সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফুটবল জগতে ইন্দ্রপতন। প্রয়াত বিশ্ববরেণ্য ফুটবলার ফ্রানজ বেকেনবাওয়ার। বয়স হয়েছিল ৭৮। জার্মানিকে বিশ্বজয়ী করার পাশাপাশি বায়ার্ন মিউনিখের হয়েও তাঁর খেলা চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। চারবার বর্ষসেরা ফুটবলার হয়েছিলেন। ব্যালন ডি অর জিতেছেন দুবার। বেকেনবাওয়ারের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিশ্বের ক্রীড়াজগৎ।
তিনজন ফুটবলার একই সঙ্গে ফুটবলার ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার নজির গড়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন ফ্রানজ বেকেনবাওয়ার। প্রথমজন মারিও জাগালো গত শনিবারই প্রয়াত হয়েছেন। সোমবার গোটা ফুটবল বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়ে বেকেনবাওয়ারও চিরতরে চলে গেলেন। এ এক আশ্চর্য সমাপতন।
দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন কাইজার। পারকিনসন্স রোগে ভুগছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে জার্মানির প্রাক্তন কোচের ছেলে স্টিফেন মারা যান। ছেলের মৃত্যুশোক মানসিক ভাবে দারুণ আঘাত করেছিল বেকেনবাওয়ারকে। পুত্রের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর শরীর ক্রমশ ভাঙতে থাকে। স্মৃতি বিদ্রোহ করতে থাকে। ভুলে যেতে থাকেন তিনি। সেই সঙ্গে চলছিল তাঁর হৃদযন্ত্রের চিকিৎসাও। আজ সোমবার ভেঙে গেল তাঁর জীবনের রক্ষণ। মৃত্যু এসে কেড়ে নিয়ে গেল বেকেনবাওয়ারকে।
[আরও পড়ুন: ‘যোগ্যদের ৬০ বছরেও বিদায় দিই না আমরা’, নবীন-প্রবীণ বিতর্কে বার্তা মমতার]
জার্মানির ফুটবলে তিনি আইকন ছিলেন। সেই সময়ে জার্মানি দ্বিধাবিভক্ত ছিল। পশ্চিম জার্মানির হয়ে ১৯৭৪ সালে ক্যাপ্টেন বেকেনবাওয়ার বিশ্বজয় করেন। পরবর্তীকালে ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপে দিয়েগো মারাদোনার আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে বিশ্বজয় করেছিল জার্মানি। বেকেনবাওয়ার ছিলেন লোথার ম্যাথাউজদের হেডস্যর। দেশের জার্সিতে তিনি খেলেছেন ১০৪টি ম্যাচ। বায়ার্নের হয়ে সাতের দশকে তিনি ছড়িয়ে গিয়েছেন অসংখ্য মণিমুক্তো। সুইপার বা লিবেরো পজিশনকে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন বেকেনবাওয়ার। সর্বকালের সেরা ডিফেন্ডারদের একজন হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছেন এই জার্মান কিংবদন্তি।
[আরও পড়ুন: ওপার বাংলায় ফের ক্ষমতায় আওয়ামি লিগ, প্রিয় ‘হাসিনাদি’কে শুভেচ্ছা জানালেন মমতা]
সংবাদমাধ্যম বেকেনবাওয়ারের নাম দিয়েছিল ‘ফুসবল কাইজার’। অর্থাৎ ফুটবল সম্রাট। সবুজ মাঠে বেকেনবাওয়ারের হাঁটা-চলা, দলকে নেতৃত্ব দেওয়া দেখে তাঁকে ফুটবলভক্তরা ‘সম্রাট’ বলেই মনে করতেন। সেই জার্মান কিংবদন্তিকেই জীবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকটা দেখতে হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছিল দুর্নীতির অভিযোগ। উজ্জ্বল এবং দুর্দান্ত এক ফুটবল কেরিয়ারে এই কলঙ্কটুকু বাদ দিলে বেকেনবাওয়ারের সামগ্রিক জীবন কিন্তু অনুসরণযোগ্য। বিশেষ করে ফুটবলার বেকেনবাওয়ারকে জীবনের ধ্রুবতারা করে যে এখনও এগিয়ে চলেছেন অনেক উঠতি ফুটবলার।