shono
Advertisement

মাঝারির পর এবার বড় মাছ চাষে জোর দিচ্ছে রাজ্য

মাছ চাষের জন্য ভরতুকিও দেবে সরকার। The post মাঝারির পর এবার বড় মাছ চাষে জোর দিচ্ছে রাজ্য appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:33 PM Jan 04, 2019Updated: 09:33 PM Jan 04, 2019

মনিরুল ইসলাম, হাওড়া: মিশ্র মৎস্য চাষের মাধ্যমে মাঝারি আকারের মাছ উৎপাদনে অনেকটাই সাফল্য পেয়েছে রাজ্য। এবার রাজ্যব্যাপী বড় পুকুরে বড় মাছ চাষ প্রকল্পের মাধ্যমে বড় আকারের মাছ উৎপাদনে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বিষয়টিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এজন্য রাজ্যব্যাপী বিভিন্ন প্রদর্শনী পুকুরে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। চলতি বছরে রাজ্যে ৭৪টি প্রদর্শনী পুকুরে এই প্রক্রিয়ায় চাষিদের মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী বছরে রাজ্যের লক্ষ্য তারা ১৭৪টি প্রদর্শনী পুকুরে চাষিদের দিয়ে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করবে। সরকারের লক্ষ্য এই প্রকল্পে এক হেক্টর পুকুরে বছর ১২ টন মাছ উৎপাদন করা।

Advertisement

এই প্রকল্পে টানা এক বছর মাছ চাষ করে সেই মাছ কমপক্ষে ২ কেজি ওজনের করে তোলা। দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, এই পদ্ধতিতে মাছ চাষের ফলে রাজ্য বড় আকারের মাছ উৎপাদন বাড়াতে চাইছে এবং রাজ্যে বড় মাছের ঘাটতি কমাতে চাইছে সরকার। এতে বড় মাছের ক্ষেত্রে অন্য রাজ্যের উপর পশ্চিমবঙ্গের নির্ভরতা যেমন কমবে তেমনি রাজ্যের মাছ চাষিরাও আর্থিকভাবে উপকৃত হবে বলে জানান রাজ্যের মৎস্য দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। মৎস্য চাষের প্রদর্শনী ক্ষেত্র বা ডিমনস্ট্রেশন সেন্টারগুলোতে জোরকদমে মাছ চাষিদের হাতে-নাতে এই পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ চলছে। মৎস্য দপ্তর সূত্রে খবর, চাষিদের বা মৎস্য সমবায়কে মাছ চাষের জন্য বড় পরিমাণে ভরতুকিও দেবে সরকার।

[গোলাপের পর অর্কিড ফুটবে কোচবিহারে, শুরু পরীক্ষামূলক চাষ]

প্রকল্পটি কী?
মৎস্য দপ্তর ও মাছ চাষি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে এক হেক্টর পরিমাণ পুকুরে মাছ চাষের পরিকল্পনা করা হয়। পুকুরে রুই, কাতলা, মৃগেল এই তিনটি প্রজাতির মাছ ছাড়া হয়। চারাপোনার ওজন হয় ২০০-২৫০ গ্রাম। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে (মাছের প্রয়োজনীয় খাবার, অক্সিজেনের পরিমাণ ঠিক রাখা-সহ যথাযথ পরিচর্যা) চাষ করার ফলে এক বছরে প্রায় সেই মাছ দু’কিলোগ্রাম ওজনের যাতে করা যায় তার চেষ্টা করছে দপ্তরের আধিকারিকরা। কাতলা মাছের আকার প্রায় তিন কিলোগ্রাম, রুই মাছের ওজন দু-আড়াই কিলোগ্রাম আর মৃগেল মাছের আকার প্রায় দেড় কিলোগ্রাম করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেভাবেই চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দপ্তর সূত্রে খবর, এই প্রকল্পে মৎস্য দপ্তর চাষিদের যথেষ্ট পরিমাণে ভরতুকিও দিচ্ছে। প্রায় সাড়ে সাত হাজার মাছের চারা, তাদের জন্য ১২ টন খাবার ও ৫ কুইন্টাল চুন সরবরাহ করে মৎস্য দপ্তর।

ইতিমধ্যে হাওড়ার উলুবেড়িয়া, বাগনান, আমতা, শ্যামপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায়ও প্রদর্শনী পুকুর করা হয়েছে। মৎস্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের এক কর্তা চন্দ্রভান দত্ত জানান, এবারে হাওড়া জেলায় ১৮টি প্রশিক্ষণ পুকুর নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষণের কাজও চলছে। উলুবেড়িয়া ১ ব্লকে ২টি প্রদর্শনী পুকুর করা হয়েছে এবং এই ব্লক যথেষ্ট এগিয়ে রয়েছে বলেও মৎস্য দফতর সূত্রে খবর। এই ব্লকের মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক নারায়ণ বাগ বলেন, “আমরা ব্লকের প্রায় একশো মাছচাষিকে এই মাছ চাষের প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা রেখেছি। তাছাড়া আমাদের ব্লকে এমনিতেই কয়েক হাজার পরিবারের প্রধান জীবিকা মাছ চাষে পরিণত হয়েছে। ব্লক প্রশাসনও যথেষ্ট সহায়তা করছে।”

[আলসারের কড়া দাওয়াই হতে পারে শীতের বাঁধাকপি]

উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায়ের রক্তব্য, “আমরা সবসময়ই মানুষের পাশে রয়েছি। আমরা চাই সরকারি সুবিধা মানুষের কাছে অধিক পরিমাণে পৌঁছক ও মানুষ স্বাবলম্বী হোক।” বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, “আমরা পূর্ণভাবে সাহায্য করছি। আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাব।” একই কথা জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুলতানা বেগম শেখ ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ শেখ মফিজুল। কাশমূল এলাকার এক মাছ চাষি দিলীপ দত্ত এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছেন। প্রায় ১০০ বিঘা পুকুরে তিনি মাছ চাষ করেন। তিনি বলেন, “বছর কয়েক ধরে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছি। খুবই লাভবান হয়েছি।” প্রসঙ্গত চলতি অর্থবর্ষে তাঁরই পুকুরে প্রদর্শনী কেন্দ্র চলছে। লাভবান হওয়ার ব্যাপারে একই কথা জানান, উলুবেড়িয়ার এক মাছচাষি সুব্রত গুছাইতও। প্রকল্পের রূপায়ণে প্রশাসন তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী ও অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী তথা জেলার বিধায়ক অরূপ রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

The post মাঝারির পর এবার বড় মাছ চাষে জোর দিচ্ছে রাজ্য appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement