শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: দিনকয়েক আগেই সিবিআই (CBI) তদন্তের দাবিতে সুর চড়িয়েছিলেন ময়নাগুড়ির নির্যাতিতার বাবা। আচমকাই ভোলবদল। পুলিশি পদক্ষেপে খুশি, রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা রয়েছে বলেই জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। তাঁর এই মতবদল নিয়ে নানামহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির ধর্মপুর এলাকার এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় অজয় রায় নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত তার জামাকাপড় ছিঁড়ে গোপনাঙ্গে হাত দেয় বলে অভিযোগ। নাবালিকার চিৎকার শুনে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। ময়নাগুড়ি থানার দ্বারস্থ হয় নাবালিকার পরিবার। অভিযোগ দায়েরের কয়েকদিনের মধ্যেই আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্ত।
[আরও পড়ুন: রাতভর ১৫০ ফুট উঁচু টাওয়ারে বসে যুবক! উদ্ধারে নেমে নাজেহাল পুলিশ-দমকল]
এরপরই নির্যাতিতা নাবালিকা আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। ২৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকার পরিবার। এরই মধ্যে অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিন পায়। নাবালিকার বাবার অভিযোগ, গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে বাড়িতে একাই ছিল তাঁর মেয়ে। সেই সময় মুখ ঢাকা অবস্থায় দুই যুবক বাড়িতে ঢুকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বলে। অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে বাড়ির সকলকে খুন করার হুমকি দিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতীরা।
এই ঘটনার কথা পরিবারের সকলকে জানায় নাবালিকা। অভিযোগ, তারপরই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নাবালিকাকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা। সেখানেই টানা ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েও শেষ রক্ষা হয়নি। গত সোমবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নির্যাতিতা।
[আরও পড়ুন: ‘রাজ্যের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার’, ফের তৃণমূল সরকারের হয়ে ব্যাট ধরলেন ‘বেসুরো’ অর্জুন]
নাবালিকার মৃত্যুর পরই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন মৃতার বাবা। কিন্তু একদিন পেরতে না পেরতেই ভোলবদল। বুধবার নির্যাতিতার বাবা জানান, মেয়ের ঝলসানো চেহারা দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারেননি তিনি। তাই সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিলেন। কিন্তু ঘটনার পরই পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার মতে পুলিশ যেভাবে তদন্ত করছে, তাতে তার বিশ্বাস মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ীরা দোষীরা কঠোর শাস্তি পাবে। তাই সিবিআই তদন্ত চান না বলেই জানিয়েছেন তিনি।