সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইলিশ-চিংড়ির ডার্বি। ঘটি-বাঙালের ডার্বি। বাঙালির চিরন্তন এই লড়াই যেন এখন আর বাঙালির নয়। বিশ্বজনীন হয়ে উঠেছে। বলা ভালো, ডার্বি থেকে বাঙালিয়ানা যেন হারিয়ে যাচ্ছে। কারণ, দুই প্রধানে বাঙালির সংখ্যা নামমাত্র। এমনকী দুদলের সাপোর্ট স্টাফেও সেভাবে বাঙালিদের উপস্থিতি নেই।
মরশুমের প্রথম বড় ম্যাচে তাই ডার্বির চিরন্তন বাঙালিয়ানা ফেরানোর দাবি উঠল। ম্যাচ চলাকালীন গ্যালারিতে বড়সড় টিফো চোখে পড়ল। ইস্টবেঙ্গল গ্যালারি থেকে ঝোলানো বিশাল টিফোতে লেখা, 'গ্যালারি আজ বলছে ভাই, ডার্বিতে বাঙালি ফুটবলার চাই।' উল্লেখ্য, একাধিক বাংলা জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলি দীর্ঘদিন ডার্বিতে বাঙালি সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে সওয়াল করছে। এবারের ডার্বিতে সেই আন্দোলন জোরাল করছে তাঁরা। সম্ভবত সেটারই প্রতিফলন দেখা গেল লাল-হলুদ গ্যালারিতে।
একটা সময় ছিল, যখন ময়দানের দুই প্রধান ক্লাবেই দাপিয়ে খেলতেন বাংলার ফুটবলাররা। ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, কৃশানু দে থেকে শুরু করে সুব্রত ভট্টাচার্য, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অলোক মুখোপাধ্যায় পর্যন্ত। সেসময় বাংলার ফুটবল ছিল বাঙালি অন্ত প্রাণ। মনোরঞ্জন-প্রসূন থেকে শুরু করে মেহেতাব-নবি পর্যন্ত। ডার্বিতে বিদেশিদের সঙ্গে সমানে তাল মিলিয়ে খেলতেন বাঙালিরাও। কিন্তু, গত কয়েক মরশুমে আর তেমনটা হচ্ছে না। দুই প্রধানে বাঙালির সংখ্যা এখন হাতেগোণা।
ইস্টবেঙ্গলে আপাতত বাঙালি বলতে শুধু শৌভিক চক্রবর্তী ও প্রভাত লাকরা। সঙ্গে লাল-হলুদের বেঞ্চে রয়েছেন গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার, সঙ্গে সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। মোহনবাগানের অবস্থা তথৈবচ। সবুজ-মেরুনের প্রথম একাদশে বাঙালি বলতে শুধু অধিনায়ক শুভাশিস বসু। বেঞ্চে আর মাত্র একজন দীপেন্দু বিশ্বাস। সব মিলিয়ে দুই প্রধানের ম্যাচ ডে'র স্কোয়াডে মেরেকেটে জনা পাঁচেক বাঙালি। যে ম্যাচে এক সময় বাংলার ফুটবলারদের, বাঙালি ফুটবলারদের দাপট দেখা যেত, সেই ম্যাচ কার্যত বাঙালি শূন্য হতে বসেছে। গ্যালারিতে পুরনো ছবি ফেরানোর দাবি উঠল।