দেবব্রত মণ্ডল, ডায়মন্ড হারবার: বিপদ জেনেও পেটের দায়ে জঙ্গলে গিয়েছিলেন সুন্দরবনের (Sundarban) মৎস্যজীবী। সেটাই কাল হল। বাঘের হানায় মৃত্যু হল আরও তাঁর। মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা।
জানা গিয়েছে, নিহত মৎস্যজীবীর নাম বিষ্ণু মিস্ত্রি। বয়স ৪৮ বছর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের সাতজেলিয়া এলাকার বাসিন্দা ওই মৎস্যজীবী। পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার সকালে বেশ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ঝিলার জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন বিষ্ণু। সেখানেই ঘটে দুর্ঘটনা।
[আরও পড়ুন: পাহাড়ে উড়ল সবুজ আবির, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ’, জয়ের পর বললেন TMC প্রার্থী বিনয় তামাং]
কাঁকড়া ধরার সময় আচমকা দক্ষিণরায় ঝাঁপিয়ে পড়ে বিষ্ণু মিস্ত্রির উপর। মৃতের বন্ধুরা জানিয়েছেন, বাঘটি টানতে টানতে বিষ্ণুকে জঙ্গলের ভিতরে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। বিপদ অনিবার্য জেনেও সঙ্গীরা বাঘের মুখ থেকে বিষ্ণুকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করেন সঙ্গীরা। গোপাল মণ্ডল, দীনবন্ধু মণ্ডলেরা মৎস্যজীবীকে বাঁচাতে রীতিমতো বাঘের সঙ্গে লড়াই করেন। মৎস্যজীবীকে ছাড়িয়েও নিয়ে আসেন। সেই সময় গলায় ও কানের কাছে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল। এত লড়াই সত্বেও শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মৎস্যজীবী। বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, মৃত মৎস্যজীবীর কাছে বৈধ কাগজপত্র ছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়। প্রায়শই পেটের টানে জঙ্গলে গিয়ে প্রাণ দিতে হয় সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের। কিন্তু তা সত্ত্বেও উপার্জনের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিতে পিছপা হন না তাঁরা। কটা টাকা এলে বাড়িতে হাড়ি চড়বে যে! দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন তো জুটবে। আর পরিবারে মুখে হাসি ফোটাতেই জঙ্গলের গভীরে গিয়ে এভাবে বাঘের আক্রমণে প্রাণ দিতে হয় তাঁদের।