স্বাদ ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। আচার, চাটনি, জ্যাম, জেলি ইত্যাদিতে বহুল ব্যবহৃত হয়। এর তেলেরও বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। রয়েছে বিদেশে রফতানিরও সুযোগ। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে জলপাই চাষ করা যেতে পারে। লিখেছেন নেওটিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিজ্ঞান বিভাগের টিচিং অ্যাসোসিয়েট শুভদীপ হালদার।
জলপাই আমাদের দেশের একটি সুপরিচিত এবং মুখরোচক ফল। এর চাটনি বা আচার খেতে কম বেশী সকলেরই ভালো লাগে। শীতকালজুড়ে এই ফল বেশি দেখতে পাওয়া যায় এবং কাঁচাপাকা দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়। জলপাইয়ের বহুমুখী ব্যবহার দেখা গেলেও আচার, চাটনি, জ্যাম, জেলি ইত্যাদি বহুল প্রচলিত দ্রব্য। পাকা ফলে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত তেল থাকে। এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন- এ, ভিটামিন-সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। বাঙালির জলপাই প্রীতি শুধুমাত্র আচার চাটনি বা স্বাস্থ্যগুণেই আটকে নেই। বরং তা সাহিত্যেও স্থান করে নিয়েছে। যেমন সুকুমার রায়ের অবাক জলপান নাটকে এর উল্লেখ পাওয়া যায়।
উদ্ভিদ তত্ত্ব:
এটি একটি চিরসবুজ মাঝারি গাছ যা ১৫-২০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পাতা মূলত সরল, লম্বাটে, উপবৃত্তাকার উপরিভাগ মসৃণ ও উজ্জ্বল; পত্রফলক অগ্রভাগে সূচালো এবং গোড়ার দিকে গোলাকার। গাছের বাকল ধূসর বা কালো রঙের হয়। সাদা রঙের ছোট ছোট ফুল দেখতে পাওয়া যায়। ফল সবুজ ডিম্বাকার এবং লম্বায় ৩-৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। পাকা ফল তৈলাক্ত শাঁসযুক্ত হয়ে থাকে। যদিও জলপাই ভূমধ্যসাগরীয় আবহাওয়ার ফল। কিন্তু উষ্ণ ও অবউষ্ণ আবহাওয়তেও ভাল ফলন দেয়।
জলপাই মূলত দুই প্রকার: ১) আরবীয় জলপাই যা জয়তুন নামে পরিচিত এই জাত প্রধানত মরুভূমির দেশ সমূহে বেশি দেখা যায় এবং তেল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ২) ভারতীয় জাত বা ইন্ডিয়ান অলিভ যা আমাদের উপমহাদেশীয় দেশগুলিতে বেশি দেখা যায় এবং আচার, চাটনি বা ফল হিসেবে বেশি খাওয়া হয়।
বিস্তার:
পশ্চিম এশীয় দেশ অর্থাৎ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলকে জলপাইয়ের আদি বাসস্থান হিসেবে ধরা হয়। খ্রীষ্টের জন্মের পূর্বেই এই ফল পশ্চিম এশিয়া থেকে দক্ষিণে ইউরোপে বিস্তার লাভ করে। পরে এর স্বাস্থ্যগুণ একে সারা বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়। বর্তমানে এশিয়া ও ইউরোপ জুড়ে চাষের বিশেষ সমাদর দেখা যায়। আমাদের দেশের সর্বত্র, বসত বাড়ির আশেপাশে এই গাছ বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্য উপকারিতা:
জলপাইয়ের বহুমুখী ঔষধি গুণ যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে অন্যান্য ব্যবহারও।
১) প্রতিদিন একটি করে জলপাই খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব পাশাপাশি এটি আলসারের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
