অভিরূপ দাস: “অনেক হয়েছে, আর রোগী দেখব না”, ফেসবুকে একথা লিখেই রোগী দেখার চেম্বার বন্ধ করে দিলেন চিকিৎসক দীপঙ্কর ঘোষ (Dipankar Ghosh)। কোভিড (COVID-19) আবহে কেন এই পদক্ষেপ চিকিৎসকের? তাঁর উত্তর নিজের পোস্টেই দিয়েছেন তিনি। দীপঙ্করবাবুর অভিযোগ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের (Corona Second Wave) সময় ব্যক্তিগত কাজে বাঁকুড়া গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ তাঁর চেম্বারে এসে তুলকালাম করে। এর প্রতিবাদেই অতিমারী আবহে তিনি চেম্বার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান চিকিৎসক। চেম্বারের ফ্যান, লাইট খুলে নেওয়ার পাশাপাশি জিনিসপত্র বাইরে ছড়িয়ে দেওয়ার ছবি দিয়েছেন ফেসবুকে।
[আরও পড়ুন: ‘রীতি’ ভেঙে PAC চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন মুকুল রায়ের! বিরোধিতায় সরব বিজেপি]
শোনা গিয়েছে, গড়িয়ার পদ্মশ্রী বাজারের ১০ নম্বর শপেই ডাক্তার দীপঙ্কর ঘোষের চেম্বার। সেখানে বাজারে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসিক টাকা দিতে হয় সমিতিকে। সে টাকা বাকি থাকাতেই ডাক্তারের চেম্বারে এসেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ। ডাক্তারের অভিযোগ, চেম্বারের রিসেপশনিস্টকে তাঁর নামে অশ্রাব্য কথা বলা হয়। সমস্যার সমাধানের জন্য তিনি ব্যবসায়ী সমিতিতেও গিয়েছিলেন। তাতে কোনও লাভ হয়নি। ডা. ঘোষের কথায়, “এটা আজ প্রথম নয়, নানান সময় আমায় চেম্বারে অপমানিত হতে হয়েছে। যে যা পেরেছে বলে গিয়েছে। সম্ভবতঃ স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির প্রচ্ছন্ন মদতেই এটা হচ্ছে। ষাট বছর বয়সে আর আমি সহ্য করতে পারছি না।”
যদিও ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের পালটা অভিযোগ, এটা সম্পূর্ণ ডাক্তারবাবুর মানসিক বিকার। তবে শোনা গিয়েছে, বাম আমল থেকেই এই ঝামেলার সূত্রপাত। ২২ আগে পদ্মশ্রী বাজারে দোকান কিনে চেম্বার শুরু করতে গিয়েই বিপাকে পড়েছিলেন চিকিৎসক দীপঙ্কর ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, ওই সময় ১০ লক্ষ টাকা সেলামি চাওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল ওই বাজারে দোকান কিনলে নাকি ওই টাকা দিতে হয়। সে টাকা না দেওয়ায় উড়ো চিঠি পেয়েছিলেন ডা. ঘোষ। যেখানে বলা হয়েছিল টাকা না দিলে কিডন্যাপ করা হবে তাঁর ছেলেকে। সে সময় কলকাতা পুলিশের সাহায্যে এ ঘটনার সমাধান হয়। কিন্তু নতুন করে আবার উৎপাত শুরু হওয়ায় চিরদিনের জন্য চেম্বার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন প্রবীণ চিকিৎসক। তাঁর এই সিদ্ধান্তে চিন্তিত চিকিৎসকরা।