বাড়ির সবজি বাগানে কীভাবে সার প্রয়োগ করবেন? জেনে নিন নিয়মকানুন

05:52 PM Mar 02, 2023 |
Advertisement

বাজার থেকে সবজি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘বিষযুক্ত’ হওয়ার সম্ভাবনা। সার ও কীটনাশক ব্যবহারও এর কারণ। তাই কিচেন গার্ডেনে জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে বিষমুক্ত ফলন পাওয়া যায়। পাশাপাশি, বেশি দামে বাজার থেকে সবজি কেনার প্রয়োজন পড়বে না। সংসার খরচে সাশ্রয় হবে অনেকটাই। বাজারে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে সবজি বাজারজাত করা যেতে পারে। একই সঙ্গে সবজি বাগানে ফলের গাছও লাগানো যায়। লিখেছেন দুর্গাপুরের সহ-উদ্যানপালন আধিকারিক ড. দেবাশিস মান্না। পড়ুন শেষ পর্ব।

Advertisement

সবজি চাষের জায়গাটিকে দু’ভাগে ভাগ করা দরকার। এক অংশ উত্তর দিকে এবং আর এক অংশ দক্ষিণ দিকে। উত্তর দিকের অংশে স্থায়ী গাছ যথা পেঁপে, কলা, পাতিলেবু সজনে ইত্যাদি লাগাতে হবে। এছাড়া ওই অংশের এক কোণে জঞ্জাল সার / পাতা পচা সার করার জন্য গর্ত খোঁড়া হয় এবং অন্য কোণে কেঁচোসার তৈরির ঘর করা হয়। দক্ষিণ দিকের অংশটিকে / মূল জমিটিকে কয়েকটি প্লটে ভাগ করে নিয়ে জৈবসার ও পরিমিত রাসায়নিক সার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে প্রথাক্রমে বিভিন্ন সময় প্রয়োজনীয় সবজি চাষ করা হয়।
৩) লতানো সবজি (লাউ, কুমড়ো, শশা, উচ্ছে, ঝিঙে, চিচিঙ্গা ইত্যাদি) বাগানের চারিদিকে বেড়া করে লাগাতে হবে।
৪) মূল জমির বিভিন্ন খণ্ডের মধ্যবর্তী আলে মূল জাতীয় সবজি (মূলো, গাজর, বিট, কচু ইত্যাদি) লাগাতে হবে।
৫) বিভিন্ন সবজি পরপর এমনভাবে লাগাতে হবে, যেন সবজি চাষের জন্য নির্দিষ্ট জমির ভাগগুলি কোনও সময় খালি পড়ে না থাকে। নিবিড় শস্য পর্যায় অনুসরণ করে সবজি চাষ করতে হবে।

[আরও পড়ুন: উত্তরের চা বলয়ে ‘রেড স্পাইডারে’র হামলা, ৩০% উৎপাদন কমার আশঙ্কা]

৬) বাগান থেকে রোগমুক্ত ফলন পেতে ভাল মানের বীজ ব্যবহার করতে হবে। বীজবপন করার আগে বীজ শোধন অবশ্যই করে নিতে হবে।
৭) যে সমস্ত সবজির চারা তৈরি করে নিতে হয় (টমেটো, লঙ্কা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি ইত্যাদি) সেগুলির জন্য আলোছায়া পড়ে এমন জমির এক কোণ ধরে ৬ ইঞ্চি উঁচু করে বীজতলা তৈরি করে নিতে হবে। উক্ত জমির মাটিকেও শোধন করে নিতে হবে।
৮) একই খণ্ডে একই সবজি বারবার চাষ না করে, বিভিন্ন রকম সবজি চাষ করতে হবে। এতে বিভিন্ন রোগপোকার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সিম্বগোত্রীয় উদ্ভিদ চাষ করলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
৯) ঘরোয়া পদ্ধতিতে পোকা দমনের জন্য, কেরোসিন মিশ্রিত ছাই গাছে ছেটাতে হবে। জাবপোকা হাতে মারতে হবে। শুঁয়োপোকা বেছে তুলে ফেলতে হবে। সাবান জল স্প্রে করলে উপকার পাওয়া যায়। নিমতেল/ নিমজাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
১০) উত্তর দিকের কোণে কম্পোস্ট গর্ত তৈরি করে, রান্নাঘরের বা বাড়ির আবর্জনা, ছাই, সবজির খোসা, গোবর, গোমূত্র ইত্যাদি ফেলতে হবে। এই গর্তের পাশে লতাজাতীয় সবজি লাগিয়ে গর্তের উপর মাচা
তৈরি করলে আবর্জনা সারের গর্তটি ছায়ায় ও দৃষ্টির আড়ালে থাকবে।

Advertising
Advertising

অন‌্যান‌্য পরিচর্যা:
সার প্রয়োগের নিয়মাবলি (প্রতি শতকে)
ইউরিয়া: ৪০০ গ্রাম
গোবর সার: ৮০-১০০ কেজি
সিঙ্গল সুপার ফসফেট: ১০ কেজি  
কেঁচো সার: ৩০ কেজি
মিউরিয়েট অফ পটাশ: ২৫০ গ্রাম

[আরও পড়ুন: আমের জেলায় শুরু নয়া ইনিংস, এবার জাপানের ‘মিয়াজাকি’ ফলাবে মালদহ]

Advertisement
Next