সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 2G ও আদর্শ আবাসন মামলায় বিরোধী শিবির চাঙ্গা হলেও পশুখাদ্য মামলায় ধাক্কা খেল। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব। ৩ জানুয়ারি সাজা ঘোষণা হবে।
শনিবার এই মামলায় রায় দেয় রাঁচির বিশেষ সিবিআই আদালত। পর্যাপ্ত প্রমাণ পেয়ে লালুপ্রসাদের এই শাস্তির কথা শোনান বিচারক। তবে রেহাই পেয়েছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথ মিশ্র। মামলার শুনানির জন্য শুক্রবারই রাঁচি পৌঁছে যান লালুপ্রসাদ ও জগন্নাথ মিশ্র। আদালতে যাওয়ার আগে তিনি রীতিমতো আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। উল্লেখ্য, পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে আরজেডি প্রধানের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা দায়ের হয়। এদিনের মামলাটি দ্বিতীয়। এই মামলায় অভিযোগ ছিল ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের নেতৃত্বে পশুখাদ্য কেনার নাম করে জাল নথির মাধ্যমে দেওঘর ট্রেজারি থেকে ৯০ লক্ষ টাকা তোলা হয়। । এর আগে পশুখাদ্য সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় লালুপ্রসাদ যাদবকে পাঁচ বছরের কারাবাসের নির্দেশ দেয় CBI আদালত। সেই মামলায় ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবশ্য তিনি জামিন পান। দ্বিতীয় মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তার জেল হতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। আগামী ৩ জানুয়ারি এই মামলার সাজা ঘোষণা। সেই দিন পর্যন্ত লালুকে জেলেই থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মে মাসে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে লালুর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এছাড়াও ওই কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত প্রত্যেকটি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আলাদা করে মামলা চালানোর আদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। অভিযোগ, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের নেতৃত্বে পশুখাদ্য কেনার নাম করে জাল নথির মাধ্যমে কয়েকবারে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা কোষাগার থেকে তোলা হয়।
[তেজস্বী যাদবের ৪০ কোটি টাকার বাড়ি বাজেয়াপ্ত করল আয়কর বিভাগ]
শুধু পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিই নয়, লালু ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে রেল দুর্নীতি ও কর ফাঁকির মামলাও রয়েছে। মামলাগুলির তদন্ত করছে সিবিআই। অভিযোগ, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়মবহির্ভূতভাবে একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিয়েছিলেন লালু। ২০০৬ সালে ‘বিএনআর হোটেলস’ অধিগ্রহণ করে ভারতীয় রেল। তখন রেলমন্ত্রীর আসনে লালু। অধিগ্রহণের পর বিএনআর হোটেলসের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। অভিযোগ, সে বছরই প্রভাব খাটিয়ে সুজাতা হোটেল নামের একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দেন আরজেডি প্রধান। সবমিলিয়ে লালু প্রসাদ যাদবের সামনে এখন অভিযোগের পাহাড়। 2G মামলায় সিবিআই আদালতে তথ্য প্রমাণ পেশ করতে না পারায় রেহাই পেয়েছিলেন এ রাজা, কানিমোঝিরা। তবে পশুখাদ্য মামলায় অবশ্য আটঘাঁট বেধে নেমেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাই এযাত্রায় রেহাই পেলেন না আরজেডি সুপ্রিমো। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁর উচ্চতর আদালতে যাওয়ার রাস্তা অবশ্য খোলা রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন গত কয়েক দিনে আদালতের লড়াইয়ে বিরোধীরা ২-০ এগিয়ে ছিল। পশুখাদ্য মামলার পর অবশ্য স্কোর ২-১ এ দাঁড়াল।
[বিপাকে লালু-তেজস্বী, রেল দুর্নীতি মামলায় ফের সমন সিবিআইয়ের]
The post পশুখাদ্য মামলায় বড় ধাক্কা, দোষী সাব্যস্ত লালুপ্রসাদ appeared first on Sangbad Pratidin.