নিজস্ব সংবাদদাতা, লালবাগ: ধান, পাটের বিকল্প হিসেবে শুরু হয়েছে গাঁদা ফুলের চাষ। যাতে আর্থিক লাভের মুখ দেখেছে মুর্শিদাবাদ থানার কুড়মিতলার কৃষকরা। তাঁদের দাবি, সরকারি সাহায্য পেলে গাঁদা চাষ করেও আরও মুনাফা করতে পারবেন তাঁরা।
বছর পাঁচেক আগেও কুড়মিতলার ঠাকুরপাড়া মাঠের বিস্তীর্ণ জমিতে কৃষকরা ধান এবং পাট চাষ করতেন। কিন্তু বর্তমানে ওই এলাকার একটি বড় অংশের জমিতে এখন গাঁদা চাষ করছেন চাষিরা। এবং বাড়তি লাভের মুখও দেখছেন তাঁরা। অক্টোবর মাসের শুরুতে গাঁদার বীজ জমিতে ছড়ানো হয়। জমিতে বীজ ছড়ানোর তিন মাস পরেই ফুল আসে। এছাড়াও ডিসেম্বর মাসের শেষে আরেক প্রজাতির গাঁদা চারা জমিতে লাগানো হয়। ফুল চাষে সার কীটনাশকের পাশাপাশি নিয়ম করে সেচ দিলে ফলন ভাল হয়। একটি গাঁদা গাছ থেকে চার মাস ফুল পাওয়া যায়।
[আরও পড়ুন: বন্ধ্যা জমিতে ফলছে আপেল-আম, রাজ্যের কৃষকদের চাষের নয়া দিশা দেখাচ্ছে দুর্গাপুর]
এবছর আবহাওয়া ভাল থাকায় জমিতে যেমন ফুলের পরিমাণ বেড়েছে, তেমনই বাজারদরও ভাল থাকায় চাষিদের মধ্যে উৎসাহ লক্ষ করা গিয়েছে। এই ব্যাপারে ফুল চাষি সুধন্য রায় বলেন, “এবার প্রতি কেজি ফুল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গাঁদার চাহিদাও ভাল আছে।” এলাকায় ফুল চাষ হওয়ায় বাসিন্দাদের, মূলত মহিলাদের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রতি কেজি ফুলে তুললে পারিশ্রমিক হিসাবে তাঁদের দেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। এই ব্যাপারে রীতা কর্মকার, গীতা দাস বলেন, “এতদিন বাড়িতে বসে সময় কাটাতাম। এখন একবেলা ফুল তুলে সংসারে বাড়তি রোজগার করতে পারছি।”
এই ফুলের চাষ করে ছেলে মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করিয়েছেন ফুল চাষি সুরেন রায়, গোবিন্দ মণ্ডল। তাঁদের মুখে অবশ্য ক্ষোভের কথাও শোনা গিয়েছে। তাঁরা বলেন, “বিভিন্ন চাষ করে সরকারের কাছ থেকে সার, কীটনাশক পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে কোনও রকম সাহায্য পাইনি। অথচ সরকারি সাহায্য পেলে আমরাও গাঁদা চাষ করে সুখের সংসার গড়তে পারতাম।”