অর্ণব আইচ: ফের বিপুল পরিমাণ জাল নোট উদ্ধার। যার বাজার মূল্য সাত লক্ষ। এ ব্যাপারে জড়িত থাকায় পার্কসার্কাস ময়দানের কাছ থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোথায় জাল নোট পাচারের ছক কষা হয়েছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আর এই তদন্তেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, বিহার, পাঞ্জাব বা দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দারা কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে মিলিয়ে ‘কোড’ ব্যবহার করে ছড়িয়ে নিচ্ছে এই নোট।
প্র্রতিদিনই নতুন-নতুন ছকে এই কারবার চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। ভারত-বাংলাদেশ বা ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকার নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলকে ব্যবহার করেই জাঁকিয়ে বসতে চায় এই কারবারিরা। এমন এলাকায় নিজেদের মধ্যে কথা বলছে যেখানে ভারতীয় ফোনের ‘টাওয়ার’ নেই। বাংলাদেশের বা পাক এলাকার ক্ষেত্রেও ঠিক এমনভাবেই টাওয়ার-লোকেশনকে গুরুত্ব দিচ্ছে ওরা। ফলে ফোন ট্যাপ করেও অনেক সময়ই মিলছে না হদিশ। আগে কলকাতা এদের ‘টার্গেট’ থাকলেও পরিবর্তিত সময়ে বদলে গিয়েছে এলাকা।
[আরও পড়ুন : CAA বিরোধিতায় এবার পথে রূপান্তরকামী-তৃতীয় লিঙ্গ, স্লোগান তুলে মিছিলে অংশগ্রহণ]
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সূত্রে খবর, কলকাতাকে বাদ দিয়ে এখন তামিলনাড়ু বা তেলেঙ্গানার মতো দক্ষিণ ভারতের এলাকা এবং পাঞ্জাব-হরিয়ানায় বাড়ছে এই কারবার। শুধু তাই নয়, এই কারবারে মুনাফা বাড়ায় লোকবল পেতেও সমস্যা হচ্ছে না। এক তদন্তকারী অফিসার জানালেন, একশো টাকার জাল নোট বিক্রি করে ৪০ টাকা অবধি মিলছে। ফলে এভাবেই আয়ের রাস্তা বেছে নিচ্ছে ওরা। কারবারের সঙ্গে যুক্তরা অনেকেই বিহার, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। অনেকেই আবার টাকা নিতে চলে যায় কারবারির কাছে। তবে পুলিশ ও বিএসএফ-কে ফাঁকি দিতে ‘কোড’ ব্যবহারেও বদল আনছে ওরা। জাল নোট নিয়ে একটি রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে বা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট কোড ব্যবহার করে। এইসব কোড সবটাই কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে বা বস্ত্র-ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কোড। এই সব কোডের মধ্যে রয়েছে, থান, ধুতি, ধুতিতে পাড় প্রভৃতি। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ফোনের অন্যপ্রান্তে থাকা ব্যক্তি ধরে নিতে পারেন কত টাকার নোট রয়েছে এবং সংখ্যায় কত। বাংলাদেশের চাপাই নবাবগঞ্জ দিয়ে জাল বিছিয়ে থাকে এরা। মালদহ ও মুর্শিদাবাদে চলে আসছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
[আরও পড়ুন : ‘এখনই ভোট ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়ুন’, ক্লাসে তৃণমূল কাউন্সিলরদের পাঠ দিলেন পিকে]
উদ্ধার হওয়া সাত লক্ষ টাকার মধ্যে দু’হাজার টাকার নোটের সংখ্যা ১০০, ৫০০ টাকার নোট এক হাজার। মালদহকে ভিত্তি করেই এই কারবারি কারবার চালাত। বেলা ১১.৪০টা নাগাদ পার্কসার্কাস ময়দানের কাছ থেকে এই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের পুলিশ। ৪২ বছরের এই ব্যক্তির বাড়ি মালদহের কালিয়াচকে। নাম, কৃষ্ণ মণ্ডল। আজ তাকে আদালতে তোলা হয়। এছাড়া গত নভেম্বরে ময়দানের গোষ্ঠ পাল সরণি থেকে ধরা পড়ে পাঁচ লক্ষ টাকার জাল নোট সমেত বিকাশ দাস। এর বাড়ি বিহারের সাসারামে। সেপ্টেম্বরে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা সমেত ধরা পড়েছিল তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমের বাসিন্দা ভি রাজু।
The post কাপড়ের ব্যবসার ‘কোড’ ব্যবহার করে জাল নোটের কারবার, উদ্ধার নগদ ৭ লক্ষ appeared first on Sangbad Pratidin.