সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত কিংবদন্তি সিনে পরিচালক জঁ লুক গদার। বয়স হয়েছিল ৯১। ফ্রান্সের নিউ ওয়েভ সিনেমার জনক ছিলেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই সিনেমা পেয়েছিল এক অন্য ধারা, অন্য ভাষা। স্টুডিওর ঝাঁ চকচকে গল্প বলার বাইরে ‘নিউ ওয়েভ’ সিনেমা দেখিয়েছিল সমাজের আসল চিত্র। তবে শুধুই সমাজ নয়, গদারের ছবি মানে এক মনস্তত্ত্বও।
পরিচালক গদার বরাবরই মৌলবাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন। ‘আইকনোক্লাস্টিক’ নীতি অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের রীতিনীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তাঁর পরিচালিত প্রত্যেকটি ছবিই তার জ্বলন্ত উদাহরণ। তবে শুধু সিনেমার পর্দায় নয়, তাঁর নানা লেখায় ফুটে উঠেছিল সমাজের বিভিন্ন দিক।
১৯৩০ সালে প্যারিসে জন্ম হয় গদারের (Jean-Luc Godard)। পরিচালক হিসেবে তাঁর কেরিয়ারের প্রথম অধ্যায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও বিতর্কিত। ১৯৬০ সালে তাঁর প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘ব্রেথলেস’ গোটা বিশ্বের নজর কেড়ে নেয়। অনেকেই এই ছবি দেখে বুঝতে পেরেছিলেন সিনেমায় নতুন ভাষার জন্ম হয়েছে। যা ‘নিউ ওয়েভ’। সিনেমা পেল নতুন শব্দ ‘জাম্প কাট’। যা কিনা ছবির গল্প বলাকেই আমূল বদলে দিল।
কেরিয়ারের প্রথম দিকে একের পর এক রাজনৈতিক সিনেমা বানিয়ে গিয়েছেন গদার। পরের দিকে অবশ্য তাঁর ছবির ভাষায় উঠে এসেছিল নৈরাশ্য। তবে তাঁর সাম্প্রতিক ছবি ‘ফিল্ম সোশ্যালিজম’ ও গুডবাইয়ে’ উঠে এসেছে এই সময়ের কথা। নিজের সিনেমাশৈলীকে ভেঙে নতুন প্রযুক্তি নিয়েও কাজ করেছেন তিনি। নানা সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়ে ছিলেন, ডিজিটাল মাধ্যমের রমরমাকে ছবির ভাষায় নিয়ে আসবেন। কিন্তু সেই ইচ্ছাপূরণের আগে বিদায় নিতে হল নবতরঙ্গের জনককে।
[আরও পড়ুন: ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র জন্য ‘লক্ষ্মী ছেলে’ সরানোর চাপ! ক্ষোভ হলমালিকদের, অসন্তুষ্ট প্রযোজক শিবপ্রসাদ ]
পরবর্তীকালে এই ‘নিউ ওয়েভ’ ছড়িয়ে পড়ে গদার পরবর্তী প্রজন্মের পরিচালকদের মধ্যেও। যেমন, গদারের চলচ্চিত্রের ভাষায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন মার্টিন স্কোরসেজি, কোয়েন্টিন টারান্টিনোর মতো পরিচালকরা। এমনকী, গদারের তৈরি নিউ ওয়েভ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ঋত্বিক ঘটকও।