সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ জীবনযুদ্ধ। ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে অমৃতলোকে পাড়ি দিলেন সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষা সন্ন্যাসিনী প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা। রবিবার রাত ১১টা ২৪ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ১০২ বছর।
দীর্ঘদিন ধরে বয়সজনিত একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গত ৫ ডিসেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তীব্র জ্বর নিয়ে তাঁকে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শনিবার থেকে শারীরিক অবস্থা কার্যত সংকটজনক হয়ে ওঠে। ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে। মাঝে কয়েকদিন যমে-মানুষে লড়াই চলে। তবে শেষরক্ষা হল না। রবিবার রাত ১১টা ২৪ মিনিটে জীবনযুদ্ধ শেষ করেন সন্ন্যাসিনী প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা। বাংলায় টুইট করে শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সন্ন্যাসিনী প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণার প্রয়াণ অপূরণীয় ক্ষতি বলেই টুইটে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: ভোটের মুখে সংগঠন চাঙ্গা করাই লক্ষ্য, দু’দিনের মেঘালয় সফরে মমতা-অভিষেক]
১৯২০ সালে কলকাতায় জন্ম প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণার। পূর্বাশ্রমে কল্যাণী বন্দ্যোপাধ্যায় নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। পড়াশোনা করেছেন সারদেশ্বরী আশ্রম ও হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ে। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ১৯৫০ সালে টালিগঞ্জের মাতৃভবন হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজে যোগ দেন। ১৯৫৩ সালে ব্রহ্মচর্যে দীক্ষা নেন। শ্রীরামকৃষ্ণের প্রত্যক্ষ শিষ্য তথা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের চতুর্থ অধ্যক্ষ স্বামী বিজ্ঞানানন্দ তাঁকে দীক্ষা দেন। সন্ন্যাস গ্রহণ করেন ১৯৫৯ সালে। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সপ্তম অধ্যক্ষ স্বামী শংকরানন্দ সন্ন্যাস দীক্ষা দেন তাঁকে।
১৯৬০ সালে রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের পরিচালন সমিতির সদস্য হন। ইতিমধ্যে মাতৃভবনের দায়িত্বভার রামকৃষ্ণ সারদা মিশনকে হস্তান্তর করে রামকৃষ্ণ মিশন। ১৯৬১ সালের ১৮ নভেম্বর হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকেই প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা মাতৃভবনের সম্পাদক হন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত মাতৃভবনের উন্নতিতে একাধিক কাজ করেছেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের সহ অধ্যক্ষা পদে নিযুক্ত হন। ২০০৯ সালে অধ্যক্ষ হন তিনি। টানা ১৩ বছর তিনি অধ্যক্ষা পদের দায়িত্ব সামলেছেন।