সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর থেকেই প্রচণ্ড আগ্রাসী হয়ে উঠেছে চিন। যুদ্ধের আশঙ্কা উসকে স্বশাসিত দ্বীপরাষ্ট্রটিকে ‘অবরোধ’ করে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে লালফৌজ। ফলে তাইওয়ানের আকাশপথে ঢুকতে পারছে না বিভিন্ন দেশের যাত্রীবাহী বিমান। ওই রুটে যাত্রা বাতিল করেছে বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা।
চিনা রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে তাইওয়ান পৌঁছন আমেরিকার হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দক্ষিণ চিন সাগরে ঢুকে পড়ে আমেরিকার যুদ্ধবিমানের বহর। পেলোসির নেতৃত্বে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে নিরাপত্তা দিতে জাপানের বিমানঘাঁটি থেকে ওড়ে আমেরিকার বিমানবাহিনীর ১৩টি যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রন। বুধবার পেলোসির বিমান তাইওয়ান ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়া পাড়ি দেওয়ার পরে তাইওয়ানের আকাশে চিনা বিমানবহরের গতিবিধি আরও বেড়েছে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার থেকে তাইওয়ান প্রণালী ও সংলগ্ন অঞ্চলে সামরিক মহড়া শুরু করে চিনা ফৌজ।
[আরও পড়ুন: লালচিনের মাথাব্যথার কারণ তাইওয়ানের ‘লৌহমানবী’, কে এই মহিলা?]
এহেন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান সংস্থা ‘কোরিয়া এয়ার’ শুক্র ও শনিবার তাইওয়ানের সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করেছে। শুক্রবার সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স তাইপেইর সমস্ত বিমান বাতিল করে দেয় । পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা। জাপানের বিমান সংস্থা ফ্লাইট বাতিল না করলেও তাইপেইর উদ্দেশে যাওয়া বিমানগুলির রুট পরিবর্তন করেছে। হংকংয়ের বিমান সংস্থা ‘ক্যাথে প্যাসিফিক’ জানিয়েছে, চিনা সামরিক মহড়ার দরুন তাইওয়ানের আশপাশের কিছুটা এলাকা এড়িয়ে চলছে তারা।
উল্লেখ্য, তাইওয়ান (Taiwan) সংলগ্ন জলরাশিতে ছ’টি এলাকায় মহড়া চালাচ্ছে লালফৌজ। মহড়া চলাকালীন ওই এলাকা দিয়ে কোনও জাহাজ বা বিমান চলাফেরা করতে পারবে না, জানানো হয়েছে চিনের তরফে। প্রসঙ্গত, তাইওয়ান প্রণালী বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত জলপথ। বৃহস্পতিবার চিনা ফৌজের ছোড়া পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়ে তাইওয়ান সংলগ্ন পূর্ব চিন সাগরে, জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে। তার পর থেকে ওই এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমধ্যম সূত্রে খবর, তাইওয়ানের মোট ছ’টি বড় বন্দরকে নিশানা করছে চিন (China)। রাজধানী তাইপেইয়ের পাশাপাশি উত্তরের কিলুং, পশ্চিমের সুয়াও এবং হুয়ালিয়েন, দক্ষিণ তাইওয়ানের কাওশিয়ুং এবং পূর্বের তাইচুয়াং বন্দর রয়েছে এই তালিকায়। চিনা জে-২০ স্টেল্থ ফাইটার জেট, টাইপ ০৫-২ডি ডেস্ট্রয়ার গোত্রের যুদ্ধজাহাজ এবং বেশ কিছু ছোট দ্রুতগতিসম্পন্ন কর্ভেট জলযান তাইওয়ানের জলসীমা লাগোয়া এলাকায় কার্যত বেড়াজাল তৈরি করেছে।