বাবুল হক,মালদহ: আমবাগান ঘেঁষেই বেআইনিভাবে গজিয়ে উঠেছে ইটভাটা। আর সেই ইটভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে আমের মুকুল। এমনই অভিযোগ তুলে এবার ক্ষোভে ফুঁসছেন মালদহের মানিকচকের আমচাষিরা। যদিও আদালতের আদেশ রয়েছে, গাছে আমের মুকুল গজানোর সময় তিন মাস ইটভাটা বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশের তোয়াক্কা করছেন না কেউই বলে অভিযোগ। এমনকী, জেলা প্রশাসনের কর্তাদেরও বিষয়টি নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলা ভূমিরাজস্ব দপ্তরের আধিকারিকরাও।
আমচাষিদের অভিযোগ, ইটভাটা থেকে তৈরি হওয়া ক্ষতিকারক ধোঁয়া আমের মুকুল নষ্ট করছে। মুকুল ঝরে পড়ছে এবং ধোঁয়ায় পুড়েও যাচ্ছে। আমবাগানের মধ্যে একের পর এক নতুন নতুন ইটভাটা গজিয়ে উঠেছে প্রশাসনের একাংশের মদতে বলে অভিযোগ জেলার আমচাষিদের। মালদহের মানিকচক, সামসি, রতুয়া, ওল্ড মালদহ, কালিয়াচক ও চাঁচোলে বেআইনি ইটভাটা চলছে বলে অভিযোগ। এই মরশুমেই কাঁচা ইট পোড়ানো হয়। আবার এই সময়েই জেলার আমবাগানে মুকুল ফোটে। আমের জেলা মালদহের প্রায় প্রতিটি ব্লকেই আমবাগানের মধ্যে ইটভাটা গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে খুন, পরে মৃতদেহের সঙ্গে ফের যৌনাচার! নৃশংসতার সাক্ষী বাংলাদেশ]
রতুয়ার এক আমচাষি নাসির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মালদহের আমের বিশ্বজুড়ে খ্যাতি রয়েছে। অথচ প্রশাসনের কারও নজর নেই। ইটভাটা চলবে, আর আমচাষ ধ্বংস হবে।” অভিযোগ, এবার জেলায় আমের মুকুল ভাল এসেছে। কিন্তু ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে মুকুল থেকে গুটি তৈরি হচ্ছে না। জেলার আমচাষিরা বলছেন, আবহাওয়া ভাল থাকায় বর্তমানে বাগানগুলিতে ভাল মুকুল এসেছে। কিন্তু ইটভাটার ধোঁয়ার জন্য মুকুল কালো হয়ে ঝরে যাচ্ছে। মুকুল থেকে আমের গুটি তৈরি হতে পারছে না।
বিষয়টি নিয়ে জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের কর্তারা জানান, ইটভাটার ধোঁয়া থেকে সালফার ডাই অক্সাইড নামক ক্ষতিকারক গ্যাস নির্গত হয়। যা আমের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। এই গ্যাসের ফলে আমের গায়ে কালো কালো দাগ পড়ে যায়। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরি বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।”