অভিষেক চৌধুরী, কালনা: পাকিস্তান-আফগানিস্তানের আম এখন পূর্বস্থলীতে! সেইসব আমের ভরপুর স্বাদ-গন্ধেই মন ভরিয়েই চলে যেতে হবে এমন নয়, আমগাছের চারাও মিলবে এখন পূর্বস্থলীতে। শুধু পাকিস্তান-আফগানিস্তানই নয়, পূর্বস্থলীতে রয়েছে বাংলাদেশ, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো বিভিন্ন দেশের বিশ্বজোড়া খ্যাতিসম্পন্ন সব আমগাছ। পূর্বস্থলীর স্টেশন সংলগ্ন এলাকার এক নার্সারির কয়েক বছরের বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছের সংগ্রহ ও পরীক্ষানিরীক্ষার ফল এটি। বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি আমগাছে যেমন এখানকার মাটিতে আম ফলতে শুরু করেছে, তেমনই এসব গাছের চাহিদাও এখন তুঙ্গে। শুধু দেশি আমেই নয়, বিদেশি আমেও মন মজেছে আমবাঙালির। বর্ষা শুরুর আগেই এসব গাছের চারা সংগ্রহে এখন পূর্বস্থলীতে ভিড় জমাচ্ছেন জেলা ও ভিন জেলার মানুষজন।
পূর্বস্থলী (Purbasthali) ২ ব্লকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য নার্সারি। প্রতি বছরই তারা যেমন ফুলগাছের চারা তৈরি করেন, তেমনই দেশি-বিদেশি প্রজাতির ফলের চারাও এখানে তৈরি হয়। পূর্বস্থলীর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে শংকর মহাদেব নার্সারি (Nursery)। প্রায় সাত দশক ধরে বংশ পরম্পরায় বিভিন্ন ফুল ও ফলগাছ থেকে তারা যেমন কলম তৈরি করে চারা বিক্রি করেন, তেমনই সেই গাছগুলি থেকে ফুল ও ফল ফলান। তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আমগাছ রয়েছে, তেমনই উল্লেখযোগ্যভাবে দেশি ও বিদেশি প্রজাতির শতাধিক ধরনের আমগাছ (Mango) রয়েছে সেখানে। যদিও বাজারে এখন সব গাছ ছাড়া হয়নি বলে তাঁরা জানাচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: বাইরে দাঁড়িয়ে সারি-সারি বুলডোজার, বিশ্বকাপের মাঝেই ভাঙছে ভারত-পাক ম্যাচের স্টেডিয়াম]
এই সব গাছের নাম লম্বা তালিকার সমান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘নূরজাহান’। নার্সারির মালিক শংকর দত্ত জানান, “এই আম প্রায় ৩-৪ কেজি আকারের হয়। কিন্তু এখানকার মাটিতে আমরা আড়াই কিলো ওজনের করতে পেরেছি। এই আম বেশ সুস্বাদু। পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মাটিতে এই আম হলেও এখন বেশ কিছু জায়গায় তা হচ্ছে।” এছাড়া রয়েছে -
আলফানসো
কিং চাকাপথ
টমি আটকিনস
ন্যাম ডক মাই
রেড আইভরি
সিয়ন
সন অফ গোল্ড
তাইওয়ান রেড
অস্ট্রেলিয়ান কালাবাউ
বাংলাদেশের থ্রি টেস্ট
বালি ২
বালি ১৩
সেনসেশন
চিয়াংমাই
অ্যাপেল ম্যাঙ্গো
চিলি ম্যাঙ্গো (একগুচ্ছ লঙ্কার মতো দেখতে)
ব্যানানা কিং (কলার মত লম্বা)
রসগোল্লা আম (রসগোল্লার মতো গোল)
জাপানের (Japan) বিখ্যাত মিয়াজাকি আমের ফলনও হচ্ছে এখানে। এবারেও বেশ কিছু আম ফলেছে ওই নার্সারিতে। আন্তর্জাতিক বাজারে আমের দাম এখন বেশ চড়া। কিন্তু তাতে কী? সেই পর্যাপ্ত দাম এখানে মিলছে না। বর্তমানে এই আমের চারা সংগ্রহে বিভিন্ন জেলার মানুষজন ভিড় করছেন এই নার্সারিতে। দেশি-বিদেশি প্রজাতির এসব গাছের চারা ৫০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান নার্সারির আর এক কর্তা দীপঙ্কর দত্ত।
[আরও পড়ুন: জেলে ফের অসুস্থ পার্থ! ফুলছে পা, SSKM-কে চিঠি প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষের]
তিনি জানান, “বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি আমগাছ থেকে আমরা সফলতা পেয়েছি। এখানকার আবহাওয়াতে এইসব গাছে আমের ফলন, স্বাদ, গন্ধ বেশ ভালো হচ্ছে। বর্তমানে তাই এখানে বিদেশি গাছের মার্কেট তৈরি হচ্ছে।” দীপঙ্করবাবু আরও জানান, “দেশি প্রজাতির আমগাছগুলিতে প্রতি বছর আমের ফলন না হলেও বিদেশি প্রজাতি গাছগুলির ৭০ শতাংশ গাছে প্রতি বছরই আম আসে। এসব কারণেই বিদেশি আমগাছের চাহিদা বাড়ছে ক্রমশ।”
দেখুন ভিডিও: