সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমশই ধেয়ে আসছে মালগাড়ি। এদিকে তখনও রেললাইনে অঘোরে ঘুমিয়ে চলেছেন সহকর্মীরা। তীব্র কণ্ঠে চিৎকার করেছেন। ‘ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ো, নইলে বিপদ অনিবার্য’ বলেছেন তিনি। কিন্তু ঘুমের মাঝে সেকথা শুনতে পাননি কেউ। তাই তো মালগাড়ির চাকাতেই পিষে যান ১৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক। চোখের সামনে নিমেষে রক্তারক্তি কাণ্ড। ট্রেনের ধাক্কায় সহকর্মীদের এহেন মৃত্যু মানতে পারছেন না ঔরঙ্গাবাদের মৃত পরিযায়ী শ্রমিকদের সহকর্মী। ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না তিনি।
ঘড়িতে সময় তখন ভোর ৫.১৫। ঔরঙ্গাবাদের জালনা রেলওয়ে ট্র্যাক দিয়ে আসছিল একটি মালবাহী ট্রেন। কাড়মড গ্রামের কাছে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ট্র্যাকের উপরে ঘুমন্ত মানুষজনকে সজোরে ধাক্কা দেয় মালগাড়িটি। তাতেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। ছিন্নভিন্ন হয়ে দেহগুলি ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ওঁরা রেলট্র্যাক ধরে হাঁটছিলেন। ক্লান্ত হয়ে ট্র্যাকের উপরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।” সাউথ-সেন্ট্রাল রেলওয়ে সূত্রে খবর, এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার হাত থেকে কোনওক্রমে বেঁচে গিয়েছেন পাঁচজন। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে ঔরঙ্গাবাদের সরকারি হাসপাতালে। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: স্বামীকে শ্বাসরুদ্ধ করে খুনের পর করোনা আক্রান্ত সাজানোর চেষ্টা স্ত্রীর]
এই দুর্ঘটনাতে বেঁচে যান ইন্দারলাল ধুরভে, বীরেন্দ্র সিং গৌর, শিবমান সিং গৌর এবং সজ্জন গৌর। তাঁরা বলেন, “আমরা হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিলাম। কাড়মড গ্রামের কাছে রেললাইনে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। আচমকা মালগাড়ি চলে আসে কাছে। ঘুম ভেঙে যায়। রেললাইন থেকে সরে যাই। বাকিদের ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ওরা উঠল না। পরিবর্তে ওদের গায়ের উপর দিয়ে চলে গেল মালগাড়ি।” কিছুতেই এই ঘটনার কথা মানতে পারছে না সহকর্মীরা। কেঁদে আকুল সদ্য সহকর্মী হারা পরিযায়ী শ্রমিকেরা।
[আরও পড়ুন: সাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে লখনউয়ে পথ দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিক দম্পতি]
The post ‘চিৎকার করেও বাঁচাতে পারিনি কাউকে’, আক্ষেপ ঔরঙ্গাবাদ ট্রেন দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর appeared first on Sangbad Pratidin.