shono
Advertisement

Breaking News

তীব্র গরমে চা চাষে বিপুল ক্ষতি! পুজোতে বাগান বন্ধের হিড়িক পড়ার আশঙ্কায় চাষিরা

বর্ষার মরশুমে চা পাতা দিয়ে ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ফ্যাশের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে না বলে দাবি চাষিদের।
Published By: Subhankar PatraPosted: 05:56 PM Jun 09, 2024Updated: 05:56 PM Jun 09, 2024

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গে চলছে টানা বৃষ্টি। তবে চা চাষের 'পিক টাইম' গরমে বৃষ্টি হয়নি পাহাড়ে। তার জেরে ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ফ্ল্যাশে মার খেয়েছে চা চাষিরা। ফলে পুজোর আগে বাগান বন্ধের আশঙ্কায় দিন গুনছেন চাষিরা। তাঁদের অনুমান, পুজোর বোনাসের আগে চা বাগান বন্ধের হিড়িক পড়তে পারে।

Advertisement

গত অক্টোবর থেকে সাত মাস বৃষ্টি ছিল না উত্তরে। মার্চ (March) মাস পর্যন্ত রাজ্যে চা উৎপাদনে প্রায় ছয় মিলিয়ন কেজি ঘাটতি ছিল। মে মাস থেকে সেই ঘাটতি বেড়েছে। শুধু তাই নয় চা বাগানগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়িছে। সেচ দিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। ৮০ শতাংশ ছোট চা বাগান তাপদাহে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি। কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর এলাকার চা বাগান নষ্ট হয়েছে।

[আরও পড়ুন: খেলতে গিয়ে নিখোঁজ ৫ বছরের শিশুকন্যা, একদিন পর নদী থেকে উদ্ধার দেহ]

চা চাষিরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর উত্তরে শীতের হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়ে থাকে। ওই বৃষ্টির জল মিলতেই ছেটে দেওয়া চা গাছে নতুন পাতার দেখা মেলে। এবার শীতে বৃষ্টি মেলেনি। উলটে শীত শেষ হতে লাফিয়ে বেড়েছে তাপমাত্রা। এবার তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। অথচ বাগানে ভালো মানের চা পাতা উৎপাদনের জন্য দিনে রোদ, সকালের তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রি থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে বৃষ্টি দরকার। তা এবার গ্রীষ্মে হয়নি।

অনুকূল আবহাওয়া না পেয়ে বেশিরভাগ চা গাছ শুকিয়ে গিয়েছে। চাষিরা কৃত্রিম সেচের ব্যবস্থা করে চা বাগান রক্ষার মরিয়া চেষ্টা চালালেও লাভ হয়নি। উলটে অনেকেই ঋণের জালে জড়িয়েছেন। ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির অন্যতম কর্তা রজত কার্জি জানান, ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ফ্যাশ চা পাতা উৎপাদন পুরোপুরি মার খেয়েছে। বর্ষা শুরুর পর থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু বর্ষার মরশুমের চা পাতা দিয়ে ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ফ্যাশের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে না। সবচেয়ে বড় ব্যাপার সেকেন্ড ফ্ল্যাশের চা পাতা উৎপাদন করে যে লাভ হয়, তা থেকেই পুজোর মরশুমে শ্রমিকদের বোনাসের ব্যবস্থা হয়ে থাকে। এবার লাভ দূর অস্ত, উলটে সেচের ব্যবস্থা করতে গিয়ে চা বাগানগুলো ঋণে জড়িয়েছে।

[আরও পড়ুন: চালু হল শিয়ালদহ স্টেশনের বন্ধ প্ল্যাটফর্ম, দ্রুত ভোগান্তি কমার আশ্বাস রেল কর্তৃপক্ষের]

কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, "উত্তরে ছোট চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর জেলা এবং শিলিগুড়ি মহকুমার ৪১ হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে ছোট চা বাগান রয়েছে। তাপদাহে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার হেক্টর এলাকার চা বাগান। প্রায় ১০ হাজার হেক্টর এলাকার চা বাগান শুকিয়ে পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। বর্ষায় পাতা উৎপাদন করে ওই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব নয়।" আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, "এবার পুজো বোনাসের কথা চা বাগানগুলো ভাবতেই পারবে না। পরিস্থিতি এমন উদ্বেগজনক হয়ে আছে যে আগস্টের পর থেকে একের পর এক চা বাগান বন্ধ না হয়ে যায়।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বৃষ্টির অভাবে ফার্স্ট এবং সেকেন্ড ফ্ল্যাশে মার খেয়েছে চা চাষিরা।
  • ফলে পুজোর আগে বাগান বন্ধের আশঙ্কায় দিন গুনছেন চাষীরা।
  • তাঁদের অনুমান, পুজোর বোনাসের আগে চা বাগান বন্ধের হিড়িক পড়তে পারে।
Advertisement