স্টাফ রিপোর্টার: হাওড়ার ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর সাড়ে তিন কোটি টাকার ‘ফেরারি’ গাড়ি দুর্ঘটনায় হাতে এল নয়া তথ্য। সোমবার ঘটনাস্থল পরীক্ষা করেছে ফরেনসিক টিম। গাড়িটির যা অবস্থা তাতে দেখা যাচ্ছে এয়ার ব্যাগে রক্তের দাগ। দুর্ঘটনাস্থলের অনেকটা আগেই থেকেই রাস্তার রয়েছে চাকা ঘষা খাওয়ার দাগ। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এত দামি গাড়ির অত্যাধুনিক ব্যবস্থা আসল সময়ে কাজ করেনি? অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম থাকলেও তা কি কাজ করেনি? সাড়ে তিন কোটির ফেরারির পাঁচ-পাঁচটি মূল্যবান এয়ারব্যাগ কেন কাজ করল না?
এসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে ফেরারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ না করে দুর্ঘটনার সময় গাড়ির গতি কত ছিল তা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে মনে করা হচ্ছে, ঘণ্টায় প্রায় ১৬০ কিমি গতিবেগে ছুটছিল ফেরারিটি। কলকাতার একটি নামী সংস্থার কর্ণধার শিবাজি রায়(৪৩) গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। দুই আসনের এই গাড়িটিতে চালকের পাশের আসনে বসেছিলেন তাঁর বন্ধুর মেয়ে আশনা সুরানা(১৮)। গুরুতর আহত অবস্থায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি আশনা। ধীরে ধীরে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন তিনি।
[সম্পর্কে বিচ্ছেদের রোষ, প্রেমিকার নগ্ন ছবি এসকর্ট সার্ভিসের সাইটে ছড়াল প্রেমিক]
জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষায়, তাঁরা চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই শোঁ করে আওয়াজ। সেকেন্ডের মধ্যে প্রচণ্ড শব্দ করে হাওড়ার সলপের পাকুড়িয়া সেতুর দেওয়ালে আছড়ে পড়ে লাল রঙের ‘ফেরারি ক্যালিফোর্নিয়া টি’ মডেলের গাড়ি। মুহূর্তের মধ্যে গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। গাড়ির ভিতরে আটকে পড়েন দু’জন। অবস্থা এমনই যে পুলিশের ক্রেন এসেও বের করতে পারেনি তাঁদের।
গাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, গাড়িতে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র স্পিডোমিটার না থাকা এবং জাতীয় সড়কে নজরদারির অভাবই এই বিলাসবহুল বহুমূল্যবান গাড়িতেও ডেকে আনছে মৃত্যুফাঁদ। বাস বা ট্রাকে স্পিডোমিটার থাকায় তার গতির কাঁটা নির্দিষ্ট থাকে। কিন্তু এই ধরনের গাড়ির ক্ষেত্রে তা নেই। যা থেকেই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ে বলে জানাচ্ছেন গাড়ি বিশেষজ্ঞরা। গাড়ির কোনও যন্ত্রাংশ বিকল হয়েছিল কি না, বা সামনে কোনও গাড়ি এসেছিল কি না তা দেখা যাবে। যেমনটা থাকে প্লেনেও। ব্ল্যাক বক্স থেকে তা জানা যায়। তাছাড়া যাত্রী নিরাপত্তার জন্য বিলাসবহুল অধিকাংশ গাড়িতে তিনটি সিকিউরিটি সিস্টেম থাকে। প্রথমত, সিট বেল্ট। যাত্রী সামনের সিটে বসে সিট বেল্ট বেঁধে রাখলে যত জোরেই ধাক্কা লাগুক না কেন, তিনি সিটেই থাকবেন। ফলে তিনি জখম হলেও প্রাণহানির আশঙ্কা কম হয়। দ্বিতীয়ত, নিরাপত্তার জন্য গাড়ির ভিতরে থাকে এয়ার ব্যাগ। গাড়ি জোরে ধাক্কা মারলেই চালক ও তাঁর পাশে বসে থাকা যাত্রী গাড়ির সামনের অংশের যে দূরত্ব তার মাঝে এয়ার ব্যাগ খুলে যায়। এর ফলে ঝাঁকুনিটা আটকে দেয় এয়ার ব্যাগ। যাত্রীর আঘাতও কম লাগে। আর থাকে কোলাপসিবল স্টিয়ারিং। গাড়ি ধাক্কা মারলেই স্টিয়ারিং ভাঁজ হয়ে নিচে নেমে যায়। ফলে তা চালকের বুকে বা অন্য কোথাও ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ফেরারির মতো বিলাসবহুল গাড়িতে থাকে পাঁচ-পাঁচটি এয়ার ব্যাগ৷ অথচ দুর্ঘটনার সময় কেন তা কাজ করল না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
[কমনরুমে পড়ুয়াকে নগ্ন করে মার, সেন্ট পল’স কাণ্ডে দায়ের এফআইআর]
The post ৩.৫ কোটির গাড়িও কেন বাঁচাতে পারল না, ফেরারি দুর্ঘটনায় তদন্তে ফরেনসিক appeared first on Sangbad Pratidin.