২) জলপাইয়ের একটি মূল উপাদান হল ভিটামিন- এ। যা কোষের অস্বাভাবিক গঠনে বাধা দান করে। ফলে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। কালো জলপাইয়ের তেলে বেশি পরিমাণ ভিটামিন-ই থাকে। যা ফ্রিরেডিকেল ধ্বংস করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৩) জলপাইয়ের আর একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য উপাদান হল ভিটামিন -সি। যা সর্দি-কাশির মত রোগকে দমন করে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৪) এই ভিটামিন -সি ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখতে খুবই কার্যকরী।
৫) অলিভ ওয়েল হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি অনেকটা কমিয়ে দিতে সক্ষম।
৬) অলিভ ওয়েলে উপস্থিত ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের গোড়া মজবুত করে। ফলে চুল পড়ার সমস্যা কমে যায়।
৭) নিয়মিত জলপাই সেবন পিত্ত রসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
৮) বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে জলপাই অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৯) জলপাই রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কার্যকারী।
১০) পাশাপাশি জলপাই ফাইবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন ভিটামিন-এ এর একটি সহজলভ্য উৎস।
অন্যান্য ব্যবহার:
১) এটি একটি টকজাতীয় ফল তাই আচার ও চাটনি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
২) কাঁচা ও পাকা ফল এমনিতেই খাওয়া যায়।
৩) অনেকেই ডাল বা তরকারিতে ও জলপাই ব্যবহার করেন।
৪) জলপাই কাঠের আসবাবপত্র তুলনায় অনেক কম দামি।
৫) এছাড়াও এই কাঠ বিভিন্ন গৃহ সামগ্রী তৈরিতে ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
চারা তৈরি:
জলপাই খুব সহজেই বীজের দ্বারা চারা তৈরি করা যায়। তবে বীজের আবরণ অনেক শক্ত, তাই বপনের আগে বীজের সুপ্তাবস্থা ভাগানো (scarifications) দরকার। বীজ লাগানোর আগে ২৪-৩০ ঘন্টা পর্যন্ত জলে ভিজিয়ে রাখা উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার কলম পদ্ধতিতে চারা তৈরি করা যায়। চোখ কলম, গুটি কলম ও শাখা কলম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
জমি নির্বাচন:
জলপাই জমা জল একদম সহ্য করতে পারে না, তাই বন্যার জল জমে না এমন উঁচু বা মাঝারি জমি নির্বাচন করতে হবে। এছাড়াও জল নিকাশি ব্যবস্থার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। চারা লাগানোর আগে জমির আগাছা ভালোভাবে পরিষ্কার করে হালকা চাষ দিয়ে নিতে হবে।
রোপণের সময়:
জলপাই চারা লাগানোর সর্বোৎকৃষ্ট সময় হল মে-অক্টোবর মাস। তবে জমিতে জল সেচের সুবিধা থাকলে বছরের যেকোনো সময় চারা রোপণ করা যায়।
গর্ত তৈরি:
চারা রোপণের আগে গর্ত (পিট) তৈরি করে নিতে হবে। মোটামুটি ৮-১০ মিটার দূরে দূরে গর্ত খুঁড়তে হবে। গর্তের আকার মোটামুটি ৯০ সেন্টিমিটার x ৯০ সেন্টিমিটার x ৯০সেন্টিমিটার হওয়া উচিত। গর্ত করার সময় উপরের অর্ধেক মাটি একদিকে ও নিচের অর্ধেক মাটি বিপরীত দিকে রাখতে হবে। এরপর গত খোলা অবস্থায় রেখে ১০-১৫ দিন ভালোভাবে রোদ খাইয়ে নিতে হবে যাতে কোন প্রকার রোগ জীবাণু না থাকে। গর্ত ভরাট করার সাত দিন আগে গর্ত প্রতি ১০-১৫ কেজি গোবর সার, ২৫০-৩০০ গ্রাম পটাশ, ৩০০-৪০০ গ্রাম এসএসপি, ২০০ গ্রাম জিপসাম এবং ৫০ গ্রাম দস্তা সার মাটির সাথে ভালো করে মিশাতে হবে। এরপর উপরের ভাগের মাটি প্রথমে এবং নিচের ভাগের মাটি শেষে দিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে। মাটিতে রস কম থাকলে সেচের ব্যবস্থা করা উচিত।
