অভিরূপ দাস: ফের সামনে এল মর্মান্তিক শিশুমৃত্যুর একটি ঘটনা। চার বছরের একটি বাচ্চা মেয়ের খিঁচুনি দেখা দিয়েছিল। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ঘুরেও মেলেনি পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (Pediatric Intensive Care Unit)। শেষপর্যন্ত চতুর্থ হাসপাতালে ভরতি করার পরপরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল শিশুটি। ঘটনাটি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের হলেও সম্প্রতি সুবিচারের আশায় চার হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন মৃত শিশুটির বাবা বুদ্ধদেব হালদার।
[আরও পড়ুন: বেসরকারি স্কুলের ফি ছাড়ের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শীঘ্রই, জানাল কলকাতা হাই কোর্ট]
অভিযোগে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ঘটনার দিন মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরতে হয়েছিল। প্রথমে যাদবপুরের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসাও পায় শিশুটি। এরপর সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পার্ক সার্কাসের ইন্সস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থে। সেখানে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা ‘পিকু’–র মেরামতি চলছিল। তাই এরপর আবার শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় হাজরা রোডের রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু সেখানেও ফাঁকা না থাকায় বাধ্য হয়ে বাচ্চাটিকে ভর্তি করা হয় পার্ক ক্লিনিকে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। ওই হাসপাতালেই শিশুটি মারা যায়।
এবার তাই সন্তানের মৃত্যুর বিচারের জন্য স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে শিশুটির পরিবার। গোটা ঘটনায় কমিশন চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘পার্কসার্কাসের (Park Circus) হাসপাতাল আমাদের জানিয়েছে, তারা অযথা সময় নষ্ট করায়নি। ৩ মিনিটের মধ্যে বাচ্চাটিকে ছেড়ে দিয়েছে। অন্যদিকে, অপর হাসপাতালটিও তেমনই জানিয়েছে। আমাদের বক্তব্য ওই দুই হাসপাতাল আরও একটু মানবিক হতে পারত। তারা নিজেরাই যদি রোগীর পরিবারকে ‘পিকু’ বেড খুঁজতে সাহায্য করতেন তাহলে বাচ্চাটির বাবার সময় বাঁচত।’’
[আরও পড়ুন: ‘দলীয় নির্দেশে যাচ্ছি’, অভিমান ভুলে বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি পাড়ি রাহুল সিনহার]
অন্যদিকে, বুধবার পঞ্চসায়রের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য কমিশন। সন্তানহারা ওই মায়ের অভিযোগ, তাঁর প্রিম্যাচিওর সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছিল ওই হাসপাতালে। ২০১৯ এর নভেম্বর নাগাদ। কিন্তু তাঁর ৩৩ সপ্তাহের কন্যা সন্তানকে কোনওরকম চিকিৎসা না করে স্রেফ বিল বাড়ানোর জন্য ভর্তি করে রাখা হয়েছিল। অবশেষে বাচ্চাকে ওখান থেকে ছাড়িয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান মা। সেখানেই বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে ওঠে। কোভিড আবহে ফের শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। বেশকিছুদিন শয্যাশায়ী থাকার পর মৃত্যু হয় শিশুটির। মায়ের অভিযোগ, পঞ্চশায়রের ওই বেসরকারি হাসপাতাল সঠিক চিকিৎসা পেলে বাচ্চাটি অকালে চলে যেত না। এই ঘটনায় আদৌ হাসপাতালের কোনও ত্রুটি ছিল কি না, কি কারণে বাচ্চাটি মারা গেল তাই খতিয়ে দেখবে নবনিযুক্ত এই কমিটি।
The post চার হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসার অভাবে শিশুর মৃত্যু, স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ বাবা appeared first on Sangbad Pratidin.