অর্ণব আইচ: সামনে বিএ ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু ভাল করে পড়াশোনা হয়নি। তাই পরীক্ষার আগে ভয়ে বুক কাঁপছে তরুণীর। ফেসবুক-বন্ধুর কাছে তাঁর ভয়ের কথা খুলে বলেছিলেন তিনি। মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সেই ফেসবুক ফ্রেন্ড। বলেছিলেন, বিএ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তিনি হাজির করবেন তরুণীর সামনে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে। কিন্তু কাকপক্ষীও টের পাবে না। সেই ফাঁদে পা দিয়েই ফেসবুক বন্ধুর হাতে টাকা ও গয়না তুলে দিয়েছিলেন তিনি। ‘বন্ধু’ সেই টাকা আর গয়না নিয়ে উধাও। শেষ পর্যন্ত তদন্ত চালিয়ে পশ্চিম বন্দর এলাকা থেকে গার্ডেনরিচ থানার পুলিশের কাছে ধরা পড়ল ওমর ফারুক নামে এক যুবক।
[মন্দিরে ভক্তদের ভিড়ে গোয়েন্দা অফিসারের মানিব্যাগ উধাও]
পুলিশ জানিয়েছে, গার্ডেনরিচের বাসিন্দা ওই তরুণীর সামনেই বিএ পরীক্ষা। কিন্তু পড়াশোনা ভাল হয়নি। ভাল ফল করার জন্য অভিভাবকদের চাপ। আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাট করার নেশাও ছাড়তে পারছেন না। ফেসবুকেই তাঁর আলাপ ওমরের সঙ্গে। চ্যাট করতে করতেই ওমর তাঁকে বলেন, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিশেষভাবে যুক্ত। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ছাপা হয়, সেখানেই তাঁর যোগাযোগ। তাই প্রশ্নপত্র বাইরে বের করে নিয়ে আসা তাঁর কাছে কোনও সমস্যা নয়। তরুণী তখনই ওমরকে অনুরোধ করেন প্রশ্নপত্র তাঁকে দিতে। ওমর তাঁকে বলেন, অত্যন্ত গোপনভাবে প্রশ্ন ফাঁস করতে গেলে অনেককে টাকা দিতে হবে। প্রায় লাখ টাকা খরচ করলেই প্রত্যেকটি পেপারের প্রশ্নপত্র তাঁর সামনে হাজির হয়ে যাবে। ভাল ফল করতে মরিয়া ওই তরুণী কলেজ ছাত্রী ওমরের কাছ থেকে তাঁর মোবাইল নম্বর নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। দেখাও করেন ওমরের সঙ্গে। ওই যুবককে তিনি ৩৪ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকা নগদে না দিয়ে বাড়ি থেকে একটি সোনার কয়েন ও নিজের কিছু গয়নাও তুলে দেন ওই যুবকের হাতে। কিন্তু ওই টাকা ও গয়না হাতে নিয়েই তরুণীকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন যুবক। যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। বন্ধ করে দেন মোবাইলও। কোনও প্রশ্নপত্রও তাঁর হাতে আসেনি। ছাত্রী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার। তিনি গার্ডেনরিচ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ তদন্ত করতে শুরু করে। মোবাইলের সূত্র ধরেই তাঁর হদিশ পাওয়া যায়। ওমরকে গ্রেপ্তার করে ১৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা ও গয়না উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।