debasish Kumar) বলেছেন, যাঁরা বৃষ্টিতে জল জমলে পুরসভাকে বাপবাপান্ত করছেন, এই কার্টুনটাই তাঁদের উত্তর। মেয়র পারিষদের কথায়, কলকাতা শহরের গঠনটাই কড়াইয়ের মতো। ঘণ্টায় ৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলেই জল জমতে বাধ্য। এই জমা জল স্বাভাবিক উপায়ে বেরোয় না। পাম্প করে বের করতে হয়। কতটা তাড়াতাড়ি জল নামানো যায় সেটাই পুরসভার কাছে চ্যালেঞ্জ। মেয়র পারিষদ জানিয়েছেন, একশো বছর আগে নিকাশি ব্যবস্থা এতটা উন্নত ছিল না। বর্তমানে জল জমলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সে জল নেমে যায়।
[আরও পড়ুন: নবান্নে মুখোমুখি শাহ-মমতা, শুরু পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক]
বাংলা কার্টুনের দেড়শো বছর পূর্তি। সেই উপলক্ষেই জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গণে চলছে প্রদর্শনী। চলবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আয়োজনে কার্টুন দল। সেখানেই দেখা মিলছে পঁচাত্তর-একশো বছরের পুরনো কার্টুনের। চাইলে তা সংগ্রহও করতে পারেন আগ্রহীরা। দাম মোটে দু’শো টাকা। কার্টুনের দেড়শো বছর জোড়াসাঁকোয় কেন? আয়োজক কার্টুনদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্রেফ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ নন। অবনীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথও জমিয়ে কাঁটুন এঁকেছেন। এমনকী জোড়াসাঁকোতে ছাপাখানা বসিয়ে তিনটে কার্টুনের বই প্রকাশ করেছিলেন গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
[আরও পড়ুন: অনশনকারীদের ব্যবহারে বিরক্ত, আর কলেজে আসবেন না মেডিক্যালের উপাধ্যক্ষ-অধ্যক্ষ]
সংস্থার পক্ষ থেকে অরিত্র দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, কার্টুন শেখার আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। কোভিডের আগে বছরে চারটে ওয়ার্কশপ করত কার্টুনদল। অধুনা তা বন্ধ আছে। ফের নতুন করে তা শুরু হওয়ার অপেক্ষায়। শুধু তাই নয়, অধুনা অনেকেই নিজের কার্টুন আঁকাতে আগ্রহী। কার্টুনশিল্পে একে বলা হয় লাইভ ক্যারিকেচার। অরিত্রর কথায়, এই লাইভ ক্যারিকেচারও শেখানো হচ্ছে শহরজুড়ে।