কৃশানু মজুমদার: ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট। লিগ টেবিলে দল রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। অঙ্ক বলছে, পয়েন্ট টেবিলে চতুর্থ স্থানে থাকা ওড়িশার (Odisha FC) থেকে মাত্র ১ পয়েন্ট পিছিয়ে এটিকে মোহনবাগান। শেষ চার ম্যাচে একটিও জয় নেই ঠিকই, কিন্তু এটিকে মোহনবাগানের যা শক্তি, তাতে যে কোনও সময় ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রথম চারে চলে আসা অসম্ভব কিছু ছিল না। তাহলে হঠাৎ কেন সবুজ-মেরুন কোচ অ্যান্তনিয় লোপেজ হাবাসকে (Antonio López Habas) চাকরি ছাড়তে হল? আসলে হাবাস এটিকে কোচ হিসাবে যতটা সফল ছিলেন, এটিকে মোহনবাগান কোচ হিসাবে তিনি ততটা সফল নন। আইএসএলের ইতিহাসের অন্যতম সফল কোচ তাহলে কি প্রত্যাশার চাপ সামলাতে পারলেন না? রীতিমতো ধন্দে কলকাতা ময়দান। হাবাসের পদত্যাগ নিয়ে ময়দানেও আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ISL 2021: হাবাসের পর চাকরি যেতে পারে এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচ দিয়াজেরও? ভাবনা শুরু ইনভেস্টরদের]
হাবাস বড় কোচ নয়: সুব্রত ভট্টাচার্য
মোহনবাগানের ঘরের ছেলে। ফুটবলার এবং কোচ দু’রকমভাবেই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। সেই সুব্রত ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে স্পষ্টই বলছেন, তিনি মনে করেন না যে হাবাস বিরাট মাপের কোচ। সুব্রতর বক্তব্য, “এটা ওঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে, আমি বা সুভাষ ভৌমিক হলে ক্লাব আমাদের অনেক আগেই বরখাস্ত করে দিত। এতদিনও অপেক্ষা করতে হত না। একটা বা দুটো ম্যাচ হারলেই সরিয়ে দেওয়া হত। আমি মনে করি, হাবাস দারুণ কিছু কোচ নন। আমি ওঁকে খুব বড় কোচ বলে মনে করি না। দলের আক্রমণভাগে কোনও তীব্রতা নেই। থার্ড ম্যান মুভমেন্ট নেই। রক্ষণ বলে কিছুই নেই। ওঁর নিজের হাতে তৈরি দল। সুতরাং এর দায়িত্ব ওঁকে নিতেই হত।
নিজে দল বানিয়েও পারেননি: দেবাশিস দত্ত
মোহনবাগানের অর্থসচিব তথা এটিকে মোহনবাগানের ডিরেক্টর দেবাশিস দত্তর বক্তব্য, “উনি মনে করেছেন রেজাল্টটা দেওয়া যাচ্ছে না, তাই পদত্যাগ করেছেন। নিজের হাতে দল বানিয়েছেন, তারপরও দলটাকে সেট করতে পারেননি। সেজন্যই পদত্যাগ করেছেন। সময় চেয়ে সময় নষ্ট করেননি। এর জন্য ওঁকে ভাল বলতে হবে।”
[আরও পড়ুন: ATK Mohun Bagan: ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ এটিকে মোহনবাগান কোচ হাবাসের]
দায়িত্ববোধের অভাব রয়েছে: কল্যাণ মজুমদার
হাবাসের সিদ্ধান্তে বিস্মিত পড়শি ক্লাব ইস্টবেঙ্গলের (SC East Bengal) শীর্ষকর্তা কল্যাণ মজুমদার। তিনি বলছেন, “খুবই বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত। এই কোচের দায়িত্ববোধের অভাব রয়েছে। বিদেশি কোচ এলেই নাচানাচি ঠিক নয়। বাস্তবে এরা বিরাট কিছু করে না। এরা ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের আবেগ বোঝে না।” এ প্রসঙ্গে নিজেদের ক্লাবের দুর্গতি নিয়েও আক্ষেপ করতে শোনা গেল কল্যাণবাবুকে। তিনি বলছেন, “আমাদের ইনভেস্টরদেরও কোনও হেলদোল নেই। অনেক আগেই আমরা বলেছিলাম, আমাদের সঙ্গে যাই হোক, দলটা ভাল করে করুন। এদের ক্লাব নিয়ে তেমন ভাবনাচিন্তা নেই।”