সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় কর ব্যবস্থাকে নয়া দিগন্ত দেখিয়েছিলেন তিনি৷ তাঁর হাত ধরেই প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই মোদি সরকার চালু করেছিল পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি৷ দল এবং সরকারের নির্ভরযোগ্য বক্তা ছিলেন তিনি৷ বারবার গর্জে উঠেছে তাঁর দ্ব্যর্থ কণ্ঠ৷ গত ৯ আগস্ট শ্বাসকষ্ট নিয়ে এইমসে ভরতি হওয়ার পর, দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান ঘটল শনিবার৷ ৬৭ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী (অল্প সময়) অরুণ জেটলি৷
[ আরও পড়ুন: বড় মাপের রাজনীতিবিদকে হারাল দেশ, জেটলির প্রয়াণে শোকপ্রকাশ মোদি-মমতার ]
এক নজরে তাঁর জীবনপঞ্জি:
১৷ ১৯৫২-তে নয়াদিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন অরুণ জেটলি৷ তাঁর বাবার নাম মহারাজ কিষণ জেটলি ও মায়ের নাম রতন প্রভা৷
২৷ কলেজ জীবন থেকে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় অরুণ জেটলির৷ সংঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপির সদস্য হিসাবে ১৯৭৪-এ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি৷
[ আরও পড়ুন: ‘হিন্দুদের মতেই চলবে দেশ’, বিজেপি নেতার মন্তব্যে বিতর্ক ]
৩৷ ১৯৭৭-এ জরুরি অবস্থার সময় জেলে যান অরুণ জেটলি৷ এরপর ছাড়া পেতেই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগ দেন৷ সঙ্গে দিল্লি হাই কোর্টে আইনজীবী হিসাবে কাজও শুরু করেন তিনি৷
৪৷ ১৯৮০-তে পাকাপাকি ভাবে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির সদস্য হন অরুণ জেটলি৷ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন তিনি৷
৫৷ ১৯৮৯-তে তাঁকে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল নিযুক্ত করে তৎকালীন ভিপি সিং সরকার এবং ১৯৯০-তে বোফর্স কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য নির্মিত তিন সদস্যের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হন অরুণ জেটলি৷
৬৷ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর ১৩ মাসের সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন অরুণ জেটলি৷ এছাড়া সামলে ছিলেন আরও অন্যান্য মন্ত্রকের বাড়তি দায়িত্ব৷ সেই সময় দলের অন্দরেও ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় তাঁর৷ সুষমা স্বরাজ ও প্রমোদ মহাজনের সঙ্গে জাতীয় মুখপাত্র নির্বাচিত করা হয় তাঁকে৷
৭৷ ২০০০ সালে রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে প্রথমবার সংসদে পা রাখেন অরুণ জেটলি৷ বাজপেয়ী সরকারের আমলে পূর্ণ সময়ের জন্য দেশের আইনমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলান তিনি৷
[ আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই কাশ্মীর যাচ্ছেন রাহুল, সঙ্গে তৃণমূল-সহ ৯ বিরোধী দলের প্রতিনিধি ]
৮৷ ২০০৪-এ আবার কেন্দ্রের ক্ষমতায় কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকার ফিরে এলে বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব সামলান অরুণ জেটলি৷
৯৷ ২০১৪-র নির্বাচনে পাঞ্জাবের অমৃতসর আসন থেকে লড়াই করলেও পরাজিত হন তিনি৷ কিন্তু তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ বরং তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে অর্থ ও বাণিজ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক অরুণ জেটলির হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ পরে কিছুদিনের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেরও অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলান তিনি৷
১০৷ কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি৷ তাই ২০১৯-এর নির্বাচনে আর অংশগ্রহণ করেনি বাজপেয়ী-আডবানীর শিষ্য এই বাগ্মি বিজেপি নেতা৷ মন্ত্রিসভাতেও থাকতে চাননি৷ কিন্তু দলের হয়ে কাজ করে গিয়েছেন সর্বক্ষণ৷
তবে কালের নিয়মে শনিবার দুপুর ১২টা ০৭ মিনিটে থামলেন তিনিও৷ শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ‘এক দেশ, এক কর’ নীতির মতো মোড় ঘোরানো কর ব্যবস্থার সফল প্রয়োগকর্তা অরুণ জেটলি৷
The post ছাত্র রাজনীতি থেকে দেশের অর্থমন্ত্রী, একনজরে অরুণ জেটলির জীবনপঞ্জি appeared first on Sangbad Pratidin.