গৌতম ব্রহ্ম: খুব বেশি হলে ৩০ সেকেন্ড। তাতেই বাজিমাত। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর থেকে আদায় করে নিলেন ‘স্টেট কাউন্সিল ফর স্কুল গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস’ গঠনের আশ্বাস। আদায় করে নিলেন মুলতুবি হয়ে থাকা স্কুল স্তরের ‘স্টেট মিট’ আয়োজনের আশ্বাসও।
শুভেন্দু ঘোষ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) ফলতা থানা এলাকার হরিণডাঙা হাই স্কুলের শারীরশিক্ষার মাস্টারমশাই। গত সোমবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষারত্ন পুরস্কারে সম্মানীত হন। মুখ্যমন্ত্রী যে দশজন শিক্ষকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তার মধ্যে শুভেন্দুবাবু অন্যতম। বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গনে পুরস্কার নেওয়ার মঞ্চে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) সঙ্গে কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেখা। সেটাই কাজে লাগিয়েছেন নদাখালির চাউলখোলার বাসিন্দা। ‘স্টেট কাউন্সিল ফর স্কুল গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস’-এর কয়েকজন মাথা পদত্যাগ করায় কাউন্সিল ভেঙে গিয়েছিল। ফলে, স্কুল স্তরের খেলাধুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। চলতি বছরের মার্চে ‘স্টেট মিট’ও করা যায়নি। যন্ত্রণা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া পর্ষদের সম্পাদক শুভেন্দুবাবুকে। তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে পুনরায় কাউন্সিলকে সচল করার অনুরোধ জানান। পুনরায় স্টেট মিট চালুর আবেদনও করেন। তাতেই কাজ হয়। শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সবটা শুনে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে দ্রুত কাউন্সিল গঠন করে ‘স্টেট মিট’ চালুর নির্দেশ দেন।’’
[আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে স্কুলপড়ুয়ার ঘনিষ্ঠতাই রাগের কারণ! বাগুইআটি জোড়া খুন কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য]
মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি নিজের আবেদন পৌঁছে দিতে পেরে বেজায় তৃপ্ত শুভেন্দুবাবু। জানালেন, “আগে থেকে কিছু ভেবে যাইনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সহজ ব্যবহারে সাহস পেয়ে কথাটা উত্থাপন করি। উনি খুব মন দিয়ে শুনলেন। এবং সঙ্গে সঙ্গেই পুনরায় কাউন্সিল গঠন করে স্কুল স্তরের প্রতিযোগিতা চালুর নির্দেশ দিলেন। আশা করি দ্রুত সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। ফের স্কুলগুলি প্রতিযোগিতামূলক খেলাধূলোয় অংশ নেবে। এটা শিক্ষারত্নের থেকেও বড় পুরস্কার আমার কাছে।’’
জানা গিয়েছে, স্টেট কাউন্সিলের সম্পাদক ছিলেন উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দিলীপবাবু ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তারপর থেকেই অচল হয়ে পড়েছিল কাউন্সিল। মুখ্যমন্ত্রীর বরাবরই খেলাধুলোর প্রতি বাড়তি নজর। তাই শুভেন্দুবাবুর কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। শুভেন্দুবাবুকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত জেলার ক্রীড়ামহল। সুব্রত কাপে বাঁশি হাতে সেরা রেফারি হয়েছিলেন শুভেন্দুবাবু। যশ, আমফানের সময় কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেন। কোভিডের সময়ও অনলাইনে জেলার শারীর শিক্ষার শিক্ষকদের খেলাধূলার নিয়মকানুন নিয়ে ক্লাস করিয়েছেন। এবার পুরস্কারের মঞ্চকেও কাজে লাগালেন রেফারি কাম শিক্ষক শুভেন্দুবাবু।