[আরও পড়ুন: এবার পুকুর থেকেই মিলবে ইলিশ, গ্রামগঞ্জে রুপোলি শস্য চাষের নয়া উদ্যোগ নবান্নের]
চারা রোপন ও পরিচর্যা:
গর্ত ভরতির ৭-১০ দিন পর চারাগুলোকে গর্তের ঠিক মাঝখানে বসাতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে চারার গোড়া যেন কোনওভাবে আঘাতপ্রাপ্ত না হয় এবং গাছ সোজা থাকে। ছোট চারার চারদিকে অবশ্যই বেড়া দিতে হবে। চারা রোপণের পর কয়েকদিন পর পর জল দিতে হবে। তারপর এক দুদিন পর পর জল দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতেই চলবে।
সার প্রয়োগ:
যদিও আমাদের রাজ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জলপাই চাষ তেমন প্রচলিত নয়, তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভাল ফলন চাইলে অবশ্যই প্রতি বছরের নিয়ম মেনে সার প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি। দুপুরবেলা গাছের ছায়া যতটুকু জায়গা জুড়ে পড়বে সেই ছায়া বরাবর কোদাল দিয়ে গাছের চারদিকে মাটি খুঁড়ে রিং বানাতে হবে। তারপর সেই মাটিতে ভালভাবে সার মিশিয়ে জল দিতে হবে। চারার বয়স বাড়ার সাথে সাথে সার প্রয়োগের মাত্রা বাড়াতে হবে।
সার সমান প্রয়োগ তিনটি কিস্তিতে করা দরকার। প্রথমবার বর্ষার ঠিক আগে(বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য) মাসে, দ্বিতীয়বার বর্ষার শেষে ও তৃতীয়বার শীতের শেষে(মাঘ-ফাল্গুন মাসে) ফল সংগ্রহের পরে।
জলসেচ:
এই গাছ খরা ও শুকনো আবহাওয়ার সাথে যথেষ্ট মানানসই। তাই গাছের বয়স, অবস্থা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বিচার করে জল সেচের পরিমাণে নির্ধারণ করতে হবে। গ্রীষ্মকালে জলের চাহিদা একটু বেশি থাকে তাই দু-তিন সপ্তাহ পর পর জল দেওয়ার ব্যবস্থা রাখলে ভাল হয়। তুলনায় শীতকালে জলের চাহিদা অনেক কম, এই সময় পাঁচ থেকে ছয় সপ্তাহ পর পর জল দিলেই চলবে। ফল ধরার পর কমপক্ষে দুবার সেচ দিতে হবে। জলসেচের পাশাপাশি জমির জল নিকাশি ব্যবস্থার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে কারণ গাছের গোড়ায় জল জমলে গাছ মরে যেতে পারে।
রোগ -পোকা:
এই গাছে রোগ- পোকার প্রদুর্ভাব তুলনায় অনেক কম। তবুও রোগ বা পোকা আক্রমণ থেকে বাঁচতে-
১) নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।
২) ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিন।
৩) পরিষ্কার করার পর ছত্রাক নাশক ও কীটনাশক পুরো গাছে ভালভাবে স্প্রে করুন।
[আরও পড়ুন: কৃষিজমির পরিচর্যায় রাসায়নিক সার নয়, রান্নাঘরের ফেলে দেওয়া সামগ্রীতেই লুকিয়ে পুষ্টি]
জলপাইয়ের পাতা পোড়া রোগ:
এই রোগে আক্রান্ত হলে পাতায় প্রথমে হলুদ দাগ হয় যা পরে বাদামী রংয়ের হয়ে থাকে এবং পাতা শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত ডাল বা পাতা দেখা মাত্র অপসারণ করতে হবে। বেশি আক্রমণ হলে ডাইথেন এম ৪৫ ২ গ্রাম প্রতি লিটার হারে জলে মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে।
জলপাইয়ের স্ক্যাব বা দাদ রোগ
এই রোগের আক্রমণে ফলের গায়ে ছোট বা মাঝারি আকারের খসখসে বাদামী বা ধূসর দাগ পড়ে। গাছের পাতা শুকনো থাকা আবস্থায় বাগানের পরিচর্যা করা ও বাগান পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে কার্বেন্ডাজিম বা ম্যানকোজেব ২ গ্রাম প্রতি লিটার হারে জলে মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ৩-৪ বার স্প্রে করা যেতে পারে।
জাব পোকা:
