shono
Advertisement

কৃষি আইন প্রত্যাহারে বিরোধীদের লাভের থেকে ক্ষতিই বেশি! রয়েছে একাধিক কারণ

মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তে আদৌ উচ্ছ্বাসের কারণ আছে বিরোধীদের?
Posted: 05:06 PM Nov 19, 2021Updated: 05:18 PM Nov 19, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক বছরের বেশি সময়ের লাগাতার রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর ‘অচলায়তন’ সরিয়ে ফেলেছেন দেশের অন্নদাতারা। সংসদে সংখ্যার বলে পাশ করানো তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) নিজে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে এই আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিয়েছেন। আপাত দৃষ্টিতে মোদির এই সিদ্ধান্তকে পিছু হটা হিসাবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। কৃষকরা অবশ্য সতর্ক। তাঁরা বলছেন, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। কিন্তু মোদির এই পিছিয়ে আসায় সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত বিরোধী শিবির। তাঁরা এমন ভাব করছেন, যেন তাঁদের আন্দোলনের জেরেই পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে সরকার। এই জয় যেন তাঁদেরই। কিন্তু একটু ভেবে দেখলেই বোঝা যাবে, তেমনটা নয়। কৃষকদের এই জয়ে উচ্ছ্বাস না করে বরং বিরোধীদের উচিত শিক্ষা নেওয়া। যার অনেকগুলি কারণ আছে।

Advertisement

প্রথমত, কৃষি আইন (Farm Law) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত যদি জয় হিসাবে দেখা হয়, তাহলে সেই জয় শুধুই কৃষকদের। এই জয় স্বতঃস্ফূর্তভাবে উঠে আসা গণ আন্দোলনের। কৃষকদের আন্দোলনের এই ‘সুফল’কে নিজেদের বলে দাবি করার নৈতিক অধিকার বিরোধীদের অন্তত থাকতে পারে না। কারণ, এই কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য যে পরিমাণ সংঘর্ষ বা আত্মত্যাগ কৃষকরা করেছেন, তার বিন্দুমাত্র কোনও বিরোধী দল করেনি।

[আরও পড়ুন: Farm Law: কৃষি আইন নিয়ে কেন পিছু হটলেন মোদি? রইল সম্ভাব্য পাঁচ কারণ]

দ্বিতীয়ত, কৃষকরা কখনওই তাঁদের আন্দোলনে রাজনীতির রং লাগতে দেননি। কেন্দ্রের বিরোধিতা করলেও সরাসরি কৃষক বিক্ষোভকে কোনও রাজনৈতিক দল হাইজ্যাক করে নিতে পারেনি। বরাবরই স্বাতন্ত্র বজায় রাখতে পেরেছেন কৃষক নেতারা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বিরোধীরা কখনওই এই আন্দোলনের শরিক হতে পারেননি।

তৃতীয়ত, এই জয় বিরোধীদের নয় মানে এটা নয় যে মোদি সরকারের এই আইনের বিরোধিতা করেনি বিরোধীরা। বিরোধীরাও নিজেদের মতো করে এই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। সংসদ (Parliment) অচল করেছে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ হয়নি। কাজটা হল কৃষকদের পথে নেমে আন্দোলন করাতেই। তাই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস না করে শিক্ষা নেওয়া উচিত। বোঝা উচিত, সংসদীয় ব্যবস্থাকে অচল না করে গণ আন্দোলনই নিজেদের দাবি আদায়ের শ্রেষ্ঠ উপায়।

[আরও পড়ুন: কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের, ফিরে দেখা আন্দোলনের সালতামামি]

চতুর্থত, বিরোধীরা যদি মনে করে থাকেন কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে উত্তরপ্রদেশ ভোটের (Uttar Pradesh Election) আগে তাঁরা বাড়তি মাইলেজ পেয়ে গেলেন, তাহলে তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। কারণ, মোদি-শাহ যখন কোনও সিদ্ধান্ত নেন, তখন তাঁর সম্ভাব্য পরিণাম ভেবেই নেন। তাছাড়া, কৃষক বিক্ষোভের জেরে বিজেপির যা হারানোর, ইতিমধ্যেই হারিয়েছে তাঁরা। নতুন করে হারানোর কিছু নেই।

সবশেষে বলা যায়, মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিরোধীদের লাভের থেকে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, এই সিদ্ধান্তের ফলে একসঙ্গে অনেকগুলি অস্ত্র হারালেন বিরোধীরা। যে কৃষক আন্দোলন মোদি-শাহর বিরুদ্ধে বিরোধী শিবিরের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল, সেটা ভোঁতা হয়ে গেল। তাছাড়া, এতদিন ধরে বিরোধীরা মোদিকে ফ্যাসিস্ট, একরোখা, একনায়ক বলে দেগে আসছিলেন, সেই তকমাগুলিও কিন্তু আগের থেকে অনেকটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement