শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: ঘোর বর্ষাকাল (Rainy season) হলেও জল সংকটে ঘাটাল (Ghatal) মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। যেখানে সবুজ ধানগাছের সমারোহ থাকার কথা, সেখানে খটখটে ধান জমি। আর এই অবস্থায় জলের অভাবে ভরা বর্ষাতেও বিপাকে ঘাটাল মহকুমার কৃষক মহল। পাম্প চালিয়ে জমিতে ধান রোঁয়ার কাজ শুরু করেছেন আমন চাষিরা। কিন্তু যে সময় প্রকৃতির জলেই চাষ হওয়ার কথা, সেসময় কেনই বা কৃত্রিমভাবে জমিতে জলসরবরাহ হবে? উঠছে প্রশ্ন।
কৃষিজমিতে জল সংকটের কথা মেনে নিয়েছেন জেলা কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা। কৃষিদপ্তরের উপ অধিকর্তা দুলাল দাশ অধিকারী অবশ্য বলেন, ”এই সংকট কেটে যাবে। সবেমাত্র ধান চাষ শুরু হয়েছে। এখনও অনেক সময় পাবেন কৃষকরা।” জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি বিধায়ক অজিত মাইতির আশ্বাস, ”এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের কথা বলব।” কেউ কেউ জমিতে পাম্প চালিয়ে ধান রোঁয়ার কাজ শুরু করলেও জলের অভাবে অনেকেই তা শুরু করতে পারেননি। আবার কোথাও কোথাও জলকাদায় ধান রুইয়ে দিয়ে বিপাকে পড়েছেন কেউ কেউ। শুকিয়ে কাঠ সেই জমি।
[আরও পড়ুন: উন্নতমানের ধান উৎপাদনে Genetics-এর প্রয়োগ, আমেরিকাকে পথ দেখাবেন বর্ধমানের তরুণ]
এই অবস্থায় খরচের বহরও বাড়ছে। বীজতলায় জল না থাকায় অন্য জমিতে রোঁয়ার কাজ শুরু করতে পারছেন না। চন্দ্রকোনার আমন ধান চাষি কানাই ঘোষ, সত্য নায়েক, বিশ্বনাথ পাত্ররা বলেন, ”পরিমাণমতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ঠিক সময়ে ধান রোঁয়ার কাজ করা যাচ্ছে না। ফলে বীজতলাতেই চারা পড়ে রয়েছে। আবার জলের অভাবে চাষের জমি তৈরি করা যাচ্ছে না। বেশ বিপাকে পড়ে গিয়েছি। দাসপুরের গৌরা গ্রামের আমন চাষি রঘুনাথ জানা, রাম সাউ, ধরণী মেটা বলেন, ”অন্যের পাম্প চালিয়ে জমিতে জল নিলে খরচের বহর অনেক বেড়ে যাবে। জলের অভাবে ধান রোয়ার কাজ শুরুই করা যাচ্ছে না। বীজতলাও শুকিয়ে যাচ্ছে। দাসপুরের রবিদাসপুর গ্রামের ধান চাষি সুভাষ কাপাস বলেন, ”কাঁসাই নদী কাটাইয়ের কাজ চলছে। ফলে নদীতে জল নেই। বৃষ্টিপাত পর্যাপ্ত হচ্ছে না। বেশ বিপাকে পড়ে গিয়েছি। প্রশাসন থেকে বিকল্প কিছু করুক। তা নাহলে চাষই করা যাবে না।” পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের আশায় দিন গুনছেন ঘাটাল মহকুমার আমন ধান চাষিরা।