দেবব্রত দাস, খাতড়া: গতবারের থেকে বেশি ধান চাষ হল এবার বাঁকুড়ার খাতড়া মহকুমায়। টানা বৃষ্টির পাশাপাশি মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে সেচখালে জল ছাড়া হয়েছে। তারই ফলে একেবারে শেষ মুহূর্তে ঝোড়ো ব্যাটিং দেখা গেল ধান চারা রোপণের কাজে। ভারী বৃষ্টির অভাবে গত জুলাই মাস পর্যন্ত দক্ষিণ বাঁকুড়ার খাতড়া মহকুমা এলাকায় ধান চারা রোপণের কাজ থমকে গিয়েছিল। জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত খাতড়া মহকুমা এলাকায় মাত্র ২২৪ হেক্টর জমিতে ধান চারা রোপণের কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু আগষ্ট মাসের প্রথম থেকেই টানা বৃষ্টির জেরে দক্ষিণ বাঁকুড়ার চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে খাতড়া মহকুমার আটটি ব্লকে প্রায় ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চারা রোপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। আগস্টের শেষ সপ্তাহে ‘রেকর্ড’ সংখ্যক এক লক্ষ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যা গতবারের থেকে অনেক বেশি। কৃষি দপ্তরের দাবি, আরও ২-৩ দিন ধান চারা রোপনের কাজ চলবে। তাই ধান চাষের পরিমাণ আরও কিছুটা বাড়বে। গত তিন সপ্তাহে একেবারে ঝড়ের গতিতে খাতড়া মহকুমা এলাকায় ধান চারা রোপনের কাজ হয়েছে। ধান চাষে গতবারের লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাওয়ায় খুশি কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরাও। খাতড়া মহকুমা সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) শুভেন্দু হাজরা বলেন, “জুলাই মাস পর্যন্ত খাতড়া মহকুমার ৮ টি ব্লকে ধান চারা রোপনের কাজ ঢিমেতালে হয়েছে। কিন্তু আগস্ট মাসে ছবিটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। ২৭ আগস্ট পর্যন্ত খাতড়া মহকুমায় আমন ও আউশ মিলিয়ে প্রায় এক লক্ষ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। হয়নি।
[আরও পড়ুন: মিটেছে ঘাটতি, বৃষ্টির ধারাপাতে আমন চাষ নিয়ে আশাবাদী কৃষক মহল]
গত বছর খাতড়া মহকুমায় প্রায় ৯৪ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত খাতড়া মহকুমায় গতবারের থেকেও বেশি জমিতে ধান চাষ হয়ে গিয়েছে। যা গতবারের লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশি। আরও কয়েকটা দিনে ধান চাষে জমির পরিমাণ কিছুটা বাড়বে বলে আশাবাদী আমরা।”কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, খাতড়া মহকুমায় এখনও পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চারা রোপণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে রাইপুর ব্লকে ১৯,৯৪৫ হেক্টর, সিমলাপাল ব্লকে ১৭,৬৬০ হেক্টর, সারেঙ্গা ব্লকে ১১,৪৪৯ হেক্টর, তালডাংরা ব্লকে ১৭,৪২৫ হেক্টর, রানিবাঁধ ব্লকে ১১,০৫০ হেক্টর, হিড়বাঁধ ব্লকে ১০,৫১২ হেক্টর, খাতড়া ব্লকে ৯,০২৫ হেক্টর, ইন্দপুর ব্লকে ১৩, ৮৫০ হেক্টর জমিতে ইতিমধ্যে ধান চারা রোপণের কাজ হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ধান চাষ হয়েছে রাইপুর ব্লকে। অন্যদিকে, টানা বৃষ্টির জেরে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধার থেকে সেচখালে জল ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। এই জল চাষিদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। রাইপুরের চাষি মোহিত মণ্ডল, রানিবাঁধের রমেন দুলে বলেন, “জমিতে ধান চারা রোপন করে দিয়েছি। এরপর বৃষ্টি কম হলেও ক্ষতি নেই। কংসাবতী জলাধার থেকে সেচখালে জল মিলছে। জলের এখন অভাব হবে না।”