বিক্রম রায়, কোচবিহার: চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তাঁর নির্দেশে নির্বাচনের আগে বোমা রাখা হয়েছিল বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন গোসানিমারির বাসিন্দা ফিরদৌস ইসলাম। বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে দিনহাটা থানায় (Dinhata PS) ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গোসানিমারির বাসিন্দা ফিরদৌস ইসলামের অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিশীথ প্রামাণিকের (Nisith Pramanik) সঙ্গে কাজ করতেন তিনি। সেই সময়ই তাঁকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন নিশীথ। বিনিময়ে, প্রথমে এক লক্ষ টাকা এবং পরে আরও ২৫ হাজার টাকা নেন। গবাদি পশু, টোটো ইত্যাদি বিক্রি করে সেই অর্থ জোগাড় করেছিলেন তিনি। কিন্তু আজও প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। উলটে তাঁর কথা মতো কাজ করে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হয়েছে ফিরদৌসকে। তাঁর অভিযোগ, স্থানীয় একটি কারখানায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে বোমা ও বোমা তৈরির বহু সরঞ্জাম ও কাঁচামাল পেয়েছিল। সেই সময়, নিশীথ প্রামাণিক নাকি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেসব বোমা ও বোমা তৈরির সামগ্রী ফিরদোসকে সরিয়ে রাখতে বলেছিলেন। কিন্তু পরে সেই বোমা ফেটেই গুরুতর জখম হন ফিরদৌস। সপ্তাহ খানেক আইসিইউতে থাকতে হয় তাঁকে।
[আরও পড়ুন: TMC in Tripura: তৃণমূলের উত্থানে ত্রিপুরায় কতটা সংকটে বিজেপি সরকার?]
ছেলেকে সুস্থ করতে নিজের দোকান পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে ফিরদৌসের বাবাকে। সরকারি চাকরির স্বপ্ন কার্যত রাস্তায় বসিয়েছে তাঁদের পরিবারকে। আর সেই কারণেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ফিরদৌস। তিনি বলেন, “শুধু আমার নয়, এভাবে অনেকের থেকে টাকা আদায় করেছেন নিশীথ প্রামাণিক। তাঁদের হয়তো ফেরত পাওয়ার তাগিদ নেই। কিন্তু আমার আছে। আমার চাকরি চাই না। ওই টাকাটা ফেরত পেলে অন্তত টোটো কিনে চালাতে পারব। পেটটা তো চলবে।”
গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল। শাসক দলের প্রাক্তন বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “যিনি এই ধরনের কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তিনি আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী। যা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। এমন একটা ফিরদৌস নয়, বহু ফিরদৌস, সমাজ-বিরোধী তৈরি করেছেন তিনি। আমার মনে হয় এসবের তদন্ত হওয়া উচিত।” এদিকে বিজেপির জেলা সভাপতি মালতী রাহার পালটা দাবি, এসব তৃণমূলের সাজানো গল্প। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।