সবুজাভ হলুদ রঙের ছোট ছোট পোকা কচি পাতা, ডগা ও কচি ফুল – ফল থেকে রস চুষে খায় এবং এক ধরনের মিষ্টি রস নিঃসরণ করে। এর ফলে শুটি মোল্ড ছত্রাকের আক্রমণ ঘটে এবং পাতায় কালো আবরণ দেখা যায়। অল্প আক্রমণ হলে পরভোজী পোকা যেমন : লেডিবার্ডবিটল লালন করে বা ডিটারজেন্ট জলে মিশিয়ে স্প্রে করে দমন করা যেতে পারে। গাছ প্রতি ৫০ টির বেশি পোকার আক্রমণ হলে এডমেয়ার ০.৫ মিলি / লিটার বা ডাইমিথয়েট ৩০% ই. সি. ২ মিলি /লিটার হারে জলে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ফল ছিদ্রকারী পোকা:
এই পোকা ফল ছিদ্র করে ফলের ভিতরে ঢুকে ফলের মাংসল অংশ খেতে থাকে এবং ফল খাবার অনুপযোগী হয়ে যায়। নষ্ট ফল বাগান থেকে অপসারণ করতে হবে। টাফগার ২ মি.লি. / লিটার বা ট্রায়াজোফস ৪০% ই. সি. ১ মিলি / লিটার হারে জলে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে যেতে পারে।
আঁশ পোকা:
এটি গাছের গুঁড়ি, ডাল ও পত্রপল্লবের উপর বেশি দেখা যায়। অধিক সংক্রমণের ফলে পাতা হলুদ হয়ে ঝিমিয়ে পড়ে এমনকী পাতা ঝরেও যেতে পারে। ফল বিবর্ণ হতে পারে এবং অনেক সময় অকালে ফল ঝরে যায়। বসন্তকালে পরজীবী বোলতা যেমন এফিটিস ব্যাবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও নিম তেল স্প্রে খুবই ভাল ফল দেয় ।
ফলন:
৪-৫ বছর বয়সি গাছ ফল দিতে শুরু করে, কিন্তু গাছের বয়স ৮-১০ বছর হবার পরেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভাল ফলন পাওয়া যায়। মার্চ- এপ্রিল মাস থেকে জলপাই গাছের ফুল আসতে শুরু করে এবং ফল পুষ্ট হতে মোটামুটি তিন-চার মাস সময় লাগে। ভালভাবে পরিচর্যা করলে বছরে একটি গাছে প্রায় সাত- আটবার ফল ধরে। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছ বছরে ২০০-২৫০ কেজি ফল দিতে পারে।
ফল সংগ্রহ:
জলপাই কাঁচা ও পাকা উভয় সময় সবুজ রঙের হয়ে থাকে তাই ফল সংগ্রহের সময় ফলের আকার-আকৃতি দেখে বিবেচনা করতে হবে। ফল সংগ্রহের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন গাছ থেকে মাটিতে না পড়ে তাহলে ফল ফেটে যাবে এবং বাজারে তার গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবে। সবথেকে ভাল হয় গাছের তলায় জাল বিছিয়ে গাছসহ বা শাখায় ঝাঁকুনি দিয়ে ফল সংগ্রহ করলে।
উপসংহার:
জলপাইয়ের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য গুণ সারা বিশ্বে এখন প্রতিষ্ঠিত। জলপাই তার নিজ গুণে স্বাস্থ্যসচেতন বহু মানুষের রান্নাঘর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। তবে আমাদের দেশে এখনও জলপাই চাষের তেমন প্রসার দেখা যায় না। গ্রামাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু কিছু গাছ দেখা যায়। এই গাছে রোগ- পোকার তেমন আক্রমণ হয় না। পাশাপাশি, আমাদের আবহাওয়া ও মাটিতে খুব সহজেই বেড়ে ওঠে। ফলে কম পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। তাই অল্প খরচে চাষ করে চাষি ভাইরা অধিক লাভের মুখ দেখতে পারবেন। পরিবার ও দেশের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ফল দেশের বাইরে রফতানি পর্যন্ত করা যেতে পারে। ফলে চাষি ভাইরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য এটিকে একটি বিকল্প চাষ হিসেবে বেছে নিতে পারেন। বিশ্ববাজারের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা চাষিদের এই পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল চাষ করতে অচিরেই আকৃষ্ট করবে বলেই মনে করি।