শান্তনু কর, জলপাইগুড়ির: ভারতে খেলতে এসে মাঠেই মৃত্যু হল বাংলাদেশের প্রাক্তন ফুটবলারের। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়া মহলে। প্রশ্নের মুখে আয়োজকদের ভূমিকা।
চার দেশের প্রাক্তন ফুটবলারদের নিয়ে দু’দিনের ফুটবলের আসর বসেছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। খেলার সূচনা হয়েছে রবিবার। অংশ নিয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের ১২ টি ফুটবল দল। এদিন মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও মালদহের ভেটেরান্স ফুটবল দল। খেলা চলাকালীন হঠাৎই অসুস্থ হয়ে মাঠে পড়ে যান হানিফ রসিদ ডাব্লু (৫৭) নামে বাংলাদেশের এক খেলোয়াড়। মাঠ থেকে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রানবন্ত খেলোয়াড়ের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে। বন্ধ হয়ে যায় খেলা।
বাংলাদেশের অধিনায়ক আরমান জানান, হানিফ রসিদ ডাব্লু অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলোয়াড় ছিলেন। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের আরামবাগ এলাকায়। বাড়িতে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। ফুটবল ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। প্রাথমিকভাবে অনুমান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এদিকে বয়স্কদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করলেও মাঠে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, মাঠে চিকিৎসক ছিলেন না। ছিল না অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা। সাধারণ গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় বাংলাদেশের প্রাক্তন খেলোয়াড়ের।
ভেটেরান্স ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজক কমিটির সদস্য উত্তম বিশ্বাস বলেন, “উনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাঠে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দিই। পথে রেল গেট পড়ে যাওয়ায় নিয়ে যেতে খানিকটা দেরি হয়। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষনা করেন। আমরা মাঠে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যাবস্থা করেছিলাম। কিন্তু কোনও কারণে আসেননি।”
জলপাইগুড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব কুমার দত্ত বলেন, “আয়োজক কমিটি আমাদের অনুমতি নেয়নি। অনুমতি চাইলে অবশ্যই আমরা জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা-সহ যা গাইড লাইন আছে তা জানিয়ে দিতাম। ওই সংস্থার কোনওভাবে উচিৎ হয়নি বিনা অ্যাম্বুল্যান্সে খেলা পরিচালনা করা। এইভাবে একজন বিদেশি খেলোয়াড় আমাদের জেলায় মারা গেলেন, আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। বিষয়টির তদন্ত হবে।” জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ভেটারান্স প্লেয়ারদের নিয়ে বানারহাটের একটি ক্লাব ফুটবল খেলার আয়োজন করেছিল। খেলা শুরু হলে মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বাংলাদেশের এক প্লেয়ার। এরপর তাঁকে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষনা করেন চিকিৎসকরা।